টানা দরপতনের পর গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা বেড়ে গেছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক ও লেনদেনের গতি।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৭২টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৮টির। আর ৫৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্থাৎ দাম বাড়া এবং কমার তালিকায় প্রায় সমান সংখ্যক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে বড় মূলধনের প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় বাজার মূলধন বেড়েছে।
এতে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৫৯ হাজার ২০৫ কোটি টাকা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬ লাখ ৫২ হাজার ৪৯৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৬ হাজার ৭০৯ কোটি টাকা বা ১ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন কমে ১১ হাজার ২০৮ কোটি টাকা বা ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ৬৫২ কোটি টাকা বা দশমিক ১০ শতাংশ।
আরও পড়ুন
- বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী টেরা পার্টনার্স
- ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে শেয়ারবাজার
- শেয়ারবাজারে স্থানীয় বিও বেড়েছে ১২৪৭৮টি, ৩৩৭ বিদেশি বিও বন্ধ
বাজার মূলধন বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে মূল্যসূচক। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে বেড়েছে ১১৬ দশমিক ১৪ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৯১ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে বেড়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছে ৫৬ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বা ৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহের সূচকটি কমে ৩০ দশমিক শূন্য ২ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও গত সপ্তাহে বেড়েছে। গত সপ্তাহজুড়ে এই সূচকটি বেড়েছে ২৭ দশমিক ৩১ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৪০ শতাংশ। আগের সপ্তাহের সূচকটি কমে ২৩ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা ২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
সবকটি মূল্য সূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের গতিও বেড়েছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৭৩ কোটি ৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৩২২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৫০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা বা ১৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ৯০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে একমি ল্যাবরেটরিজ।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, রবি, ফাইন ফুড, গ্রামীণফোন, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড এবং সায়হাম কটন।
এমএএস/ইএ