অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে পূর্বাচলে প্লট আত্মসাতের অভিযোগ বিচারপতি (অবসরপ্রাপ্ত) এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের স্ত্রী কাশমিরি কামালসহ সাতজনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন মামলার বিষয়টি জানিয়েছেন।
ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর গত বছরের ২৩ অগাস্ট রাতে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত থেকে মানিককে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি। পরদিন সিলেটের বিচারিক হাকিম আলমগীর হোসেন বিচারপতি মানিককে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে পাসপোর্ট আইনে ভারতে ‘অনুপ্রবেশের চেষ্টা’র অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে মানিকের বিরুদ্ধে কানাইঘাট থানায় মামলা দায়ের করে।
১৯৭৮ সালে হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন জীবন শুরু করেন শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। তিনি ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হন। ২০০১ সালে তাকে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারক নিয়োগ দেয় সরকার। কিন্তু পরে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এসে তাকে বাদ দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর হাইকোর্টের একটি রায়ে বিচারকের আসনে ফেরেন শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। ২০১৩ সালে তাকে পদোন্নতি দিয়ে আপিল বিভাগের বিচারক করা হয়।
প্রথম মামলার অভিযোগে বলা হয়, বিচারপতি হিসেবে কর্মরত থাকাকালে এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ পাঁচ কোটি ৩৯ লাখ ৬৬ হাজার ৮২০ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন। এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
রাজউকের প্লট আত্মসাতের অভিযোগে দ্বিতীয় মামলায় এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকসহ সাতজনকে আসামি করা হয়েছে। মানিক ছাড়াও সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের স্ত্রী কাশমিরি কামাল, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল হুদা, এম জয়নাল আবেদীন ভুইয়া, রাজউক কর্মকর্তা মো. আবু বক্কার সিকদার, এম মাহবুবুল আলম ও আব্দুল হাই আসামি হয়েছেন মামলায়।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা ক্ষমতার অপব্যহারের মাধ্যমে প্রতারণার আশ্রয়ে মিথ্যা হলফনামা দাখিল করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে মূল গ্রহীতার নামে বরাদ্দ করা ১৮৮২০২ নং কোডের ১৬ নং সেক্টরের ১১৬ নং রাস্তার ০৩৬ নং প্লট পরবর্তীসময় লিজ দলিলের ২২ ও ২৩ নং শর্ত ভঙ্গ করে প্লট হস্তান্তর করার অনুমতি প্রদান করে প্লটটি আত্মসাৎ করেছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
এসএম/বিএ/জেআইএম