বাংলাদেশের ট্রাম্প প্রশাসনের সুযোগের সদ্ব্যবহার করা উচিত : জন ড্যানিলোভিচ

1 week ago 11

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর দেশটি বৈদেশিক নীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের জানান দিয়েছেন ট্রাম্প। এর ফলে অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে ধরপাকড়ের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। শপথ গ্রহণের পর প্রশাসনের বৈদেশিক নীতির অগ্রাধিকারের কিছু রূপরেখা ফোকাসে এসেছে। 

এমন পরিস্থিতিতে স্বাধীন বৈদেশিক নীতি বিশ্লেষক এবং অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র বৈদেশিক পরিসেবা কর্মকর্তা জন ড্যানিলোভিচ বাংলাদেশকে ট্রাম্প প্রশাসনকে ভয় পাওয়ার বদলে সুযোগের সদ্ব্যবহার করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন। নিজের লেখা এক কলামে এ বিষয়ে তিনি আলোকপাত করেন। 

ট্রাম্প মার্কিন সীমান্তে সংকট ও অভিবাসন সমস্যা মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিয়েছেন। বাণিজ্য সমস্যা ও জ্বালানি নিরাপত্তায় জোর দিয়েছেন তিনি। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন তার কাছে কম গুরুত্ব পেয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেছেন। পররাষ্ট্র দপ্তরের দায়িত্ব পেয়ে মার্কো রুবিও পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কোয়াডের (যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান এবং ভারত) পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের আমন্ত্রণ ও তাদের সঙ্গে রুবিওর যৌথ ও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের গুরুত্বের বিষয়টি প্রকাশ পায়। 


ওয়াশিংটনে এসব ঘটনার সময়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সভায় দাভোসে ছিলেন। তিনি বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ও প্যানেল এবং বিষয়ভিত্তিক ইভেন্টে যোগ দেন। 

দাভোসে ড. ইউনূসের উপস্থিতি তার বিশ্বব্যাপী খ্যাতি এবং বাংলাদেশের সংস্কার এজেন্ডাকে সমর্থন করার জন্য একত্রিত হওয়া বিস্তৃত আন্তর্জাতিক জোট উভয়কেই তুলে ধরে। নিঃসন্দেহে দাভোসে বেশিরভাগ সরকারি ও বেসরকারি আলোচনা ওয়াশিংটনের ঘটনাবলিকে কেন্দ্র করে হয়েছিল। এসব বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কীভাবে সর্বোত্তমভাবে যোগাযোগ করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন।

কোয়াড পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠকে বাংলাদেশের জন্য একটি ‘ভালো ভবিষ্যৎ’ দেখার ইচ্ছে প্রকাশ করে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। যেখানে বলা হয়েছে, আমরা যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ভারত এবং জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আজ ওয়াশিংটন ডিসিতে মিলিত হয়ে একটি মুক্ত ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিককে শক্তিশালী করার জন্য আমাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছি। যেখানে আইনের শাসন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা সমুন্নত এবং সুরক্ষিত থাকবে।

My latest thoughts:

“Bangladesh has nothing to fear from the Trump Administration and should instead continue to focus on taking advantage of this historic opportunity to build a better future in partnership with the U.S. and others.” https://t.co/Dx7LTAddqz

— Jon Danilowicz (@JonFDanilowicz) January 28, 2025

এই প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক সংস্কারের সাফল্য আগের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কেননা এটি কোয়াডের এজেন্ডার ভিত্তিমূল্যের জন্য একটি মডেল হিসেবে দাঁড়াতে পারে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বর্তমানে যা করছে তা কোয়াডের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের দ্বারা ঘোষিত লক্ষ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। আগামী সপ্তাহ এবং মাসগুলোতে দক্ষিণ এশিয়ায় ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি সম্পর্কে আরও বিশদ  জানা যাবে। এ সময়ে বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নিয়োগকারীদের নাম ঘোষণা করা হবে এবং সিনেটে নিশ্চিতকরণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া হবে। সময়ের সাথে সাথে ট্রাম্প এবং রুবিও দল বাংলাদেশের দিকে তাদের মনোযোগ দেবে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং অন্য অংশীদারদের সাথে যোগাযোগ করবে।

এ দৃষ্টিকোণ থেকে আমার মতে, ট্রাম্প প্রশাসন থেকে বাংলাদেশের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এর পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যদের সাথে অংশীদারিত্বে একটি উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার এ ঐতিহাসিক সুযোগের সদ্ব্যবহারের উপর মনোযোগ দেওয়া উচিত।

Read Entire Article