ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের বিদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদ এবং অর্থ ফেরতের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন করেন তারা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ফি বাবদ আমরা বিভিন্ন সময়ে এ প্রতিষ্ঠানকে অর্থ প্রদান করি। বিগত সরকারের আমলে উক্ত প্রতিষ্ঠান কৌশলে বিদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টিউশন ফি জমা দেওয়ার নাম করে আমাদের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ফি জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করে ও পরবর্তী সময়ে টাকা ফেরত চাইলে টালবাহানা করে সময়ক্ষেপণ করে। যার ফলশ্রুতিতে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন বিপর্যস্ত হয় এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তারা বলেন, পরবর্তী সময়ে অনেক দেনদরবার করার পর পাওনা টাকার বিপরীতে কর্তৃপক্ষ অনেক পাওনাদারকে উক্ত প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খাইরুল বাশার বাহার তার নিজের স্বাক্ষরিত চেক প্রদান করে যা ব্যাংক কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হয়। এরকম ভুক্তভোগীর সংখ্যা আনুমানিক ১ হাজারের মতো ও প্রত্যেকের পাওনা টাকার পরিমাণ গড়ে বিশ লাখ। টাকা উদ্ধারের জন্য থানায় অভিযোগ করা হয়। কিন্তু ন্যায়বিচার না পাওয়ায় আমরা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে গেলে বিএসবি চেয়ারম্যান খায়রুল বাশারের বাহিনী আক্রমণ চালায়। এছাড়া তারা পাওনাদারদের ক্রমাগত হুমকি দিয়ে আসছে।
টাকা পরিশোধ করতে চেয়েও না করার কথা জানিয়ে বক্তারা বলেন, সর্বশেষ গত ২৭ আগস্ট বিএসবির চেয়ারম্যান বাশার ও পাওনাদারদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এই মর্মে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যে, সমুদয় পাওনা টাকা ৩ কিস্তিতে পরিশোধ করবে। কিন্তু প্রথম কিস্তি পরিশোধের দিন অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হয় ও বাহিনী দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়, যা গুলশান থানা অবগত। আমরা নিরুপায় হয়ে টাকা উদ্ধার ও নিরাপত্তার জন্য অনেকে জিডি, প্রতারণা ও চেক জালিয়াতি মামলা দায়ের করেছি এবং বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। অভিযোগ দায়ের করা প্রায় দেড় মাস অতিবাহিত হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রশাসন থেকে তার কোনো ফলাফল পাইনি।
মানববন্ধনে প্রধান উপদেষ্টার কাছে ৫টি দাবি জানান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো:
১. বিএসবি কর্তৃক প্রতারিত ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অর্থ জরিমানাসহ ফেরত দিতে হবে
২. প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরদের দেশবাসীর সামনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে
৩. পরবর্তী সময়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যেন আর প্রতারিত না হয় সে বিষয়ে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে
৪. টিউশন ফি ও ভিসা প্রসেসিংয়ের নাম করে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে নেওয়া অর্থ বিদেশে পাচারের বিষয়টি তদন্তের আওতায় আনতে হবে এবং
৫. আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি আদায়ে বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
এমএইচএ/এমএইচআর/জিকেএস