বিএনপির রাজনীতিতে নোমান ছিলেন কিংবদন্তি : মেয়র ডা. শাহাদাত

3 hours ago 4
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক সংসদ সদস্য, মৎস্য ও খাদ্যমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান মারা গেছেন। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বিএনপি নেতাকর্মীদের মনে। বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন। শোক বার্তায় তিনি বলেন, আবদুল্লাহ আল নোমানের মৃত্যুর সংবাদ ছিল আমার জন্য ভীষণ কষ্টের। তার হাত ধরেই আমরা রাজনীতি শুরু করেছি। বিএনপির রাজনীতিতে তিনি ছিলেন একজন কিংবদন্তি রাজনীতিবিদ। তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী অনন্য এক নেতা। বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে দলকে সুসংগঠিত করতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।  তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তার ভূমিকা ছিল অপরিসীম। তিনি গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার একদফার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি কেবল চট্টগ্রাম নয়, বাংলাদেশের রাজনীতির অঙ্গনে এক কিংবদন্তি পুরুষ। তিনি শুধু নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন একটি প্রতিষ্ঠান। তিনি ছিলেন নেতাদের নেতা। বিএনপির রাজনীতিতে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। মেয়র বলেন, আবদুল্লাহ আল নোমান ছিলেন বাংলাদেশের রাজনীতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে ছিলেন এক অবিচল যোদ্ধা। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন এবং আজীবন জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। মুক্তিযুদ্ধে তার সাহসী ভূমিকা অবিস্মরণীয়। তার মৃত্যু জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তার শূন্যতা কখনো পূরণ হওয়ার নয়। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক এ সভাপতি বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে আবদুল্লাহ আল নোমানের অবদান চিরস্মরণীয়। তিনি চট্টগ্রামের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে নানা উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। চট্টগ্রামের ব্যবসা বাণিজ্য, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং শিক্ষাক্ষেত্রে তার প্রচেষ্টা ছিল প্রশংসনীয়। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড, ইস্ট ডেল্টা ইউনির্ভাসিটি, স্বৈরাচারবিরোধী ’৯০ গণআন্দোলনে শহীদের স্মৃতি রক্ষায় প্রতিষ্ঠা করেন এন এম জে মহাবিদ্যালয়। এসব ছাড়াও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের উন্নয়নে তার অবদান চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। জনগণের কল্যাণে নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ আজও চট্টগ্রামের মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে। মেয়র আবদুল্লাহ আল নোমানের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবার, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক সংসদ সদস্য, মৎস্যমন্ত্রী এবং খাদ্যমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন। আবদুল্লাহ আল নোমান ১৯৯১ সালে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থেকে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর মৎস্য মন্ত্রণালয় এবং ২০০১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ষাটের দশকের শুরুতে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে নোমান যোগ দেন ছাত্র ইউনিয়নে। মেননপন্থি ছাত্র ইউনিয়নের চট্টগ্রাম মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক, বৃহত্তর চট্টগ্রামের সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ছাত্রজীবন শেষে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর হাত ধরে যোগ দেন শ্রমিক রাজনীতিতে। পূর্ববাংলা শ্রমিক ফেডারেশনের সহসভাপতি ছিলেন। গোপনে ভাসানীপন্থি ন্যাপের রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত হন। ১৯৭০ সালে তাকে ন্যাপের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। যুদ্ধ শেষে আবারও ন্যাপের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন। ১৯৮১ সালে বিএনপিতে যোগ দেন তিনি।
Read Entire Article