বিশ্বব্যাপী নারীর ক্ষমতায়ন বাড়লেও সব দেশেই নারীদের জন্য নিরাপদ ও অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়নি। বৈশ্বিক অপরাধ, নিরাপত্তা ঝুঁকি ও সামাজিক চ্যালেঞ্জের কারণে নারীদের অনেক ক্ষেত্রেই সতর্ক থাকতে হয়। তবে কিছু দেশ রয়েছে, যেখানে নারীরা ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যেতে পারেন।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বীমা প্রতিষ্ঠান উলিয়াম রাসেল এক গবেষণায় এমন ১০টি দেশের নাম প্রকাশ করেছে যেখানে নারীরা সবচেয়ে বেশি সমর্থন, নিরাপত্তা ও সুযোগ পান। এই তালিকা তৈরি হয়েছে নারীর ক্ষমতায়ন, কর্মক্ষেত্রের সমতা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তাসহ নানা সূচকের ওপর ভিত্তি করে।
১. আইসল্যান্ড
নারী-পুরুষ সমতায় বিশ্বে শীর্ষস্থানীয় দেশ আইসল্যান্ড। দেশটিতে রাজনীতি, ব্যবসা ও শিক্ষাক্ষেত্রে নারীরা দৃঢ় অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে। আইসল্যান্ডে আইনি সুরক্ষা এবং অত্যন্ত নিরাপদ সামাজিক পরিবেশ নারীদের জন্য আদর্শ।
২. ফিনল্যান্ড
বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশের তালিকায় ফিনল্যান্ড শীর্ষে থাকে। এই দেশে নারী রাজনৈতিক নেতৃত্বে শক্ত অবস্থানে রয়েছে। বর্তমানে মন্ত্রিসভায় ৫০ শতাংশ নারী। শিক্ষা, কর্মক্ষেত্রে সমতা এবং কর্মজীবী নারীর জন্য সহায়ক নীতিমালা রয়েছে সেখানে।
৩. আয়ারল্যান্ড
এক সময় সামাজিকভাবে রক্ষণশীল হলেও এখন একটি উন্নত, নারীবান্ধব দেশ আয়ারল্যান্ড। এখানে মজুরি বৈষম্য কম, মাতৃত্বকালীন ছুটির পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও শিক্ষাব্যবস্থা উন্নত।
৪. বেলজিয়াম
যারা কাজ ও জীবনের মধ্যে ভারসাম্য চান, তাদের জন্য আদর্শ দেশ হলো বেলজিয়াম। ফ্লেক্সিবল কাজের সময়, আইনি সুরক্ষা, এবং নারীদের উচ্চশিক্ষায় অংশগ্রহণ এখানে ব্যাপক। পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দপ্তর হওয়ায় আন্তর্জাতিক সুযোগও বেশি।
৫. ডেনমার্ক
ডেনমার্কে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা, শিশু যত্নে ভর্তুকি এবং পিতামাতার ছুটি রয়েছে। এসব সুবিধা নারীদের পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে।
৬. কানাডা
আইনি সুরক্ষা, বহুসাংস্কৃতিক পরিবেশ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নীতি কানাডাকে নারীদের জন্য অনুকূল দেশ করে তুলেছে। উদ্যোক্তা নারীদের জন্য সরকারিভাবে বিভিন্ন সহায়তা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচিও রয়েছে।
৭. ফ্রান্স
ফ্রান্সে নারীদের জন্য শিক্ষা, শিল্প, কূটনীতি ও ব্যবসা খাতে রয়েছে সমান সুযোগ। ফ্রান্স সরকার সন্তান পালন, শিশু যত্ন ও বেতন বৈষম্য দূরীকরণে কার্যকর নীতি বাস্তবায়ন করছে।
৮. নরওয়ে
বৈষম্যবিরোধী আইন, কর্পোরেট বোর্ডে নারীদের জন্য কোটা এবং নীতিগত সমতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে নারীদের নেতৃত্বে আসতে উৎসাহ দেওয়া হয়। উন্নত শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মিশেলে জীবনযাত্রার মান অত্যন্ত উচ্চ।
৯. সুইডেন
কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গসমতা, পিতামাতার ছুটি, ফ্লেক্সিবল কাজের সময় ইত্যাদির কারণে সুইডেন অনেকদিন ধরেই নারীদের জন্য আদর্শ দেশ হিসেবে বিবেচিত।
১০. লিথুয়ানিয়া
নিম্ন জীবনযাত্রার ব্যয়, উচ্চমানের শিক্ষা এবং উন্নত কর্মসংস্থানের সুযোগ এই দেশকে নারীদের জন্য দ্রুত জনপ্রিয় করে তুলেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হওয়ায় এখানে রয়েছে আইনি সুরক্ষা, অবাধ চলাচলের অধিকার ও নিরাপত্তা।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
এমএসএম