বিচারপতি আখতারুজ্জামানের বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানি ২৬ আগস্ট

3 hours ago 2

সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানির জন্য আগামী ২৬ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলরের পরিবর্তে সংসদের হাতে ন্যস্ত হয়েছিল। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগ থেকে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষিত হলেও এ সংক্রান্ত রিভিউ দরখাস্তটি অনিষ্পন্ন থেকে যায়।

২০২৪ সালের ২০ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি হলে সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুজ্জীবিত হয়। অতঃপর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্য বিশিষ্ট সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল কার্যক্রম শুরু করে। কাউন্সিলের অন্য দুই সদস্য হলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী।

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর হাইকোর্ট বিভাগের তিনজন বিচারপতি, যথাক্রমে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক এবং বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হককে মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ্য করে নিজ স্বাক্ষরযুক্ত পত্রের মাধ্যমে স্বীয় পদ থেকে পদত্যাগ করার ইচ্ছা পোষণ করলে ২০২৪ সালের ১৯ নভেম্বর তাদের পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়।

এ বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগে এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

এর মধ্যে ২০২৪ সালের ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট বিভাগের ১২ জন বিচারপতির বিষয়ে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি তাদের বেঞ্চ থেকে বিরত থাকেন। তাদের মধ্যে একজন (বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিন) চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ্য করে নিজ স্বাক্ষরযুক্ত পত্রের মাধ্যমে পদত্যাগ করেন।

এছাড়া দুইজন বিচারপতি (বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম এবং বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলন) হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারক হিসেবে নিয়োগ পাননি। ২০২২ সালের ৩১ জুলাই হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে তারা নিয়োগ পেয়েছিলেন।

২০২৪ সালের ৩০ জুলাই তাদের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ না দিয়ে আরও ছয় মাসের জন্য অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি তাদের সেই বর্ধিত মেয়াদও শেষ হয়। এ ছাড়া অন্য দুইজন বিচারপতি (বিচারপতি আতাউর রহমান খান এবং বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাস) এরই মধ্যে অবসর গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে বিচারপতি আতাউর রহমান খান ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর এবং বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাস চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি। তাদের চাকরিকালীন মেয়াদ পূর্ণ করে অবসরে যান।

তাছাড়া সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পর রাষ্ট্রপতি দুই জন বিচারপতিকে অপসারণ করেন। এর মধ্যে বিচারপতি খিজির হায়াতকে চলতি বছরের গত ১৮ মার্চ এবং বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানকে চলতি বছরের গত ২১ মে অপসারণ করা হয়।

অপর ৫ বিচারপতির বিষয়ে বর্তমানে কাউন্সিলের তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এই পাঁচ বিচারপতির মধ্যে বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে চলতি বছরের গত ২৩ মার্চ রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে নির্দেশনা দেন।

পরবর্তীতে গত ২৫ জুন বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে তাকে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে তলব করা হয়। গত ১ জুলাই বিচারপতি আখতারুজ্জামান কাউন্সিলের সামনে হাজির হয়ে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যাখ্যা দেন।

এরই ধারাবাহিকতায় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পূর্ব নির্ধারিত দিন অনুযায়ী আগামী ২৬ আগস্ট বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক আখতারুজ্জামান এর বিষয়ে চূড়ান্ত শুনানির দিন ধার্য করেছেন।

এফএইচ/এমআইএইচএস/জিকেএস

Read Entire Article