পূর্বাচলে বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে চলছে ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। প্রতিবারের মতো এবারও চাহিদার শীর্ষে রয়েছে শোভাবর্ধক ফার্নিচার পণ্য।
মেলায় মিলছে বাহারি রং এবং ডিজাইনের খাট, পালঙ্ক, টেবিল, চেয়ার, আলমারিসহ হরেক রকমের আসবাবপত্র।
মেলায় ঘরে ব্যবহৃত আসবাবপত্রের পাশাপাশি অফিস সাজানোর পণ্যও মিলছে প্যাভিলিয়নগুলোতে। এবারের বাণিজ্যমেলা উপলক্ষে ব্র্যান্ডগুলো যেমন নতুন ডিজাইন নিয়ে এসেছে, তেমনি বিশেষ অফারও দিচ্ছে। দৃষ্টিনন্দন এসব ফার্নিচার দেখতে ও কিনতে বরারবই আগ্রহী থাকেন ক্রেতারা। হল 'এ' এর ডান দিকে রয়েছে ফার্নিচার এবং বামদিকে রয়েছে ইলেকট্রনিকসের প্যাভিলিয়ন।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, নতুন পণ্য ও নানা ধরনের অফার নিয়ে এবারের বাণিজ্যমেলায় হাজির হয়েছে রেডিমেড ফার্নিচার প্রতিষ্ঠানগুলো।
এদিকে ফার্নিচার পণ্যকে ২০২৫ সালের বর্ষপণ্য ঘোষণা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বাণিজ্যমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রপ্তানি প্রসার ও প্রণোদনামূলক কর্মকাণ্ডকে বেগবান করতে প্রতিবছর একটি পণ্য খাতকে বর্ষপণ্য বা প্রডাক্ট অব দ্য ইয়ার হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনগণকে ঘোষিত পণ্যের উৎপাদন ও বিপণনে উৎসাহিতকরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
এবারের মেলা উপলক্ষে পারটেক্স, নাদিয়া, নাভানা, আকতার, রিগ্যালসহ সব প্যাভিলিয়নের ফার্নিচারে দেওয়া হচ্ছে বিশেষ ছাড়। মেলা উপলক্ষে সব ফার্নিচারে রয়েছে অন্তত ৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়।
মেলায় কিস্তিতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আসবাব কেনার সুযোগও আছে। বিনা সুদে ৩ থেকে ১৮ মাসের কিস্তিতে বিভিন্ন ধরনের আসবাবপণ্য কেনার সুযোগ দিচ্ছে প্রায় সব প্রতিষ্ঠান। তবে এ জন্য ক্রেতাদের ক্রেডিট কার্ড থাকতে হবে।
ওক কাঠের তৈরি ফার্নিচার মেলায় নিয়ে এসেছে রিগ্যাল। হল 'এ' এর প্রবেশ মুখেই রয়েছে তাদের প্যাভিলিয়ন। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের এ প্রতিষ্ঠানের আগে থেকেই লেমিনেটেড প্লাইউড ও রড আয়রনের ফার্নিচার রয়েছে। মেলায় তাদের সব ফার্নিচারে ১০ শতাংশ মূল্যছাড় দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী আসবাবপত্র তৈরি করে দেওয়া হয়।
প্যাভিলিয়নের ম্যানেজার রিদয় জাগো নিউজকে বলেন, আমরা এ বছর বাণিজ্যমেলাকে সামনে রেখে নতুন কিছু বেডরুম সেট, কিচেন সেট, ড্রয়িংরুম সেট নিয়ে এসেছি। আমাদের সব পণ্যে ফ্ল্যাট ১০ শতাংশ ছাড় চলছে। এছাড়া আমাদের হোম ডেলিভারির ব্যবস্থা আছে।
- আরও পড়ুন
- ছুটির দিনে বাণিজ্যমেলায় তিল ধারণের ঠাঁই নেই, খুশি ব্যবসায়ীরা
- বাণিজ্যমেলায় টেস্টি ট্রিটের স্টলে ভোজনরসিকদের উপচেপড়া ভিড়
নাদিয়া ফার্নিচারের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মো. হেদায়েত উল্লাহ বলেন, এবারের মেলায় শুরুর দিকে আমাদের তেমন একটা সেল না হলেও দিন যত যাচ্ছে মানুষের আনাগোনাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে আমাদের দম ফেলার সময় থাকে না।
তিনি বলেন, এবারের মেলায় আমরা নতুন কিছু বেডরুম সেট, সোফাসেট, ডাইনিং সেট নিয়ে এসেছি যা ক্রেতারা খুব পছন্দ করছে। নতুন যেসব পণ্য বাণিজ্যমেলায় এসেছে সেগুলো বিভিন্ন ব্রাঞ্চে পরবর্তীতে যাবে। আমাদের সব পণ্যে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ছাড়। এ সুযোগ শুধু মেলা চলাকালীন প্রযোজ্য।
আব্দুল আলিম নামে এক ক্রেতা জাগো নিউজকে বলেন, আমার ঘরের জন্য কিছু ফার্নিচার, টি টেবিল, বেডসাইড টেবিল, বেতের চেয়ার কিনেছি। এবার নতুন কিছু বেডরুম সেট, কিচেন সেট এসেছে, কিন্তু দাম একটু বেশি। দাম আরেকটু কম হলে বেটার হতো কারণ বর্তমানে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নয়। মানুষের হাতে টাকা নেই।
হাতিম ফার্নিচারের একজন সেলসম্যান বলেন, আমরা তিন ধরনের ক্রেতা দেখি। কেউ ভিক্টোরিয়ান পছন্দ করেন, কেউ মডার্ন পছন্দ করেন, কেউ আবার একটু সিম্পল ডিজাইনের আসবাব পছন্দ করেন। আমরা সব ধরনের ডিজাইনের পণ্য আমাদের শোরুমে রাখার চেষ্টা করি।
নুরুন্নাহার বেগম নামে একজন দর্শনার্থীর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এখন তো মেলার মাঝামাঝি। শেষের দিকে আরও বেশি অফার দিবে। তখন কিনবো। আজ শুধু দেখতে এসেছি। প্রতিবছরই বাণিজ্যমেলায় কয়েকবার আসা হয়। কিন্তু এ বছর মেলার মান কিছুটা কমেছে বলে মনে হয়েছে। অনেক বিদেশি স্টল এ বছর আসেনি।
স্বামী-সন্তান নিয়ে বাণিজ্যমেলায় আসবাব স্টলে এসেছেন সাদিয়া আফরিন নামে একজন দর্শনার্থী। তিনি বলেন, ঘুরেফিরে যেটা দেখলাম কিছু নতুন প্রোডাক্ট এসেছে বেশ কিছু শোরুমে। ফেব্রিক, উডের কোয়ালিটিও ভালোই। একেক শো রুমে একেক ডিজাইন। তবে দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে ডিসকাউন্ট দেওয়ার পরও।
এসআরএস/এসআইটি/এমএস