বর্ষার প্রাণবন্ত মাটি গাছের বৃদ্ধিতে আদর্শ হলেও, সেই মাটিতে যদি পুষ্টির অভাব থাকে তা হলে গাছ ঠিকমতো বাড়বে না। তাই অনেকে বাড়িতেই তাজা সবজি বা আনাজের খোসা দিয়ে জৈব সার বানাতে চান। তবে বর্ষায় এ ধরনের সার তৈরি করতে গেলে কিছু সাধারণ ভুল হলে দুর্গন্ধ, ছত্রাক বা পোকামাকড়ের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
জেনে নিন কীভাবে সঠিকভাবে বাড়িতে নিরাপদ সার বানানো যায়-
১. পাত্র নির্বাচন করুন
যে পাত্রে সার বানাবেন তা অবশ্যই শক্ত ও ঢাকনাযুক্ত হতে হবে। প্লাস্টিকের ড্রাম, কাঠের বড় বাক্স বা বয়াম ব্যবহার করতে পারেন। ঢাকনা দিয়ে রাখলে ভেতরে বৃষ্টির পানি সরাসরি পড়বে না এবং সার বেশি দিন ধরে ভালো থাকবে।
২. ছাউনির নিচে রাখুন
পাত্রটি একটি ছাউনির নিচে বা গাছের ছায়ায় রাখতে পারলে সার দ্রুত পচতে না দিয়ে নিরাপদ রাখা সম্ভব। অথবা এমন জায়গায় রাখুন যেখানে সরাসরি বৃষ্টির পানি পড়বে না।
৩. ড্রেনেজ নিশ্চিত করুন
যদি পাত্রে পানি জমে থাকে, তা সার পচনকে প্রভাবিত করবে। তাই পাত্রে ছোট ছিদ্র বা নল রাখুন যাতে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যায়।
৪. ভেজা এবং শুকনো খোসা মিশিয়ে ব্যবহার করুন
শুধু ভেজা খোসা ব্যবহার করলে সার থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে পারে। শুকনো খোসার সঙ্গে অর্ধেক ভেজা খোসা মিশিয়ে ব্যবহার করলে পচনের গতি নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং দুর্গন্ধ কম হয়।
৫. রান্না করা খোসা সাবধানতার সঙ্গে ব্যবহার করুন
রান্না করা খাবারের খোসা বা পচনশীল পদার্থ খুব বেশি দিলে সার থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে পারে এবং মাছি-পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়ে যায়। তাই এগুলো সীমিত পরিমাণে ব্যবহার করুন।
৬. পর্যাপ্ত অক্সিজেন দিন
জৈব সার পচানোর জন্য অক্সিজেন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাঝে মাঝে সারটি নেড়ে দিন বা পাত্রের ঢাকনা একটু খোলা রাখুন, যাতে বাতাস চলাচল করতে পারে এবং ছত্রাক না জন্মায়।
৭. পাতা এবং অন্যান্য উপকরণ যোগ করুন
শুকনো পাতা, গাছের ছোট ডাল বা ভাজা সবজি খোসা মিশিয়ে দিলে সার আরও সমৃদ্ধ হয়। এটি মাটির উর্বরতা বাড়ায় এবং গাছের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে।
বর্ষায় সবজির খোসা দিয়ে সঠিকভাবে জৈব সার বানালে গাছের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়, মাটি উর্বর থাকে এবং রাসায়নিক সার ছাড়াই প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে উদ্ভিদের পুষ্টি নিশ্চিত করা যায়। তাই, এই সহজ সতর্কতা মেনে চললেই সারের কার্যকারিতা অনেক বাড়ানো সম্ভব।
সূত্র: আনন্দবাজার, সংবাদ প্রতিদিন
মামুনূর রহমান হৃদয়/এএমপি/জেআইএম