ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় ৬ প্রাণ কেড়ে নেওয়া ঘাতক বাসের চালক মো. নুরুদ্দিন ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বক্তব্য রেকর্ডের পর তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে বেপারী পরিবহনের মালিক ডাব্লিউ বেপারীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজিএম) আদালতে আসামিদের হাজির করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মুন্সিগঞ্জের হাসড়া হাইওয়ে থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুর রহমান।
পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুজাহিদুল ইসলামের আদালত বাস চালক নুরুদ্দিনের দায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। জানা যায়- জবানবন্দিতে বাস চালক দাবি করেন, ‘গাড়ির ব্রেক ফেইল করায় গতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুর্ঘটনা ঘটে যায়’।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ ডিসেম্বর বেলা ১১টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় টোল পরিশোধের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারকে সজোরে ধাক্কা দেয় বেপারী পরিবহনের একটি বাস। এতে প্রাইভেটকারে থাকা একই পরিবারের চার জনসহ দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হন।
নিহতরা হলেন- মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার নন্দনকোনা গ্রামের বাসিন্দা ও দুর্ঘটনাকবলিত প্রাইভেটকারের মালিক নুর আলমের স্ত্রী আমেনা আক্তার (৪০), তার বড় মেয়ে ইসরাত জাহান (২৪), ছোট মেয়ে রিহা মনি (১১), ইসরাত জাহানের ছেলে আইয়াজ হোসেন (২), মোটরসাইকেলের চালক সুমন মিয়ার স্ত্রী রেশমা আক্তার (২৬) ও তার ছেলে মো. আবদুল্লাহ (৭)। আহত হয়েছেন আরো বেশ কয়েক জন।
পুলিশের আবেদনে বলা হয়, বাস চালক নুরুদ্দিন দ্রুত এবং বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে টোল প্লাজায় টোল দেওয়ার জন্য অপেক্ষারত প্রাইভেটকার এবং মোটরসাইকেলকে সজোরে আঘাত করে ৬ জনের প্রাণহানি ঘটিয়েছেন। আসামির দেওয়া তথ্য মামলার রহস্য উদঘাটনে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য হিসেবে বিবেচিত হবে। কাজেই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামি নুরুদ্দিনের জবানবন্দী ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারা অনুযায়ী রেকর্ড করা প্রয়োজন।