বর্ষায় নানা রোগ ও সংক্রমণ বেড়ে যায়। তাই এ সময় নিজের ও পরিবারের সবার জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খাদ্যতালিকায় রাখুন বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ দ্বারা পূর্ণ খাবার। ইমিউনিটি বাড়াতে সবচেয়ে বেশি উপকারী হলো ভিটামিন ই। সামগ্রিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য এই ভিটামিন।
ভিটামিন ই গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দ্বারা পরিপূর্ণ। যা ইমিউন সিস্টেম ও রক্তনালির স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এটি ফ্রি র্যাডিকেল দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতি থেকে কোষগুলোকে রক্ষা করে ও ইমিউন ফাংশন উন্নত করে। এমনকি এটি জিনের প্রকাশ ও কোষের সংকেতের সঙ্গে জড়িত।
এই ভিটামিন স্বাস্থ্যকর ত্বক, চোখ ও স্নায়ুর কার্যকারিতা বজায় রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে সঙ্গে পেশীর দুর্বলতা বাড়ে। এমনকি দৃষ্টি সমস্যাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে।
এসব সমস্যা এড়াতে ও ভিটামিন ই এর ঘাটতির লক্ষণ প্রতিরোধে দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
ভিটামিন ই ঘাটতির লক্ষণ কী কী?
দুর্বল ইমিউন সিস্টেম
ভিটামিন ই এর অভাবের প্রথম লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি হলো দুর্বল প্রতিরোধ ব্যবস্থা। আপনার ইমিউন কোষের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য ভিটামিন ই অপরিহার্য।
দৃষ্টি সমস্যা
ভিটামিন ই চোখের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অভাবের ফলে দৃষ্টি সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন- ঝাপসা দৃষ্টি বা রেটিনার কুপ্রভাব। গুরুতর ক্ষেত্রে এটি রেটিনাইটিস পিগমেন্টোসা, একটি অবক্ষয়জনিত চোখের রোগের মতো পরিস্থিতিতে অবদান রাখতে পারে।
ত্বকের সমস্যা
শুষ্ক, ফ্ল্যাকি ত্বক ও অকাল বার্ধক্য ভিটামিন ই’র অভাবের অন্যান্য লক্ষণ। এই ভিটামিন ত্বকের স্বাস্থ্য ও স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত ভিটামিন ই ছাড়া আপনার ত্বকের ক্ষতি হতে পারে ও বার্ধক্যের লক্ষণ দেখাতে পারে।
আরও পড়ুন
পেশী দুর্বলতা
পেশী দুর্বলতা ও সমন্বয় সমস্যাও ভিটামিন ই এর অভাব নির্দেশ করতে পারে। যেহেতু ভিটামিন ই স্নায়ু কোষের সুরক্ষায় জড়িত। তাই এর অভাব পেশী শক্তি ও ভারসাম্য নিয়ে সমস্যা হতে পারে। বর্ষায় পায়ে ছত্রাকের সংক্রমণ মারাত্মক হতে পারে, নিরাপদে থাকতে এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিন।
স্নায়বিক সমস্যা
ভিটামিন ই’র ঘাটতি স্নায়বিক উপসর্গ যেমন- অসাড়তা ও হাঁটতে অসুবিধা হতে পারে। এটি স্নায়ু স্বাস্থ্য ও ফাংশন বজায় রাখার ক্ষেত্রে এর ভূমিকার কারণে।
গুরুতর ঘাটতিগুলো অ্যাটাক্সিয়ার মতো আরও গুরুতর অবস্থার কারণ হতে পারে। এটি একটি ব্যাধি যা সমন্বয় ও ভারসাম্যকে প্রভাবিত করে। আপনার যদি এসব লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে সতর্ক হন।
ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার কী কী?
বাদাম ও বীজ
বাদাম ও বীজ হলো ভিটামিন ই এর উৎকৃষ্ট উৎস। বাদাম, সূর্যমুখী বীজ ও হ্যাজেলনাট এই ভিটামিনে বিশেষভাবে বেশি। আপনার সালাদে একমুঠো বাদাম বা সূর্যমুখী বীজ ছিটিয়ে আপনার ভিটামিন ই গ্রহণকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
সবুজ শাকসবজি
পালং শাকের মতো শাক-সবজিও ভিটামিন ই এর ভালো উৎস। আপনার খাবারে এই সবজি যুক্ত করা এই প্রয়োজনীয় পুষ্টির উচ্চতর গ্রহণে অবদান রাখতে পারে।
উদ্ভিজ্জ তেল
কিছু উদ্ভিজ্জ তেল, যেমন- সূর্যমুখী তেল, কুসুম তেল ভিটামিন ই সমৃদ্ধ। এই তেলগুলো রান্না বা সালাদে ব্যবহার করা আপনার ভিটামিন ই মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
মাছ
কিছু মাছ, যেমন- সালমন ও ট্রাউটে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই। মাছ শুধু ভিটামিন ই এর চাহিদায় মেটায় না বরং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের মতো অন্যান্য উপকারী পুষ্টিও সরবরাহ করে।
এছাড়া কিছু ফল যেমন- অ্যাভোকাডো ও কিউই, ভিটামিন ই সমৃদ্ধ। এই ফলগুলোকে খাদ্যতালিকায় রেখে সহজেই ভিটামিন ই গ্রহণ করতে পারেন।
সূত্র: বোল্ডস্কাই
জেএমএস/এমএস