প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও কার্যকরভাবে স্বাধীন করার প্রস্তাব করেছে বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন।
তিনি বলেন, আগের সরকারগুলো যদিও বলেছে এসেছে, জুডিসিয়ারি (বিচার বিভাগ) সম্পূর্ণ স্বাধীন, কার্যত জুডিসিয়ারি কখনই স্বাধীন ছিল না।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার বাইরে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি একথা বলেন।
শফিকুল আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে ৩৫২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন হস্তান্তর করে বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন। এ প্রতিবেদন পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে হলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কনস্টিটিউশনাল অ্যামেন্ডমেন্ট (সংবিধান সংশোধন) প্রয়োজন হবে।
প্রেস সচিব বলেন, বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস করার সুপারিশ করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস রয়েছে। সারাদেশে চার হাজারেরও বেশি পাবলিক প্রসিকিউটর রয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক সরকারগুলো তাদের মতাদর্শী আইনজীবীর মধ্য থেকে পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগ দিতেন। সরকার পরিবর্তন হলে আবার অন্য দল তাদের মতাদর্শী পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগ দিতেন। এ কারণে সংস্কার কমিশন। এ প্রথাকে বাদ দিয়ে স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস বিসিএসের মতো প্রক্রিয়া অনুসরণ করার সুপারিশ করেন।
তিনি বলেন, আদালতে যে ফৌজদারি মামলা রয়েছে তার প্রায় ৪০ শতাংশ সরকারের পক্ষ থেকে (পুলিশ) দায়ের করে। সরকারকে এ মামলাগুলো লড়তে হয়। মামলায় লড়াইগুলো যেন সঠিকভাবে হয় সেজন্য স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে।
কমিশন স্বতন্ত্র তদন্ত সংস্থার সুপারিশ করেছে। দেশে যে অপরাধগুলো হয় সেগুলোর তদন্ত সাধারণত পুলিশ করে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় রাজনৈতিক সরকারগুলো পুলিশকে ব্যবহার করে। রাজনৈতিক নেতাদের খুশি করতে তাদের মত করে তদন্ত হয়। পুলিশের তদন্তের কারণে অনেক বড় বড় মামলা সমালোচনার মুখে পড়ে। এ কারণে তারা স্বতন্ত্র তদন্ত সংস্থার সুপারিশ করেছে।
শফিকুল আলম বলেন, সুপ্রিম কোর্টের স্থায়ী বেঞ্চের সংখ্যা বাড়িয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে স্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। এর মূল কারণ বাংলাদেশের জনসংখ্যা বাড়ছে। ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টগুলো একেবারে উপজেলা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া গরিব মানুষের আইনগত সহায়তা আরও বাড়ানোর জন্য গ্রাম পর্যন্ত বৃদ্ধি করার সুপারিশ করেছে কমিশন।
তিনি জানান, আইনজীবীরা আদালতে কীভাবে রাজনীতি করবে সে সম্পর্কে একটি নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে কমিশন।
এমইউ/এমএএইচ/জিকেএস