বাঁকখালী মোহনায় অবৈধ পাথরের ব্যবসা বন্ধ করে দিলো প্রশাসন

1 month ago 10

দীর্ঘদিন ধরে বাঁকখালী নদীর তীর দখল করে বালু ও পাথরের ব্যবসা করে আসছিল তাসনিয়া এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সরকারি কোনো দপ্তরের অনুমতি না নিয়ে নদীর তীর ভরাট করে চলছিল প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা।

বিষয়টি নজরে আসার পর সোমবার (১১ আগস্ট) ব্যবসা সংক্রান্ত বৈধ কাগজপত্র নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরের ভেতর প্রশাসনের দপ্তরে যোগাযোগ করতে বলা হয়। কিন্তু মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বিকেল গড়ালেও ব্যবসায়ীদের সাড়া না পাওয়ায় বেলা ৫টার দিকে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন সুলতানার নেতৃত্বে অভিযান চালায় প্রশাসন। সদরের তহশিলদার সৈয়দ নূরসহ পুরো টিমের অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে পালিয়ে যায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী ও পাথর ব্যবসায়ীরা।

অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন সুলতানা বলেন, পাথর ব্যবসা ও অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সংবাদ পেয়ে অভিযান চালানো হয়েছে। বালু উত্তোলনকারী ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে সেখানে মজুদ ১০ হাজার ঘনফুট বালু জব্দ করে নিলামে তোলা হয়। প্রতি ঘনফুট দুই টাকা করে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। বালু রাখার জায়গাটি লাল পতাকা দিয়ে ঘেরাও করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, তাসনিয়া এন্টারপ্রাইজকে সব কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা আসেনি। আজকালের মধ্যে না আসলে সরকারি সার্ভেয়ার দিয়ে পরিমাপ করা হবে। সরকারি জায়গা থাকলে ছেড়ে দিতে হবে।

jagonews24

কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী বলেন, তাসনিয়া এন্টারপ্রাইজকে এর আগেও জরিমানা করা হয়েছিল এবং তাদের সব কাগজপত্র নিয়ে দেখা করতে বলেছিলাম। কিন্তু, তারা যে কাগজপত্র জমা দিয়েছে, সেখানে কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানের অনুমতি ছিল না।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, নদীর জায়গা দখল করে পাথরের ব্যবসা পরিচালনার খবর পেয়ে প্রশাসনের লোকজন পাঠিয়ে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরকারি অনুমতি নিলে তাদের ব্যবসা করতে কেউ বাঁধা দেবে না কিন্তু সরকারি জায়গা হলে ছেড়ে দিতে হবে অন্যথায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।

তিনি আরও বলেন, এখানে যারা ব্যবসা করছেন তাদের সব কাগজপত্র নিয়ে দেখা করতে বলা হয়েছে, কিন্তু নির্ধারিত দিন পর্যন্ত কেউ দেখা করতে আসেনি। এতে বোঝা যায় তাদের কর্মকাণ্ডে গলদ আছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নদীর কোল ঘেঁষে অন্তত পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি তৈরি করা হয়েছে। ধ্বংস করা হয়েছে কয়েকশ একর প্যারাবন। পেশকার পাড়া, মাঝিরঘাট এবং পশ্চিম-উত্তর দিক, ছয় নম্বর জেটিঘাট, ফিশারীঘাট, নুনিয়াছটা পর্যন্ত আরও কয়েক কিলোমিটার নদীর তীর দখল করে তৈরি হয়েছে আরও কয়েক শতাধিক অবৈধ স্থাপনা।

এর আগে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীলদের ছত্রছায়ায় এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড চালানো হলেও এখন মাঠে থাকা একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী পরে এসব কাজ অব্যাহত রয়েছে বলে উল্লেখ করেন ওয়াকিবহাল মহল।

সায়ীদ আলমগীর/এমআরএম

Read Entire Article