ফেসবুক পেজ জনপ্রিয় করার ৮ কৌশল
বর্তমান সময়ে শুধু ব্যবসা নয়, ব্যক্তিগত ব্র্যান্ড গঠন, সামাজিক উদ্যোগ কিংবা যে কোনো প্রচারণার ক্ষেত্রেই ফেসবুক পেজ একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। অনেকে এখন ফেসবুক পেজকে ব্যবহার করছেন অনলাইন বিক্রির (এফ-কমার্স) প্ল্যাটফর্ম হিসেবে। কিন্তু শুধু পেজ খুললেই জনপ্রিয়তা আসে না, বরং দর্শকের আনাগোনা বাড়ানো, তাদের আস্থা অর্জন করা এবং নিয়মিত এনগেজমেন্ট ধরে রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
অনেকেই দেখেন, শুরুতে কিছুটা সাড়া মিললেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পেজের কার্যক্রম নিস্তেজ হয়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত পরিকল্পনাহীন কনটেন্ট, অগোছালো উপস্থাপনা এবং দর্শকদের চাহিদাকে গুরুত্ব না দেওয়ার কারণেই এমনটা ঘটে। অথচ সঠিক কৌশল ও নিয়মিত কিছু পরিবর্তন আনলে একটি ফেসবুক পেজকে খুব সহজেই জনপ্রিয় করা সম্ভব।
চলুন, জেনে নেওয়া যাক ফেসবুক পেজকে দ্রুত পরিচিত ও জনপ্রিয় করে তুলতে যে ৮টি কার্যকর কৌশল—
১. মানসম্পন্ন ও প্রাসঙ্গিক আধেয় প্রকাশ
পেজের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কনটেন্ট বা আধেয়। দর্শক কী পড়তে, দেখতে বা জানতে চান সেটিই আগে বুঝতে হবে। তাদের চাহিদা অনুযায়ী মানসম্পন্ন, তথ্যসমৃদ্ধ ও প্রাসঙ্গিক আধেয় প্রকাশ করলে এনগেজমেন্ট বাড়বে। আর অপ্রাসঙ্গিক ও নিম্নমানের কনটেন্ট দিলে দর্শক আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।
২. পেজের প্রোফাইলে সঠিকভাবে তথ্য উপস্থাপন
পেজের ‘About’ সেকশনই অনেক সময় দর্শকের প্রথম ধারণা গড়ে তোলে। তাই সেখানে এমন তথ্য রাখতে হবে যা স্পষ্টভাবে ব্র্যান্ড বা কাজের উদ্দেশ্য বোঝায়। সুসংগঠিত ও তথ্যসমৃদ্ধ অ্যাবাউট সেকশন দর্শকের আস্থা অর্জনে সহায়ক।
৩. ক্রস প্রমোশন
পেজ চালুর পর পরিচিত বা জনপ্রিয় অন্য পেজ ও প্রোফাইলের মাধ্যমে প্রচার করা যেতে পারে। পাশাপাশি ‘Follow’ এবং ‘Share’ বাটন সহজে ব্যবহারযোগ্য করলে দর্শকরা পেজে যুক্ত হতে উৎসাহিত হন। এ কৌশলে নতুন ফলোয়ার যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
৪. ফেসবুকের নীতিমালা অনুসরণ
পেজে ফেসবুকের নীতিমালা মেনে আধেয় পোস্ট করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিভ্রান্তিকর, ভুয়া বা নীতিমালা লঙ্ঘনকারী আধেয় পেজের জনপ্রিয়তা কমিয়ে দিতে পারে। তাই ফেসবুকের নীতিমালা অনুযায়ী মানসম্মত ও আকর্ষণীয় আধেয় প্রকাশ করতে হবে।
৫. ক্রস পেস্টিং
একই কনটেন্ট শুধু ফেসবুকেই সীমাবদ্ধ না রেখে ইনস্টাগ্রামের মতো অন্য প্ল্যাটফর্মেও পোস্ট করা উচিত। এতে কনটেন্ট বেশি দর্শকের কাছে পৌঁছাবে এবং বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ব্র্যান্ডের পরিচিতি বাড়বে।
৬. লাইভ সেশনের মাধ্যমে সরাসরি যোগাযোগ
লাইভ সেশন পেজ পরিচালনার অন্যতম কার্যকর মাধ্যম। এতে দর্শকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা যায়, প্রশ্নোত্তর করা যায় এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়। ফলস্বরূপ দর্শকরা পেজের প্রতি আরও আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
৭. বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণ করা
অতিরিক্ত বা অপ্রাসঙ্গিক বিজ্ঞাপন দর্শকদের বিরক্ত করতে পারে। তাই ফেসবুকের অ্যাড প্রেফারেন্স ব্যবহার করে দর্শকের আগ্রহ ও চাহিদা অনুযায়ী বিজ্ঞাপন বাছাই করা উচিত। এতে বিজ্ঞাপনও ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করা হয়।
৮. ফেসবুক উপাত্ত বিশ্লেষণ
ফেসবুক পেজের তথ্য বা উপাত্ত ডাউনলোড করা যায়। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে সহজেই বোঝা যায় কোনো ধরনের আধেয় দর্শকেরা বেশি পছন্দ করছে। আর তাই এসব তথ্য কাজে লাগিয়ে দর্শকদের চাহিদা অনুযায়ী আধেয় তৈরি করতে হবে।
সূত্র : টাইম ম্যাগাজিন