ফ্যাসিবাদের মতো রোগ সরাতে পেরেছি, তামাক দূর করতে পারবো না কেন?

10 hours ago 6

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ‘ফ্যাসিবাদের মতো কঠিন রোগ বাংলাদেশ থেকে সরাতে পেরেছি, তামাক দূর করতে পারবো না কেন?

তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তরুণদের উদ্দেশ্যেই তামাক কোম্পানিগুলো কূটকৌশল সাজায়। ২০-২৫ বছর বয়সী ছেলে-মেয়েদের যদি তামাকে আসক্ত করা যায়, তারা অন্তত ৫০ বছর ধরে সিগারেটের বাজার নিশ্চিত করতে পারবে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে নারী মৈত্রী আয়োজিত ‘নারী, শিশু ও তরুণদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাকনিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার গুরুত্ব’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীগুলো ক্যাবিনেটে তোলার জন্য। তবে রাজস্ব কমে যাবে-এ অজুহাতে প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত হচ্ছে। এরই মধ্যে একটি হাইলেভেল কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং দুই দফা বৈঠকও করেছে। কিন্তু তামাক কোম্পানির লবিং এতই শক্তিশালী যে অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে।’

ফরিদা আখতার বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো সবসময় জুজুর ভয় দেখায়। তামাক থেকে রাজস্ব আহরণ ছাড়া সরকার চলতে পারবে না। কিন্তু বাস্তবে তাদের প্রদেয় আয়করের মধ্যে বহু ফাঁকি রয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা তরুণ সমাজকে তামাকের বিরুদ্ধে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তরুণ প্রজন্ম সচেতন হলে তামাক কোম্পানিগুলো টার্গেট পূরণ করতে পারবে না।

সভায় জানানো হয়, বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০৫ (সংশোধিত ২০১৩) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলের (এফসিটিসি) সঙ্গে অধিকতর সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ বেশকিছু সংশোধনীর প্রস্তাব করে।

তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনাগুলো হলো— পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বা স্মোকিং জোন নিষিদ্ধ করা, সব ধরনের তামাকজাত পণ্যের প্রদর্শন ও বিজ্ঞাপন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে তরুণ-তরুণীদের রক্ষা করা, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি বন্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি বা সিএসআর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা এবং তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কের সচিত্র সতর্কবার্তা বৃদ্ধি করে শতকরা ৯০ ভাগ করা।

নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলির সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ মোমেনা মনি, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালক মো. আখতারউজ-জামান। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন তামাকবিরোধী মায়েদের ফোরাম, শিক্ষক ফোরাম, ইয়ুথ ফোরাম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।

এনএইচ/এমএএইচ/জেআইএম

Read Entire Article