সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সদরপুর গ্রামের বাসিন্দা বশির মিয়া। স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তানকে নিয়ে ছিল সাজানো সংসার। কিন্তু নদীভাঙনের কবলে পড়ে তার পুরো বসতভিটাটি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন নদীপাড়ে বসে প্রায় প্রতিদিনই কাঁদতে দেখা যায় তাকে।
নদীতে ঘরবাড়ি হারানো বশির মিয়া বলেন, ‘আমার মাথা গোঁজার ঠাঁই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন একমাত্র মেয়েকে নিয়ে যেখানে রাত হয় সেখানেই থাকি। এখন পর্যন্ত আমাদের কেউ খোঁজ নেয়নি।’
শুধু বশির মিয়া নয়, সদরপুর গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তিন দফা বন্যার পর নদীভাঙনে অসহায়ত্ব ভেসে উঠছে ভাটি জেলার মানুষের চোখে-মুখে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার সুরমা, কুশিয়ারা, নলজুর, বটেরখাল, মহাশিং, নাইন্দাও পুরাতন সুরমা নদীর বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে ১২ উপজেলার ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাটবাজার থেকে শুরু করে মসজিদ, কবরস্থান নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে শতকোটি টাকার প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়া হলেও কার্যকর ফল মিলছে না। এ অবস্থায় বসতভিটা হারানোর উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।
নদীপাড়ের বাসিন্দা কিবরিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রতিনিয়ত ভাঙনের কবলে পড়ে একের পর এক বসতভিটা নদীতে বিলীন হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসন কেউ এদিকে নজর দিচ্ছে না।’
পারভেজ আহমেদ নামের আরেকজন জাগো নিউজকে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড নীরব ভূমিকা পালন করছে। ভাঙন রোধে কোটি কোটি টাকার প্রকল্প নামমাত্র।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জাগো নিউজকে বলেন, বন্যার পর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। শতকোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়ে ভাঙন রোধে কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
লিপসন আহমেদ/এসআর/জেআইএম