কয়েকদিনের অতিবৃষ্টির কারণে বন্যায় রূপ নিয়েছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে। এই বন্যার কারণে ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ খুলে দিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রবল স্রোতে পানি প্রবেশ করছে বাংলাদেশে। যে কারণে কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনীসহ কয়েকটি জেলা প্লাবিত হয়েছে।
বানের তোড়ে ভেসে যাচ্ছে সবকিছু। সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সরকারের পক্ষ থেকে উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে সেনাবাহিনী। দেশজুড়ে বইছে উৎকণ্ঠা। সেই উদ্বেগ প্রকাশিত হয়েছে নেটদুনিয়ায়। নেটিজেনরা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছেন অনেকেই।
উদ্ধার অভিযানের আহ্বান জানিয়ে মহিউদ্দিন মহিন লিখেছেন, ‘ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ‘ডম্বুর’ গেট খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের জেলাগুলো পানিতে ডুবে যাচ্ছে। জরুরি উদ্ধার অভিযান প্রয়োজন।’
আশঙ্কা প্রকাশ করে বন্যার্ত ফারজানা করিম তানজু লিখেছেন, ‘আমাদের চারপাশ ডুবে গেছে। এই বৃষ্টি চলমান থাকলে সব ডুবে যাবে।’
সাইদ মাহমুদ লিখেছেন, ‘ভারতের ত্রিপুরাতে ভারী বর্ষণে বন্যা দেখা দিয়েছে। ফলে ত্রিপুরাতে অবস্থিত ডম্বুর হাইড্রোইলেক্ট্রিক পাওয়ার প্রজেক্ট বা ডম্বুর গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। যা সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে খুলে দিয়েছিল। ফলে খোয়াই নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা সহজে কমার সম্ভাবনা নেই। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে খোয়াই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। এ ছাড়া কুমিল্লার গোমতী নদীতেও পানি বাড়ছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সবাইকে হেফাজত করুন। আমিন।’
আরও পড়ুন
পরিবারের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় হতাশ একরাম হোসাইন। তিনি তথ্য চেয়ে লিখেছেন, ‘বাড়ি ও এলাকার কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারছি না! কারো কাছে সবশেষ তথ্য থাকলে জানান প্লিজ।’
স্পিড বোট ও নৌকা বাড়ানোর আকুতি জানিয়ে সাফায়েত হোসাইন লিখেছেন, ‘ফেনীর বন্যা এখন আর ফুলগাজী-পরশুরামে সীমাবদ্ধ নেই। পানি ছড়িয়েছে মোটবি, ফাজিলপুর, মুহুরিগঞ্জ, ফরহাদ নগর। সর্বত্র উদ্ধার অভিযান প্রয়োজন। ১০-১৫টি স্পিড বোট আর ২-৪টি নৌকায় উদ্ধার কাজ সম্ভব নয়।’
সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে ইকবাল বাহার জাহিদ লিখেছেন, ‘ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় ভয়াবহ বন্যা শুরু হয়েছে। অনেক মানুষ পানিতে আটকা পরে আছে ফেনী ও নোয়াখালী জেলায় বন্যার পানিতে। অনেকের ঘরে খাবার নাই, বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। জরুরি তাদের উদ্ধার করতে হবে যে কোনোভাবেই। অনেকেই বলেছেন উদ্ধারের জন্য নৌকা বা স্পিড বোট বা হেলিকপ্টার না পেলে অনেকেই পানির স্রোত এবং পানির উচ্চতার কারণে মারা যেতে পারেন। সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই।’
সার্বিক পরিস্থিতি জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘গত ৪০ বছরের রেকর্ড ভেঙে ফেনীর মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার অন্তত ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারতের ত্রিপুরায় অবস্থিত ডম্বুর হাইড্রোইলেক্ট্রিক পাওয়ার প্রজেক্ট বা ডম্বুর গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে ভারত এই গেট খুলে দিয়েছিল। যার ফলে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা অঞ্চল বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক লাখ মানুষ। সরকার, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এগিয়ে আসার অনুরোধ রইলো। আল্লাহ সবাইকে রক্ষা করুন।’
এসইউ/এমএস