বাইডেন গেলেন রেকর্ডসংখ্যক ক্ষমা করে, ট্রাম্প এসে দিলেন মুক্তি
মার্কিন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা ছাড়ার আগে নজিরবিহীনভাবে পরিবারের সদস্যসহ রেকর্ডসংখ্যক ব্যক্তিকে ক্ষমা করলেন বাইডেন। আর ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পরপরই ১,৫০০ সমর্থককে মুক্তি দিয়ে চমক দিলেন।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকালে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার পরিবারের সদস্য, ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং রাজনৈতিক প্রতিশোধের ঝুঁকিতে থাকা আরও অনেককে প্রেসিডেন্টের বিশেষ ক্ষমতাবলে ক্ষমা করেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ইতিহাসে বিদায়ী প্রেসিডেন্টের এমন পদক্ষেপ নজিরবিহীন।
ক্ষমা পাওয়া ব্যক্তিদের তালিকায় রয়েছেন বাইডেনের দুই ভাই জেমস ও ফ্রাঙ্ক বাইডেন, বোন ভ্যালেরি বাইডেন এবং তাদের স্বামী-স্ত্রীরা। এ ছাড়া রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য লিজ চেনি এবং ক্যাপিটল দাঙ্গার তদন্তে যুক্ত থাকা আইনপ্রণেতারাও এই তালিকায় আছেন। বাইডেনের এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে তাদের রক্ষা করার উদ্দেশ্যেই নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেছেন, ‘আমার পরিবার ও ঘনিষ্ঠরা রাজনৈতিক আক্রমণের শিকার হতে পারেন—এমন হুমকি থেকেই আমি এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি।’
ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গাকারীদের মুক্তি
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার পরপরই ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গায় জড়িত ১,৫০০ সমর্থককে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশে সই করেছেন। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল ভবনে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা ট্রাম্পের এই আদেশের মাধ্যমে কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন।
আইনজীবী ড্যারেক স্ট্রম জানিয়েছেন, মুক্তির নির্দেশ দ্রুত কার্যকর করা হবে। এ সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের সমর্থকদের মধ্যে উচ্ছ্বাস সৃষ্টি করলেও এটি নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে।
রাজনৈতিক অঙ্গনে সমালোচনা
ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের সমালোচনায় বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘যারা গণতন্ত্রের ওপর আঘাত হেনেছে, তাদের মুক্তি দেওয়া মার্কিন মূল্যবোধের পরিপন্থী।’
অন্যদিকে, নতুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জো বাইডেনের রেকর্ড সংখ্যক ক্ষমার সিদ্ধান্তকে ‘অপমানজনক ও অপরাধীদের রক্ষার প্রচেষ্টা’ বলে অভিহিত করেছেন।
নতুন ধারা, নতুন বিতর্ক
বাইডেন ও ট্রাম্পের এই বিপরীতধর্মী পদক্ষেপ মার্কিন রাজনীতির বিভাজনকে আরও প্রকট করেছে। একদিকে বিদায়ী প্রেসিডেন্টের নজিরবিহীন ক্ষমা, অন্যদিকে নতুন প্রেসিডেন্টের দাঙ্গাকারীদের মুক্তি—এই দুই ঘটনাই যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
সূত্র : বিবিসি ও সিএনএন