বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্যের উন্নতিতে যুক্তরাজ্যের ‘বেটার হেলথ ইন বাংলাদেশ প্রোগ্রাম’ কার্যক্রমের অর্জন উদযাপন অনুষ্ঠিত।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ব্রিটিশ হাইকমিশন, ঢাকা ও ইউএনএফপিএ বাংলাদেশ এবং তাদের সহযোগী বাস্তবায়ন সংস্থাদের নিয়ে ৬৫ মিলিয়ন পাউন্ড বাজেটের ‘বেটার হেলথ ইন বাংলাদেশ (বিএইচবি)’ প্রোগ্রামের সমাপ্তিতে এই উদযাপন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা, উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিনিধি, এনজিও/আইএনজিও, শিক্ষাবিদ এবং কার্যক্রমটির সুবিধাভোগীরা উপস্থিত ছিলেন।
এক বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়, ২০১৮ সাল থেকে যুক্তরাজ্যের এই ফ্ল্যাগশিপ স্বাস্থ্য উদ্যোগটি বাংলাদেশের জনগণের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রেখেছে। বেটার হেলথ ইন বাংলাদেশ (বিএইচবি) প্রোগ্রামটি একই সঙ্গে বিশ্বব্যাংক পরিচালিত মাল্টি-ডোনার ট্রাস্ট ফান্ডের (এমডিটিএফ) মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের চতুর্থ স্বাস্থ্য জনসংখ্যা পুষ্টি সেক্টর প্রোগ্রামকেও (এইচপিএনএসপি) সহায়তা করেছে।
বৃহত্তম দ্বিপাক্ষিক দাতা হিসেবে যুক্তরাজ্য মা, নবজাতক ও শিশু স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনার পরিষেবা উন্নত করার লক্ষ্যে ১৬টি বিতরণ-সংযুক্ত সূচক বাস্তবায়নে ৩৭ মিলিয়ন ডলার সহায়তা প্রদান করেছে। এমডিটিএফ ছাড়াও বিএইচবির বাস্তবায়ন সহযোগী সংস্থা হিসেবে ইউএনএফপিএ, ডব্লিউএইচও, ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস ফর হেলথ (এমএসএইচ) এবং আইসিডিডিআর,বি কারিগরি সহায়তা, স্বাস্থ্য খাতে জড়িত ব্যক্তিদের জ্ঞান সমৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যব্যবস্থা শক্তিশালীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
তাদের সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার মধ্যে রয়েছে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার (এসআরএইচআর) পরিষেবা প্রদান, স্বাস্থ্যব্যবস্থা আধুনিকীকরণ, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য খাতে উদীয়মান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য কৌশল তৈরি করা। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বাংলাদেশের জাতীয় কোভিড-১৯-এর প্রতিক্রিয়ায় প্রোগ্রামটি ১২ মিলিয়নেরও বেশি পাউন্ড সহায়তা করেছে। বিগত সাত বছরে বিএইচবি কর্মসূচি ২ হাজার ৮৩৫টির মতো মাতৃমৃত্যু রোধ করেছে, ১৮ লাখ ৩৭ হাজার ৬৮২টি নিরাপদ সন্তান জন্মদানে সহায়তা দিয়েছে এবং ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৫১৯ জন নারীকে আধুনিক পরিবার পরিকল্পনা পরিষেবা দিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এই কার্যক্রম ৪ লাখ ২০ হাজার শিশুর জন্য পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিত করেছে, জরায়ুর ক্যান্সারের জন্য ১০ লাখেরও বেশি নারীর স্ক্রিনিং করেছে এবং ১০ হাজার ৩৪৫টি ফার্মেসি ও ওষুধের দোকানকে স্বীকৃতি দিয়েছে। যুক্তরাজ্য থেকে প্রদত্ত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের মাধ্যমে ৫ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের টিকাদান বাস্তবায়নের পাশাপাশি কার্যক্রমটি ১৬ হাজার ৬৫১ জন পরিষেবা প্রদানকারী এবং স্থানীয় কমিউনিটির নেতাদের জলবায়ু-সম্পর্কিত স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং উন্নত ডিজিটাল স্বাস্থ্যব্যবস্থায় সাড়া দেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
কার্যক্রমটির উল্লেখ্যযোগ্য অর্জনের মধ্যে রয়েছে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুহার কমানো, স্বাস্থ্যের উন্নতি, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালের মতো জটিল সমস্যা মোকাবিলা ও স্বাস্থ্যের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের মতো অনুঘটকের ওপর হ্রাস।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি এবং এর বাস্তবায়নকারী অংশীদাররা বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার জন্য অব্যাহত সমর্থন এবং ভবিষ্যতের স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তাদের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।