বিদ্বেষ থেকে শেখ হাসিনার ‍বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন মাহমুদুর রহমান

9 hours ago 3

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন বলেছেন, শেখ হাসিনা ও তার সরকারের প্রতি দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের বিরূপ মনোভাব ছিল। এ কারণে বিদ্বেষবশত শেখ হাসিনা ও তার সরকারের অন্যান্যদের বিরুদ্ধে এই ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ওনার (মাহমুদুর রহমানের) বিরুদ্ধে তৎকালীন মামলা হয়েছে, হাজত খেটেছেন। সেসব কারণে বিদ্বেষবশত শেখ হাসিনার ‍বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী দিয়েছেন।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মাহমুদুর রহমানকে জেরা শেষ করে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে এমন মন্তব্য করেন আইনজীবী আমির হোসেন। এদিন জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দেওয়া মাহমুদুর রহমানের বক্তব্যের জেরা শেষ হয়।

আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, মাহমুদুর রহমান একজন ইতিহাসবিদ। একজন ইতিহাসবিদ হিসেবে তিনি তার জবানবন্দিটা ইতিহাসের মতো করে বর্ণনা করেছেন। সেই ইতিহাসের বর্ণনা করতে গিয়ে মাহমুদুর রহমান মামলায় বিশেষ করে প্রধান আসামি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেই বেশিরভাগ কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মাহমুদুর রহমান যেসব কথা বলেছেন তিনি নিজস্ব অভিমত থেকে বলেছেন। আমি তার প্রতিটি কথারই সঠিক না বলে বিরোধিতা করেছি, তিনি সব কথাই অস্বীকার করেছেন। এছাড়া তিনি দেখা সাক্ষী না, উপস্থিত সাক্ষীও না। তিনি বিভিন্ন বইয়ের রেফারেন্স দিয়েছেন। আমি সেই বইয়ের কথা বলেছি, এটা ওনার নিজস্ব অভিমত ও নিজস্ব বক্তব্য।

আমির হোসেন বলেন, মাহামুদুর রহমান পর্যবেক্ষণ লিখেছেন কিন্তু কোনো একজনের ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ, তিনি পিএইচডি করেছেন। সেই পিএইচডির থিসিস তো সঠিক নাও হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, মাহমুদুর রহমান কোনো কিছু দেখেননি। আন্দোলনেও উপস্থিত ছিলেন না। ফলে তিনি প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী নন। বিভিন্ন বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে নিজের জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি। তবে শেখ হাসিনার প্রতি বিরূপ মনোভাব রয়েছে তার। কেননা তৎকালীন সরকারের আমলে তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় জেল খাটতে হয়েছিল। তিনি কোনো কথাই সঠিক বলেননি।

শেখ হাসিনা ও অন্য আসামিদের নির্দোষ দাবি করে স্টেট ডিফেন্সের এই আইনজীবী বলেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল কোনো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তাদের নির্দেশেও এসব হয়নি।

এদিন বেলা পৌনে ১১টা থেকে ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ শুরু হয়। এরপরই দ্বিতীয় দিনের মতো মাহমুদুর রহমানকে জেরা করেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। দুপুর দেড়টায় তার জেরা শেষ হয়। বিরতির পর দ্বিতীয়য়ার্ধে নেওয়া হবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য।

এর আগে, ১৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে হাজির হন নাহিদ। তবে মাহমুদুর রহমানের জেরা শেষ না হওয়ায় আজকের দিন ধার্য করা হয়। এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের ১৭ দিনে এখন পর্যন্ত জবানবন্দি দিয়েছেন ৪৬ জন।

ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিমসহ অন্যরা।

এফএইচ/কেএসআর/জিকেএস

Read Entire Article