বাদ পড়ছেন ১০০ জামায়াত প্রার্থী, জানা গেল মূল কৌশল

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তাদের পূর্বঘোষিত প্রার্থী তালিকা থেকে ৮০ থেকে ১০০ জনকে বাদ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ৫ দফা দাবিতে চলমান যুগপৎ আন্দোলনে শরিক অপর সাতটি দলের জন্য এসব আসন ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দলীয় সূত্র জানায়, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা এবং মাঠপর্যায়ের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের ভিত্তিতে প্রার্থী বাদ–বদল করা হবে। জামায়াতের প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব যোবায়ের বলেন, সংখ্যার ভিত্তিতে নয়, বরং যেখানে যে দল বা ব্যক্তি বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, সেখানে তাকে প্রার্থী করা হবে। ইসলামী দলগুলো মিলে একক প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে, যাতে “সব ইসলামি ভোট এক বাক্সে” আনা যায়। বিভাগীয় সমাবেশ শেষ হলে আট দলের লিয়াজোঁ কমিটি প্রার্থীতালিকা চূড়ান্ত করবে। ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত আন্দোলনসহ শরিক অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনায় আসন বণ্টন নিয়ে কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জানিয়েছে, তারা ও জামায়াত বড় দল হওয়ায় উভয় দলের আসন সংখ্যা প্রায় সমান হওয়া উচিত, তবে জামায়াত আগের সংসদে থাকায় সামান্য অগ্রাধিক

বাদ পড়ছেন ১০০ জামায়াত প্রার্থী, জানা গেল মূল কৌশল

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী তাদের পূর্বঘোষিত প্রার্থী তালিকা থেকে ৮০ থেকে ১০০ জনকে বাদ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ৫ দফা দাবিতে চলমান যুগপৎ আন্দোলনে শরিক অপর সাতটি দলের জন্য এসব আসন ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দলীয় সূত্র জানায়, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা এবং মাঠপর্যায়ের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের ভিত্তিতে প্রার্থী বাদ–বদল করা হবে।

জামায়াতের প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব যোবায়ের বলেন, সংখ্যার ভিত্তিতে নয়, বরং যেখানে যে দল বা ব্যক্তি বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, সেখানে তাকে প্রার্থী করা হবে। ইসলামী দলগুলো মিলে একক প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে, যাতে “সব ইসলামি ভোট এক বাক্সে” আনা যায়। বিভাগীয় সমাবেশ শেষ হলে আট দলের লিয়াজোঁ কমিটি প্রার্থীতালিকা চূড়ান্ত করবে।

ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত আন্দোলনসহ শরিক অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনায় আসন বণ্টন নিয়ে কিছু জটিলতা তৈরি হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জানিয়েছে, তারা ও জামায়াত বড় দল হওয়ায় উভয় দলের আসন সংখ্যা প্রায় সমান হওয়া উচিত, তবে জামায়াত আগের সংসদে থাকায় সামান্য অগ্রাধিকার পেতে পারে। তাদের তত্ত্ব অনুযায়ী, জামায়াতকে ১৩০, ইসলামী আন্দোলনকে ১২০ এবং অন্য ছয় দলকে ৫০টি আসন দেওয়া যেতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত জোটের সংখ্যা ১০ বা ১১ দল পর্যন্ত বাড়তে পারে।

খেলাফত আন্দোলন ২০টি আসন চাইবে বলে জানিয়েছে। দলের আরেক অংশ ৫টি আসনের দাবি তুলেছে। তবে আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তই মানা হবে বলে তারা জানায়। পাশাপাশি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাগপা ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টিও নিজেদের প্রার্থী জরিপ করছে।

এদিকে দলীয় ও জোটসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বিভিন্ন আসনে একাধিক প্রার্থী থাকায় সমঝোতা হলে ব্যাপক রদবদল হবে। ইতোমধ্যে জামায়াত দুইজন হিন্দু প্রার্থীকে চূড়ান্ত করেছে— খুলনা-১ আসনে কৃষ্ণ নন্দী এবং কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে আরেকজন। আরও কয়েকজন সনাতন ধর্মাবলম্বী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী থেকে প্রার্থী করা হতে পারে। রাঙামাটিতে ডাকসুর সদস্য সর্বমিত্র চাকমার নাম আলোচনায় এসেছে, তবে বয়স কম হওয়ায় তার পরিবর্তে ডাকসুর জিএস এসএম ফরহাদকে মনোনয়ন দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েমকে খাগড়াছড়ি বা ঢাকায় প্রার্থী করা হতে পারে। চাকসু–রাকসুসহ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিজয়ী ছাত্রনেতাদেরও বিবেচনায় রাখা হচ্ছে।

ইতোমধ্যে কয়েকটি আসনে পরিবর্তনের প্রমাণও মিলেছে। হবিগঞ্জ-৪ আসনে জেলা আমিরকে সরিয়ে প্রবাসী সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। কুড়িগ্রামেও প্রার্থী বদল হয়েছে। আরও কয়েকজন নারী প্রার্থী ও জুলাই আন্দোলনের কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

সব মিলিয়ে শরিক দলগুলোর দাবি ও অভ্যন্তরীণ সমন্বয়ের কারণে জামায়াতের পূর্বঘোষিত প্রার্থী তালিকা থেকে কমপক্ষে ৮০ এবং সর্বোচ্চ ১০০ প্রার্থী বাদ পড়বেন— এটি নিশ্চিত বলে জানিয়েছে নির্ভরযোগ্য সূত্র।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow