বিগত দেড় দশক বাংলাদেশে বুদ্ধিবৃত্তিক দুর্বৃত্তায়ন ঘটেছে

রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার ও ভিনদেশি রাষ্ট্রের প্রতি অন্ধ আনুগত্যে থেকে বিগত দেড় দশকে বাংলাদেশে ‘বুদ্ধিবৃত্তিক দুর্বৃত্তায়ন’ ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে দেশের এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবী, লেখক ও মিডিয়াকর্মী ভারতের আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছেন। সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢা‌বি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বাংলা‌দেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী ঢা‌বি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল আয়োজিত ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ শিক্ষার রূপান্তর: একটি কৌশলগত রোডম্যাপ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, দেশের এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবী দীর্ঘদিন ধরে ‘ভারত-নির্ভর বুদ্ধিবৃত্তিক আধিপত্য’ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছেন, যা দেশের স্বাধীন বুদ্ধিচর্চা ও সমালোচনামূলক চিন্তাকে ক্ষয় করেছে। যেসব বুদ্ধিজীবীর অতীতে রাষ্ট্রীয় অন্যায়, নাগরিক নিপীড়ন বা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কথা বলার কথা ছিল, তারাই ভারতপন্থী রাজনৈতিক বয়ানের সুবিধাভোগী হয়ে নীরব থেকেছেন। দেশের বর্তমান শিক্ষা ও বুদ্ধিজীবী পরিস্থিতির সঙ্গ

বিগত দেড় দশক বাংলাদেশে বুদ্ধিবৃত্তিক দুর্বৃত্তায়ন ঘটেছে

রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার ও ভিনদেশি রাষ্ট্রের প্রতি অন্ধ আনুগত্যে থেকে বিগত দেড় দশকে বাংলাদেশে ‘বুদ্ধিবৃত্তিক দুর্বৃত্তায়ন’ ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে দেশের এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবী, লেখক ও মিডিয়াকর্মী ভারতের আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছেন।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢা‌বি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বাংলা‌দেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী ঢা‌বি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল আয়োজিত ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ শিক্ষার রূপান্তর: একটি কৌশলগত রোডম্যাপ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সালাহউদ্দিন।

তিনি বলেন, দেশের এক শ্রেণির বুদ্ধিজীবী দীর্ঘদিন ধরে ‘ভারত-নির্ভর বুদ্ধিবৃত্তিক আধিপত্য’ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছেন, যা দেশের স্বাধীন বুদ্ধিচর্চা ও সমালোচনামূলক চিন্তাকে ক্ষয় করেছে। যেসব বুদ্ধিজীবীর অতীতে রাষ্ট্রীয় অন্যায়, নাগরিক নিপীড়ন বা মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে কথা বলার কথা ছিল, তারাই ভারতপন্থী রাজনৈতিক বয়ানের সুবিধাভোগী হয়ে নীরব থেকেছেন।

দেশের বর্তমান শিক্ষা ও বুদ্ধিজীবী পরিস্থিতির সঙ্গে ব্রিটিশ আমলের তুলনা করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ব্রিটিশরা তাদের শাসন দীর্ঘায়িত করতে যেমন শিক্ষিত সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করত, তেমনি বিগত সময়েও কিছু বুদ্ধিজীবী ও মিডিয়া রাষ্ট্রের হেজিমনি (আধিপত্য) বজায় রাখতে বুদ্ধিভিত্তিক চর্চা সীমিত করেছিল। ফলে গণতান্ত্রিক ও সৃজনশীল চেতনার বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে।

ভবিষ্যৎ শিক্ষাব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য আধুনিক যুগের চাহিদার সঙ্গে মিল রেখে নতুন প্রজন্মকে গড়ে তোলা। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবোটিকস, ডেটা সায়েন্স ও বায়োটেকনোলজির মতো ক্ষেত্রে মানবসম্পদ তৈরি করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় শুধু চাকরি তৈরি করবে না; বরং গবেষণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্র হবে।

তিনি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ভোকেশনাল শিক্ষা এবং পরবর্তী ধাপে জ্ঞানভিত্তিক ও গবেষণামূলক শিক্ষা নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।

জুলাই সনদ ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, জাতীয় ঐক্যমত্যের নামে অনৈক্য তৈরির চেষ্টা হয়েছে। তবে আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিষয়টিকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। জাতীয় সার্বভৌমত্বকে কখনো কোনো আদেশ দিয়ে তো বাধ্য করা যায় না। কারণ দেশের সর্বোচ্চ সার্বভৌমত্ব হলো জাতীয় সংসদ। মানুষ ভোট দিয়ে তার প্রতিনিধি নির্বাচিত করে। জুলাই সনদে গণভোট নিয়ে যেসব প্রশ্ন করা হয়েছে তাতে মনে হয় পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করা লোকেরাও সেটি পড়তে অনেক সময় লাগবে।

নির্বাচন প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, শেষ পর্যন্ত সবাইকে জনগণের কাছে যেতে হবে নির্বাচনের জন্য। কারণ আমরা গত ১৫/১৬ বছর আন্দোলন করেছি একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। দেশের মানুষ ভোটের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে এমন একটি জাতি ও দেশ তৈরি করতে হবে যাতে কোনো ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচারের উত্থান না ঘটে। স্বাধীন বিচার বিভাগ, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। তবে স্বৈরাচারের দোসরদের বহাল রেখে স্বাধীন বিচার বিভাগ সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতি গঠনে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। ৩১ দফা রূপরেখা সেটিরই উদ্যোগ। আমরা একটি যুগোপযোগী উদ্যোগ নেব। দেশের অর্থনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষা ব্যবস্থা সবকিছুকেই পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।

সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে শিক্ষাব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করলেও শিক্ষা সংস্কারে কোনো কমিশন গঠন করেনি, যা হতাশাজনক।

এফএআর/এমএমকে

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow