আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটি বিকলাঙ্গ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এমন বন্য আইন ও শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছিলেন তার শাসনকালে একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে দেখলে ভয় পেতো। বন্ধু বন্ধুকে দেখলে ভয় পেতো। যুবলীগ-ছাত্রলীগ ছিল মূর্তিমান আতঙ্ক। তারা যেদিকে হেঁটে যেতো মানুষ সেদিকে হাঁটতে ভয় পেতো। মানুষ ফিসফিস করে কথা বলতো, নীরবে কথা বলতো। তারা ভাবতো তাদের কথা যুবলীগ-ছাত্রলীগ জেনে গেলে বাড়িঘরে আক্রমণ করবে অথবা পুলিশ-র্যাব তুলে নিয়ে যাবে। চিরদিনের জন্য নিরুদ্দেশ করে দেবে।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর নারিন্দায় সাদেক হোসেন খোকা মাঠে আন্দোলনে চক্ষু ক্ষতিগ্রস্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য বিনামূল্যে চক্ষুসেবা এবং চিকিৎসকদের সমন্বয়ে বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ ক্যাম্পের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর আয়োজন করে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার আমলে সারাদেশে শুধু রক্ত ঝরেছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা পঙ্গুত্ববরণ করেছে। অনেকে হাসপাতালে যেতেও ভয় পেতো। কারণ, হাসপাতালেও আক্রমণ চালিয়েছে শেখ হাসিনার ক্যাডাররা।
বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, অন্যায় এবং পাপ যে বেশিদিন টিকতে পারে না এটির যে পতন হয়, ইতিহাস থেকে শেখ হাসিনা এ শিক্ষা গ্রহণ করেননি। এজন্যই তাকে বাংলাদেশ থেকে চলে যেতে হয়েছে, পালাতে হয়েছে। তার মধ্যে যদি সত্যিকারের দেশপ্রেম থাকতো, তিনি যদি ভাবতেন- বাড়াবাড়ি করলে টাকা পাচার করলে মানুষের টাকা আত্মসাৎ করলে একদিন না একদিন জনগণের মুখোমুখি হতে হবে, অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হবে, দেশে টিকতে পারবো না, তাহলে আজ তার এমন পরিণতি হতো না।
তিনি আরও বলেন, সোনালী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংকসহ অন্য ব্যাংকগুলোতে যারা লুটপাটের সঙ্গে জড়িত তারা শেখ হাসিনার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ লোক। এস আলম নামে একজন ব্যক্তিকে বাংলাদেশের ৯টি ব্যাংক দিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তিনি নিজেই সেই ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এই ছিল বাংলাদেশের পরিস্থিতি। এভাবে গত ১৫-১৬ বছর আওয়ামী লীগ রাজত্ব করেছে।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা ভেবেছিলেন তাকে কেউ বাংলাদেশ থেকে বের করতে পারবে না। তিনি আজীবনের জন্য এখানে ক্ষমতায় থাকবেন। ছেলে-মেয়ে ও বোনকে নিয়ে বাংলাদেশে রাজপরিবার গড়ে তুলেছিলেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, জুলাই-আগস্টে যে বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে শেখ হাসিনা কল্পনাই করতে পারেননি তাকে এতটা প্রতিরোধের মুখোমুখি হতে হবে। তিনি চিন্তাও করতে পারেননি।
এসময় বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব তানভির আহমেদ রবিন, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন, এম এ মুহিত ও মোকছেদুল মোমিন মিথুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেএইচ/এমকেআর/জেআইএম