বন্ড খাতের উন্নয়নে ইউএনডিপির সঙ্গে চুক্তি করবে বিএসইসি

পুঁজিবাজারে বন্ড খাতকে শক্তিশালী ও বহুমুখী করতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সঙ্গে একটি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করতে চায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ লক্ষ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কাছে অনুমতি চেয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। টেকসই অর্থায়ন ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেওয়া এবং বৈশ্বিক মানদণ্ডে বাংলাদেশকে আরও প্রতিযোগিতামুখী করে তোলার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে গ্রিন বন্ড, সামাজিক বন্ড, জলবায়ু বন্ড, টেকসই বন্ড ও এসডিজি বন্ডসহ বিভিন্ন থিমেটিক বন্ডের উন্নয়নে কারিগরি সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে দেশে একটি কার্যকর ও বিশ্বমানের ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে ইউএনডিপির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করতে চায় বিএসইসি। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের কাছে ইউএনডিপির সঙ্গে চুক্তির অনুমোদন চেয়ে চিঠি দিয়েছে বিএসইসি। তথ্যমতে, ইউএনডিপি ও বিএসইসির মধ্যে সহযোগিতামূলক চুক্তির লক্ষ্য হলো- টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এবং থিমেটিক বন্ডের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা। সমঝোতা স্মারক স্বাক

বন্ড খাতের উন্নয়নে ইউএনডিপির সঙ্গে চুক্তি করবে বিএসইসি

পুঁজিবাজারে বন্ড খাতকে শক্তিশালী ও বহুমুখী করতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সঙ্গে একটি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করতে চায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ লক্ষ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কাছে অনুমতি চেয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

টেকসই অর্থায়ন ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেওয়া এবং বৈশ্বিক মানদণ্ডে বাংলাদেশকে আরও প্রতিযোগিতামুখী করে তোলার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে গ্রিন বন্ড, সামাজিক বন্ড, জলবায়ু বন্ড, টেকসই বন্ড ও এসডিজি বন্ডসহ বিভিন্ন থিমেটিক বন্ডের উন্নয়নে কারিগরি সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে দেশে একটি কার্যকর ও বিশ্বমানের ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে ইউএনডিপির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করতে চায় বিএসইসি।

সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের কাছে ইউএনডিপির সঙ্গে চুক্তির অনুমোদন চেয়ে চিঠি দিয়েছে বিএসইসি।

তথ্যমতে, ইউএনডিপি ও বিএসইসির মধ্যে সহযোগিতামূলক চুক্তির লক্ষ্য হলো- টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এবং থিমেটিক বন্ডের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজারে পরিবেশবান্ধব অর্থায়নের সুযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব প্রজেক্ট গড়ে তোলা সহজতর হবে। সর্বোপরি দেশের বন্ড বাজার আরও বৈচিত্র্যপূর্ণ ও টেকসই রূপ লাভ করবে।

বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, ইউএনডিপি গ্রিন বন্ড, সামাজিক বন্ড, জলবায়ু বন্ড, টেকসই বন্ড, এসডিজি বন্ড ইত্যাদির উন্নয়নে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে কারিগরি সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে টেকসই বন্ড বা থিমেটিক বন্ড ইস্যুর একটি কার্যকরী ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার আগ্রহ প্রকাশ করেছে; যেন বাংলাদেশ নিম্ন আয়ের দেশ থেকে উত্তরণের পর মধ্যম আয়ের দেশের ফাঁদ এড়িয়ে দীর্ঘমেয়াদি টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন করতে পারে।

এক্ষেত্রে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বিশেষ আইনের মাধ্যমে সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে, দেশি ও বিদেশি কর্তৃপক্ষ বা সংস্থার সহিত সিকিউরিটিজ সম্পর্কিত সহযোগিতা ও তথ্য বিনিময় চুক্তি সম্পাদন করতে পারে। এ অবস্থায়, ইউএনডিপি দেশের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী এবং চুক্তির আওতাধীন কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ অনুধাবিত হওয়ায় চুক্তি স্বাক্ষরে অনুমোদন প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হলো।

সূত্রে জানা গেছে, এ সমঝোতা স্মারকের অধীনে ইউএনডিপি বাংলাদেশ এসডিজি ইমপ্যাক্ট স্ট্যান্ডার্ডের ওপর ভিত্তি করে প্রভাব পরিমাপ ও রিপোর্টিং কাঠামো ডিজাইন করতে সহায়তা করবে। এছাড়া, বন্ড বরাদ্দ এবং প্রভাব রিপোর্টিং উন্নয়ন, ইস্যু পূর্ববর্তী থেকে শুরু করে ইস্যু পরবর্তী পর্যন্ত এসডিজি থিমেটিক বন্ড পরিচালনা, ইস্যুকারী ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে থিম্যাটিক বন্ড জনপ্রিয় করার জন্য স্টেকহোল্ডারদের সম্পৃক্ততায় সহায়তা করবে। সর্বোপরি শক্তিশালী ইকোসিস্টেম তৈরি ও দীর্ঘমেয়াদি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তাসহ প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে কাজ করবে ইউএনডিপি।

এর ভিত্তিতে ইউএনডিপি বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাভিত্তিক রিপোর্টিং ও প্রভাব নিরূপণের পাশাপাশি খাতওয়ারি বন্ড বরাদ্দ এবং ফলাফল বিশ্লেষণে কারিগরি সহায়তা প্রদান করবে। এ সংক্রান্ত অংশীদারদের কার্যকর অংশগ্রহণের মাধ্যমে এসডিজি খাতওয়ারি বন্ড ছাড়া ও পরবর্তী পর্যায়ে উন্নয়ন এবং জনপ্রিয়করণে ইউএনডিপির বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা রয়েছে।

আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে বিদেশি সংস্থা বা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সিকিউরিটিজ-সংক্রান্ত সহযোগিতা ও তথ্য বিনিময়ের চুক্তি করতে পারে। ইউএনডিপির মতো গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগীর সঙ্গে চুক্তির বিষয়টিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করেছে কমিশন। তাই চুক্তি স্বাক্ষরে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন প্রদানের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, এই সহযোগিতা দেশের পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে পরিবেশবান্ধব ও সামাজিক দায়বদ্ধ বিনিয়োগ উৎসাহিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আগ্রহও বৃদ্ধি পাবে। ইউএনডিপির প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞতা এবং বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের বন্ড মার্কেটে গুণগত পরিবর্তন আনবে। চুক্তিটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে টেকসই বন্ড মার্কেটের প্রসার এবং বিনিয়োগের নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে- যা দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন যাত্রায় নতুন মাত্রা যোগ করবে।

এর আগে ২০২৩ সালের ৩ জুলাই ‘টেকনিক্যাল কো-অপারেশন ফর স্ট্রেনদেনিং দ্য ইকোসিস্টেম অব এসডিজি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক বিএসইসি ও ইউএনডিপির মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম বলেন, পুঁজিবাজারে বন্ড খাতের উন্নয়নে ইউএনডিপির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করতে চায় বিএসইসি। এরই ধরাবাহিকতায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কাছে চুক্তির অনুমতি চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে ইউএনডিপির সঙ্গে চুক্তি করবে বিএসইসি।

এমএএস/ইএ/জেআইএম

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow