বানার নদের পেটে ৬ বাড়ি, ২০ পরিবারে আতঙ্ক

3 months ago 28

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বানার নদে ধসে পড়েছে ছয়টি বাড়ি। গত এক সপ্তাহ ধরে নদীর পেটে গেছে উপজেলার ঈদগাঁ ময়দান সংলগ্ন এলাকার এসব বাড়িঘর। আতঙ্কে দিন কাটছে ওই এলাকার আরও ২০ পরিবারের।

স্থানীয়রা জানান, বানার নদের ফকির মজনু শাহ সেতুর ২০০ মিটার পশ্চিমে কাপাসিয়া-শ্রীপুর সড়কের পাশে একটি মাদরাসা ও মসজিদ। এরপর নদের পাড় লাগোয়া প্রায় ৩০০ মানুষের বসতি। সেখানে বাড়িঘরের সংখ্যা শতাধিক। এসব বাড়িঘরের মধ্যে বাবুল মিয়া, মো. রফিকুল ইসলাম, হেনা বেগম, কিরণ মিয়া, লিটন মিয়া ও সাবানা বেগমের বাড়ি ধসে নদে পড়ে গেছে। ঘরের ভেতর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তাদের নিত্যব্যবহার্য জিনিসপত্র। একটি টিউবওয়েল দড়ি দিয়ে বেঁধে কোনোমতে রক্ষা করে রেখেছেন বাসিন্দারা। যেসব ঘর টিকে আছে সেগুলোর মেঝেতেও দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল।

বানার নদের পেটে ৬ বাড়ি, ২০ পরিবারে আতঙ্ক

সেখানকার ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন, গত রোববার মধ্যরাতে হঠাৎ ধস শুরু হয়। তারা সবাই ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। ভয়ে চিৎকার করে উঠে দেখেন ধসে পড়ছে ঘরবাড়ি।

বাবুল মিয়া নামের একজন বলেন, হঠাৎ ঘরটি নদে ধসে পড়ে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কোনোমতে বেঁচে গেছি। তবে সব হারিয়ে এখন নিঃস্ব।

ধসেপড়া একটি ঘরে মো. রফিকুল ইসলাম থাকতেন তার পরিবারের ৯ সদস্যকে নিয়ে। তার ঘরটি নদে ধসে গেছে। তিনি বলেন, নদে রাতের আধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে এমন ঘটনা ঘটছে। তবে কারা বালু উত্তোলন করেছে তা তিনি জানাতে পারেননি।

হেনা বেগম নামের অপর এক নারী বলেন, স্বামী-স্ত্রীসহ তারা ছয়জন একটি ঘরে থাকতেন। সেটি ধসে গেছে। আমাদের মাথা গোজার ঠাঁই নেই।

জামিলা বেগম নামের এক বাসিন্দা বলেন, তার ঘর ধসে পড়েনি। তবে ঘরের মেঝেতে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। যে কোনো সময় সেটি ভেঙে পড়তে পারে। তিনি দ্রুত সমস্যা সমাধান করতে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা করতে অনুরোধ জানান।

বানার নদের পেটে ৬ বাড়ি, ২০ পরিবারে আতঙ্ক

পাখি বেগম বলেন, এক বছর ধরে বালু উত্তোলন বন্ধ আছে। তবে এরআগে বালু তুলে নেওয়ার ফলে নদের নিচে বালুর ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এখন তাদের ঘর হারিয়ে চরম মূল্য দিতে হচ্ছে।

কাপাসিয়া ঈদগা মাঠ ও মসজিদ কমিটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, নদের ভাঙন রোধে খুব দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ঈদগাহ ও মসজিদও ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল কালাম লুৎফর রহমান বলেন, স্থানীয় বসতি টিকিয়ে রাখতে এখানে বাধ দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মো. আমিনুল ইসলাম/আরএইচ/জিকেএস

Read Entire Article