‘বাংলাদেশি বোনকে’ ফেরত পাঠান: হাসিনার বিষয়ে মোদীকে ওয়াইসি

1 hour ago 3

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ভারতে আশ্রয় নেওয়া বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীনের (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। মূলত বিহার রাজ্যে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের উপস্থিতি নিয়ে বিজেপির তোলা অভিযোগের জবাবে এই আহ্বান জানান ওয়াইসি।

বিহারে বিধানসভা নির্বাচন হবে চলতি বছরেই। নির্বাচন কমিশন আগামী মাসেই যে কোনো সময় ভোটের তারিখ ঘোষণা করতে পারে। এর মধ্যেই বড় অভিযোগ হলো- বিহারে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের উপস্থিতি। ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রেক্ষাপটে বিজেপি এই অভিযোগ তোলে।

গত সপ্তাহে পূর্ণিয়ার এক নির্বাচনী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কংগ্রেস ও রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) বিরুদ্ধে ‘অনুপ্রবেশকারীদের পৃষ্ঠপোষকতা’ করার অভিযোগ তোলেন। তারই জবাবে ওয়াইসি বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বলেন, বিহারে বা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে কোনো বাংলাদেশি নেই। এই অঞ্চলে এআইএমআইএম গত নির্বাচনে বড় সাফল্য পেয়েছিল।

ওয়াইসি বলেন, মোদী জি বলেন বিহারে বাংলাদেশি আছে। মোদী জি, বিহারে বা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে কোনো বাংলাদেশি নেই। কিন্তু আপনারা তো দিল্লিতে বসিয়ে রেখেছেন ‘বাংলাদেশ থেকে আসা একজন বোনকে’। তাকে বাংলাদেশে পাঠান। সীমান্তে নিয়ে আসুন, আমরা তাকে বাংলাদেশ পর্যন্ত পৌঁছে দেব।

ওয়েইসির এই মন্তব্য সরাসরি ইঙ্গিত করে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীত্ব ত্যাগ করে তিনি দিল্লিতে চলে আসেন। তখন থেকেই তিনি ভারতে অবস্থান করছেন।

অনুপ্রবেশকারী বিতর্ক

অবৈধ অভিবাসন, বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের রাজনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ও জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণ। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অবৈধ বাংলাদেশি শনাক্তে আঞ্চলিক পর্যায়ে বিশেষ অভিযানও চালানো হয়েছে।

বিহারে বিষয়টি আরও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়াকে ঘিরে। বিরোধীরা অভিযোগ করেছে, এই উদ্যোগ আসলে দরিদ্র ও সংখ্যালঘু ভোটারদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার অজুহাত। তবে নির্বাচন কমিশন বলছে, এই উদ্যোগ নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনবে। কমিশন দাবি করেছে, বিহারের ভোটার তালিকায় নেপালি, বাংলাদেশি ও মিয়ানমারের নাগরিকের নাম পাওয়া গেছে।

প্রধানমন্ত্রী মোদী স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ থেকে শুরু করে বিহারের নির্বাচনী প্রচারণাতেও ‘অনুপ্রবেশকারী’ ইস্যু বারবার তুলেছেন। ১৫ সেপ্টেম্বর পূর্ণিয়ার সমাবেশে তিনি বলেন, অনুপ্রবেশ দেশের জন্য ‘জনসংখ্যাগত সঙ্কট’ তৈরি করছে। মোদী ঘোষণা দেন, বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট অবৈধ অভিবাসীদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দেবে।

তিনি কংগ্রেস ও আরজেডির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন যে তারা ভোটব্যাংকের রাজনীতির জন্য দেশের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলছে। মোদী বলেন, তারা এতটাই নির্লজ্জ যে বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সমর্থনে স্লোগান দিচ্ছে, যাত্রা বের করছে। এনডিএ প্রতিটি অনুপ্রবেশকারীকে দেশ থেকে তাড়াতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। যারা তাদের রক্ষা করছে, তাদের আমি চ্যালেঞ্জ জানাই।

এদিকে, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যকে ‘ভোটের আগে মনোযোগ ঘোরানোর কৌশল’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এক মুহূর্তের জন্য ধরে নিলাম বিহারে অনুপ্রবেশকারী আছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো- আপনারা গত ১১ বছর ধরে কেন্দ্রে ক্ষমতায়, আর বিহারে ২০ বছর ধরে ক্ষমতা ধরে রেখেছেন। তাহলে এতদিন কী করছিলেন?

এ বছর ভারতের শেষ বড় নির্বাচনী লড়াই হতে চলেছে বিহারে। নির্বাচন কমিশন আগামী মাসেই যে কোনো সময় ভোটের তারিখ ঘোষণা করতে পারে।

সূত্র: এনডিটিভি

এসএএইচ

Read Entire Article