ইসলামী আন্দোলনের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম বলেছেন, চরম বিতর্কিত উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে জনগণ মেনে নেয়নি। পতিত স্বৈরাচারের বেনিফিশিয়ারি বিকৃত মানসিকতার সমাজ বিধ্বংসী এ নাটক-সিনেমা নির্মাতাকে দ্রুত উপদেষ্টা পরিষদ থেকে প্রত্যাহার করতে হবে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) দুপুর ২টায় খুলনা নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বরে ইসলামী আন্দোলন খুলনা মহানগর ও জেলা আয়োজিত গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো রাষ্ট্র সংস্কার করা। যাতে করে আর কখনোই কোনো স্বৈরাচার জন্ম নিতে না পারে। আমরা লক্ষ্য করেছি, ইতোমধ্যে সংস্কার কমিশন গঠিত হয়েছে। এখন এ কমিশনগুলো গতিশীল ও জন সম্পৃক্ত করতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কারে রাজনৈতিক দলগুলোকে সম্পৃক্ত করুন। তারাই দীর্ঘমেয়াদে জনমত ধারণ করেছে এবং আগামীতেও করবে। তাই সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক দল, উলামা শ্রেণি ও বিভিন্ন পেশা ও স্তরের জনমানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম বলেন, বিগত ১০০ দিনের বিভিন্ন নিয়োগ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তাদের কারো কারো বিরুদ্ধে বিগত স্বৈরাচারের সুবিধাভোগী হওয়া ও জনমানুষের বোধ বিশ্বাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। আবার কারো ব্যাপারে বিপ্লবের তেমন কোনো অবদান না থাকা স্বত্বেও বড় পদে পদায়িত করার অভিযোগ আছে। এগুলো মানুষকে ক্ষুব্ধ করে, আপনাদের বিবেচনাবোধ ও বিপ্লবের প্রতি আপনাদের দায়বোধ নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করে। তাই যে কোনো নিয়োগে দক্ষতা ও যোগ্যতার সঙ্গে বিপ্লবে তার ভূমিকা প্রধান বিবেচ্য হিসেবে ধার্য করতে হবে।
চরমোনাই পীর বলেন, সাধারণ মানুষ জটিল রাজনীতি বোঝে না। তারা খাদ্যের নিশ্চয়তা চায়, জীবনের নিরাপত্তা চায়। কিন্তু এ দুই ক্ষেত্রেই জনতার অভিজ্ঞতা ভালো না। দ্রব্যমূল্য বহু আগেই নাগালের বাইরে চলে গেছে। সংসার চালাতে সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
স্বৈরাচারের পতনের পরে মানুষ ভালো কিছু আশা করেছিল। কিন্তু বাস্তবতা হলো, কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেছে। এটা মানুষকে হতাশ করেছে। অবিলম্বে খুলনার বন্ধ সব মিল কলকারখানা চালু করে শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
ইসলামী আন্দোলনের খুলনা মহানগর সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়ালের সভাপতিত্বে ও নগর সহ-সভাপতি শেখ মো. নাসির উদ্দিন, নগর সেক্রেটারি মুফতি ইমরান হুসাইন, জেলা সেক্রেটারি হাফেজ আসাদুল্লাহ আল গালিবের যৌথ সঞ্চালনায় সমাবেশে মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শোয়াইব হুসাইন, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আলহাজ্ব মো. আমিনুল ইসলাম, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মুফতি মানসুর আহমেদ সাকী, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নুরুল বশর আজিজী বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে দাকোপ ও ডুমুরিয়া থেকে ৫০ জন হিন্দু পীর সাহেব চরমোনাইয়ের হাতে ইসলামী আন্দোলনে যোগদান করেন।
আলমগীর হান্নান/আরএইচ/জিকেএস