বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের পর যে স্বাধীনতা পেয়েছিলাম, পরে আধিপত্যবাদের কবলে পড়ে একটা চক্র বাকশাল কায়েম করেছিল। বাকশাল কায়েম করে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে বিদ্রোহ করেছে। মুক্তিযুদ্ধের বিপরীত আদর্শ প্রতিষ্ঠা করেছিল। বাকশালের সহযোগী হয়ে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে এই জাতিকে বিভক্ত করেছে এবং জাতিকে একটি হুমকির মুখে ফেলেছিল। পরবর্তীতে সেই গ্রুপের পরবর্তী প্রজন্ম তের সালে (২০১৩ সালে) শাহবাগ কায়েম করেছে।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাতে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। ‘৩৬ জুলাই: আমরা থামবো না’ শীর্ষক কর্মসূচিতে বাম সংগঠনের বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রশিবির।
এস এম ফরহাদ বলেন, কর্মসূচিতে যারা বিরোধিতা করে বিক্ষোভ করেছে, তারা প্রত্যেকে বিভিন্ন সংগঠনের পদধারী নেতা। স্পষ্টত তারা রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্বশীল এবং শাহবাগ যারা কায়েম করেছিল, তাদের পরবর্তী উত্তরসূরী। তারা কোন সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করে এবং তাদের পোস্টসহ সবাই জানে।
- আরও পড়ুন
নিজামী-সাঈদীদের ছবি টানিয়ে শিবির স্বাধীনতাকে অপদস্থ করেছে
বাম-শিবির মুখোমুখি স্লোগানে উত্তপ্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মুক্তিযোদ্ধার ব্যাপারে শিবিরের অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ কেন্দ্রিক যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে প্রত্যেকটার বিচার হওয়াটা আমরাও চাই, ইসলামী ছাত্রশিবির চায়। মুক্তিযুদ্ধের এবং মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী যে লিগ্যাসি সে লিগ্যাসি বহন করেই আমরা বলেছিলাম, মুক্তিযুদ্ধের এক্সটেন্ডেড রূপ হলো চব্বিশের অভ্যুত্থান।
যারা শাহবাগের পক্ষে ছিলো তাদের উদ্দেশ্যে শিবিরের এ নেতা বলেন, বিচারিক হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় দেওয়া হলে মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। তখন গুলি করে প্রায় ২০০ মানুষ হত্যা করা হয়। সেদিনে গুলি করে হত্যা করাটাকে যারা বৈধতা দিয়েছিল, সেই বৈধতা দেওয়ার কারণে আওয়ামী লীগ অভ্যস্ত হয়েছে গুলি করে হত্যা করায়। পরবর্তী জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে তারা হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। এই যে বৈধতা দিয়ে যারা প্রকাশ্যে দুই শতাধিক মানুষকে হত্যা করার বৈধতা উৎপাদন করেছে, তারা এই দায় কখনো এড়াতে পারে না।
তিনি বলেন, আমরা আবারও স্পষ্ট করছি- সব ধরনের বিচারিক হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমাদের রাজনৈতিক অবস্থান ছিল, এখনো আছে, সামনেও থাকবে। শাহবাগের মধ্য দিয়ে তাদের যে বিভাজনের রাজনীতি এবং ষড়যন্ত্রের রাজনীতি দাঁড় করাতে চেয়েছিল, চব্বিশে তারা ব্যর্থ হয়েছে। ঠিক একইভাবে বাহাত্তর সাল থেকে তাদের নীরব প্রচেষ্টা এবং সক্রিয় প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে বাকশাল কায়েম করার চেষ্টা করেছিল। তারা ব্যর্থ হয়েছে, পারেনি।
এফএআর/কেএসআর