বিদ্যালয়ের মাঠে হাট, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

6 hours ago 8
শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হওয়া, নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়া এবং স্কুলমাঠে নিয়মিত হাট বসানোর প্রতিবাদে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও দক্ষিণ বালাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করেছেন। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে দুই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা একত্র হয়ে স্কুলমাঠে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। তারা হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে ‘শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে দাও’, ‘হাটমুক্ত করো স্কুলমাঠ’, ‘বাউন্ডারি নির্মাণ করো এখনই’- এমন স্লোগানে মুখর করে তোলেন পুরো মাঠ। বিদ্যালয় দুটির চারপাশে বাউন্ডারি না থাকায় হাটের দিনগুলোতে স্কুলমাঠে ক্রেতা-বিক্রেতা, গবাদিপশু ও বহিরাগত লোকজনের ভিড়ে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। হাটের ময়লা-আবর্জনা ও কোলাহলে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলেও জানানো হয়। এসময় আন্দোলনকারীদের স্লোগান শুনে এলাকার সাধারণ মানুষও মাঠে জড়ো হন এবং আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানান। বিক্ষোভে বক্তারা বলেন, বহুদিন ধরে প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে আবেদন জানানো হলেও এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। স্কুলমাঠের অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ ও স্থায়ী বাউন্ডারি নির্মাণের দাবি জানান তারা। বক্তব্য রাখেন বালাপাড়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সন্তোষ কুমার রায়, দক্ষিণ বালাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মারজুয়ারা বেগম এবং বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি রাশেদুজ্জামান রাশেদ। সভাপতি রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন,  মুক্তিযুদ্ধের আগেই এই দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অথচ আজও কোনো প্রাচীর নেই- এটি অত্যন্ত লজ্জাজনক। আমরা প্রশাসনের কাছে একাধিকবার সহযোগিতা চেয়েছি, কিন্তু তারা গড়িমসি করছে। শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনে আরও কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব। তিনি আরও হুঁশিয়ারি দেন, স্কুলমাঠে হাট বসানো বন্ধ না হলে এবং দ্রুত বাউন্ডারি নির্মাণ না করলে আগামী দিনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে কঠোর অবস্থান কর্মসূচি দেওয়া হবে। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক নারী শিক্ষার্থী কালবেলাকে বলেন, স্কুলে বাউন্ডারি না থাকায় আমরা নিরাপদ নই। ক্লাস চলাকালীন বাইরের বখাটে ছেলেরা মাঠে ঢুকে বিরক্ত করে। প্রতি বৃহস্পতিবার ও রোববার হাট বসানোর কারণে মাঠে খেলাধুলাও করা যায় না। এই অবস্থায় পড়াশোনা করা কষ্টকর হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, আমরা চাই, প্রশাসন দ্রুত বাউন্ডারি নির্মাণ করুক- না হলে পড়াশোনার পরিবেশ আরও খারাপ হবে। অভিভাবক ও স্থানীয় সচেতন মহল জানান, স্কুলমাঠে হাট বসানোয় শিক্ষার্থীদের মনোযোগ নষ্ট হচ্ছে এবং নারী শিক্ষার্থীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান তারা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টি বারবার উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হলেও এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি বলে মনে করছেন অভিভাবক ও শিক্ষকরা।  
Read Entire Article