বিআরটিসি বাসে ৮০০ টাকার ভাড়া ১৬০০, যাত্রীরা নিরুপায়

3 months ago 32

ঈদুল আজহার সরকারি ছুটি শুরুর প্রথম দিনই যাত্রীর চাপ বেড়েছে রাজধানীর গাবতলী ও কল্যাণপুর বাস টার্মিনালে। বেশিরভাগ গাড়িতে সিট ফাঁকা নেই। বড় বড় কোম্পানিগুলো গত মাসেই অনলাইনে টিকিট বিক্রি করে ফেলছে। যারা আগাম টিকিট সংগ্রহ করেননি, তারা এখন সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন। তাদের বাধ্য হয়ে উঠতে হচ্ছে লোকাল বাসে।

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে গাবতলী বাস টার্মিনালে ঘুরে দেখা গেছে, নামি কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি বিআরটিসি ডাবল ডেকার ও এসি বাসগুলোতেও এখন দূরপাল্লার যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। যাত্রীচাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে পরিবহনগুলো। এসব বাসও টার্মিনালে দাঁড়াতেই মুহূর্তে ভরে যাচ্ছে।

তবে সুযোগ পেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বিআরটিসি এসি ও ডাবল ডেকার নন-এসি বাসের বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুন

যাত্রীদের অভিযোগ, ঢাকা থেকে বগুড়াগামী বিআরটিসি ডাবল ডেকার লোকাল বাস ৫০০ টাকার ভাড়া হাঁকাচ্ছে ৭০০ টাকা। বগুড়াগামী অন্য কোম্পানিগুলোর এসি বাসে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৮০০ টাকা। অথচ বিআরটিসির এসি বাস যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ অর্থাৎ ১৬০০ টাকা ভাড়া আদায় করছে।

এদিন, সকাল থেকে যাত্রীর চাপ আর যানজটের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বৃষ্টি। এতে বেশ বিপাকে পড়েন নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষেরা। পরিবার নিয়ে ঘর থেকে বের হওয়া অনেকের ভোগান্তির মাত্রা ছিল অবর্ণনীয়।

হামিদ রহমান নামের একজন যাবেন দিনাজপুর। অনলাইনে টিকিট কেটেছেন। রাত ৮টার গাড়ি। তিনি বেলা ১১টায় এসে বসে আছেন। কথা হলে জাগো নিউজকে বলেন, ‘সড়কে জ্যাম, আবার বৃষ্টিও। এজন্য আগেই চলে এসেছি।’

ঈদযাত্রী রেশমি যাবেন রংপুর, আগাম টিকিট কাটেননি। সকাল থেকে বিভিন্ন কাউন্টারে ঘুরছেন, কোথাও টিকিট নেই। বেলা ১১টার দিকে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে একটি টিকিটের ব্যবস্থা হয় তার।

আফসানা নামের আগের যাত্রী পরিবারসহ যাবেন বগুড়া, কিন্তু কোনো বাসেই সিট ফাঁকা পাচ্ছেন না। দীর্ঘসময় অপেক্ষা করছেন। হতাশ হয়ে কাউন্টারে বসে থাকতে দেখা যায় তাদের।

যাত্রীদের এই বাড়িত চাপের সুযোগ নিতে দেখা গেছে ঢাকার লোকাল বাসগুলোকেও। এসব বাসও এখন যাচ্ছে দূরপাল্লায়। রাজধানীতে চলাচল করা গাবতলী-বাড্ডা সড়কের রইছ পরিবহনের গাড়িও যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে বগুড়ায়। বিআরটিসির গাড়ি, এমনকি ডাবল ডেকারও যাচ্ছে।

গাবতলী থেকে বগুড়ার স্বাভাবিক ভাড়া ৫৫০ টাকা। যাত্রীর চাপের কারণে লোকাল বাস, এমনকি বিআরটিসি ডাবল ডেকারও ৭০০ করে ডেকে নিচ্ছেন। বাধ্য হয়ে যাত্রীরা সেসব বাসে বাড়ি যাচ্ছেন। অন্যদিকে, গাবতলী লিংক লোকাল বাস ঢাকা থেকে পাটুরিয়া পর্যন্ত ভাড়া নিচ্ছে ৪০০ টাকা।

আরও পড়ুন

শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার বাদল জাগো নিউজকে বলেন, সকাল ৯টার গাড়ি, গাবতলী থেকে ছাড়ছে বেলা ১১টায়। তাও টার্মিনাল থেকে বের হতে সময় লাগছে ২০ মিনিট। পরের গাড়ি সকাল সাড়ে ১০টায়, গাড়ি পেছনে আছে, কখন আসতে পারবে, নিশ্চিত নই। গাবতলী এসে গাড়ি ঘুরে আসতেই তিন ঘণ্টা লেগে যায়।

তিনি বলেন, আজকে আমাদের কোনো গাড়ির সিট ফাঁকা নেই। সব সিট আগেই বিক্রি হয়ে গেছে। নতুন করে কোনো গাড়ি যুক্ত হলে টিকিট বিক্রি করতে পারবো। আপাতত সিডিউলের সব গাড়ির টিকিট বিক্রি শেষ।

একই অবস্থা বড় বড় কোম্পানির গাড়িগুলোরও। যাত্রীদের অনেকে সেসব কোম্পানির টিকিট আগাম কিনে রেখেছেন। বেশিরভাগ টিকিট গত মাসেই অনলাইনে বিক্রি হয়ে গেছে।

এসইউজে/এমকেআর/এএসএম

Read Entire Article