বাকৃবির ১৫১ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীকে শাস্তি প্রদান

1 month ago 7
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ১৫১ শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকতা-কর্মচারীকে শাস্তি প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিগত জুলাই গণভ্যুত্থানে শান্তি মিছিলে যোগদান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরীহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর জুলুম ও নির্যাতনের অভিযোগে শাস্তি প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সোমবার (০৪ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. হেলাল উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সূত্রে জানা যায়, গত বছর ৪ আগস্ট ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা’ শান্তি মিছিলে যোগদান এবং গণঅভ্যুত্থান চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরীহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর জুলুম-নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে বাকৃবির ৫৭ শিক্ষক, ২৪ কর্মকর্তা, ২১ কর্মচারী এবং ৩১ শিক্ষার্থীকে শাস্তি প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৩২৮তম সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এছাড়াও ২০২২ সালের ২৩ ডিসেম্বর আশরাফুল হক হলে বিকেল ৫টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চার শিক্ষার্থীকে ছাত্রদল ও শিবির ট্যাগ দিয়ে অমানবিক শারীরিক নির্যাতনকারী ১৮ জনকে শাস্তি প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষকদের মধ্যে ৬ জনকে বরখাস্ত, ১২ জনকে অপসারণ, ৮ জনকে নিম্নপদে অবনমন এবং ৩১ জনকে তিরস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  কর্মকর্তাদের মধ্যে ৮ জনকে বহিষ্কার, ৮ জনকে অপসারণ, ৭ জনকে তিরস্কার এবং ১ জনকে ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কর্মচারীদের মধ্যে ২ জনকে বরখাস্ত এবং ১৯ জনকে তিরস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭ জনকে আজীবন বহিষ্কার এবং ২৪ জনের সনদপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় ৩ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার এবং ১৫ জনের সনদপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিগত ৪ আগস্ট ২০২৪ তারিখে বাকৃবি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ বহিরাগতদের নিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ‘শান্তি মিছিল’ নামে একটি সন্ত্রাসী মিছিল আয়োজন করে।  এই মিছিলে ‘শেখ হাসিনাতেই আস্থা’ এবং ‘ঘরে ঘরে খবর দে, এক দফার কবর দে’- এ ধরনের উসকানিমূলক ও সহিংস স্লোগান দিয়ে তারা খুনি ও ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার জুলুম, নির্যাতন ও গণহত্যার পক্ষে প্রচারণা চালায়।  এ সময় নিরীহ ছাত্র ও শিক্ষকদের ওপর হামলা চালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে নজিরবিহীন ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়, যা শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশকে মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত করে এবং চলমান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম- ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-শিক্ষকদের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। তাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চিহ্নিত করে শাস্তি প্রদান করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক একে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘তদন্ত কমিটি বিভিন্ন আলোচনা, সাক্ষাৎকার, তথ্যের ভিত্তিতে শাস্তি সুপারিশ করেছে এবং সেগুলোকে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত  বাস্তবায়নের জন্য সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘গত ১৮ মে সিন্ডিকেট সভায় এ শাস্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তী সভায় পরিসমর্থন হয়েছে। ৩ শিক্ষকের মধ্যে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন যে তদন্ত কমিটি বৈধ নয়। সেগুলোর রিট রোববার (০৩ আগস্ট) খারিজ হয়েছে। আজকে থেকে তাদের শাস্তি সংক্রান্ত কাগজ বিলি হচ্ছে।’
Read Entire Article