কুমিল্লার বুড়িচংয়ে বালু নিয়ে খেলা করায় মিফতাহুল মাওয়া নামের চার বছরের এক শিশুকে পুকুরের পানিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক কলেজশিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ৪ মিনিট ১১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে কুমিল্লাজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে বুড়িচং সদর ইউনিয়নের পূর্বপাড়া মঞ্জুর আলী সর্দার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিশু মিফতাহুল মাওয়া পূর্বপাড়া মঞ্জুর আলী সর্দার বাড়ির সৌদিপ্রবাসী নজির আহমেদের মেয়ে। সে বর্তমানে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ১৪ নম্বর সিটে ভর্তি রয়েছে।
অভিযুক্ত শাহজাহান ফজলুর রহমান মেমোরিয়্যাল কলেজ অব টেকনোলজির শিক্ষক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শিশু মিফতাহুল মাওয়া ও তার বড় বোন গালিবা সুলতানা (১০) বাসা থেকে খেলতে বের হয়। একপর্যায়ে সড়কের পাশে রাখা বালুতে হাত দিয়ে খেলাধুলা করছিল মাওয়া। প্রতিবেশী শাহজাহান এ দৃশ্য দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে পাশের একটি পরিত্যক্ত পুকুরে ফেলে দেন। এসময় গালিবা সুলতানা তার পা ধরে ক্ষমা চাইলেও তিনি শিশুটিকে পানি থেকে না উঠিয়ে বাসায় চলে যান। পরে তার চিৎকারে শিশু মাওয়াকে বাচাতে এগিয়ে আসেন এক নারী পথচারী। তাকে উদ্ধার করে দ্রুত বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
শুক্রবার (১৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মাওয়ার চিকিৎসা চলছিল।
ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজে মাওয়ার মা সামছুন নাহার তানিয়াকে বলতে শোনা যায়, আপনার বালুর মূল্য আছে, আমার বাচ্চার মূল্য নাই? প্রতিউত্তরে কলেজশিক্ষক শাহজাহান বলেন, ‘না, আমার কাছে কোনো মূল্য নাই’। একপর্যায়ে তেড়ে আসেন তানিয়ার দিকে। এরপর তর্কে-বিতর্কে জড়িয়েন দুজন।
এ বিষয়ে সামছুন নাহার তানিয়া বলেন, ‘তিনি শিক্ষক নামে কলঙ্ক। আমার এবং আমার বাচ্চাদের সঙ্গে তিনি অমানুষের মতো আচরণ করেছেন। ছোট মেয়েকে বাঁচানোর আকুতি জানিয়ে আমার বড় মেয়ে তার পায়ে ধরেছে। তিনি লাথি মেরে বাসায় ঢুকে যান। আমার মেয়েকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে পানিতে ফেলে দিয়েছেন তিনি। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
অভিযুক্ত কলেজশিক্ষক শাহজাহানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ভাগিনা সাইফুল ইসলাম রিসিভ করে বলেন, ‘খালু বাসায় নেই। তিনি ডাক্তার দেখাতে ঢাকায় গিয়েছেন।’
এ বিষয়ে বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক বলেন, এ ঘটনায় সামছুন নাহার তানিয়া বাদী হয়ে মামলা করেছেন। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।
জাহিদ পাটোয়ারী/এসআর/এএসএম