একসময় তারবিহীন বিদ্যুৎ স্থানান্তরের বিষয়টি অবাস্তব কল্পনার মতো ছিল। তবে বিজ্ঞানের উৎকর্ষে তা এখন বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। বিশ্ব এখন তারবিহীন বিদ্যুৎ স্থানান্তরের প্রযুক্তি বাস্তবায়নের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে।
পপুলার মেকানিক্স জানিয়েছে, নিউজিল্যান্ড সরকার এবং স্টার্টআপ কোম্পানি এমরোদের মধ্যে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ওয়্যারলেস বিদ্যুতের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা উন্মোচিত হতে যাচ্ছে। এ প্রযুক্তিটি নিকোলা টেসলার স্বপ্নের ধারণা থেকে অনুপ্রাণিত। তিনি ১৮৯০-এর দশকে ওয়্যারলেস বিদ্যুতের ধারণা নিয়ে কাজ করেছিলেন।
এমরোদের প্রতিষ্ঠাতা গ্রেগ কুশনির বলেন, আমরা দীর্ঘ দূরত্বে ওয়্যারলেস বিদ্যুৎ প্রেরণের প্রযুক্তি উন্নত করেছি। এই প্রযুক্তিটি অনেক দিন ধরে চলে আসছে, যদিও এটি ভবিষ্যতের মতো শোনায়।
২০২১ সালে নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিদ্যুৎ বিতরণকারী কোম্পানি পাওয়ারকো এমরোদের প্রযুক্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এই পাইলট প্রোগ্রামে ১৩০ ফুট দূরত্বে ওয়্যারলেস বিদ্যুৎ স্থানান্তরের প্রোটোটাইপ স্থাপন করা হয়েছে। এমরোদ রেক্টিফাইং অ্যান্টেনা বা রেক্টেনা ব্যবহার করে, যা মাইক্রোওয়েভের মাধ্যমে বিদ্যুৎ এক ওয়েপয়েন্ট থেকে অন্য ওয়েপয়েন্টে প্রেরণ করে। এই প্রযুক্তিটি নিউজিল্যান্ডের পার্বত্য এলাকার জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। বিশেষায়িত স্কোয়ার উপাদানগুলো মধ্যবর্তী পোলগুলোতে স্থাপন করা হয়, যা বিদ্যুৎ প্রবাহকে অবিচ্ছিন্ন রাখে এবং একটি বিস্তৃত পৃষ্ঠ এলাকা বিদ্যুতের সম্পূর্ণ তরঙ্গ সরবরাহ বজায় রাখে।
এমরোদের প্রযুক্তি দুটি প্রধান উপাদান ব্যবহার করে বিদ্যুতের বিমকে সংকীর্ণ এবং ফোকাসড রাখে। প্রথমটি ট্রান্সমিশন-সম্পর্কিত : ছোট রেডিও উপাদান এবং একক তরঙ্গ প্যাটার্ন একটি সমান্তরাল বিম তৈরি করে, যা বিস্তৃত হয় না। দ্বিতীয়ত এমরোদ ইঞ্জিনিয়ার্ড মেটামেটেরিয়াল ব্যবহার করে, যা রেডিও তরঙ্গের সাথে কার্যকরভাবে ইন্টারঅ্যাক্ট করে।
এমরোদের ওয়্যারলেস অ্যান্টেনাগুলো একটি কেবলের মতো করে কাজ করে। এটির কাজ হলো কেবল বিদ্যুৎ সরবরাহকে গ্রাহকের সাথে সংযুক্ত করা। এই প্রযুক্তি দীর্ঘ দূরত্বের জন্য প্রচলিত তামার তারের প্রয়োজনীয়তা দূর করে, যা পরিবেশগত সুফলও বয়ে আনতে পারে। কেননা অনেক দূরবর্তী এলাকায় ডিজেল জেনারেটরের উপর নির্ভর করতে হয়।