ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলের কারণে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। এতে তিস্তা ও ধরলা তীরবর্তী এলাকার ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে তিস্তার বাঁধ। এ অবস্থায় নদীপাড়ের মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে জেলার ৫ উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে মানুষ।
শনিবার (৬ জুলাই) সকাল ৯টায় তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)।
অপরদিকে ধরলার শিমুলবাড়ী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২ সেন্টিমিটার নিচে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে।
পাউবো বলছে, পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে স্বল্পমেয়াদী বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, তিস্তা ও ধরলার পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। এতে লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরের বসতবাড়ি ও রাস্তা ঘাট পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে নদীপাড়ের মানুষ। পাশাপাশি গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি নিয়ে বিপদে আছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।
তিস্তায় পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, নিজ গড্ডিমারী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, চর সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, কালমাটি, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করায় আবারো বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তিস্তা পাড়ের সায়েদ আলী বলেন, গত দুইদিন ধরে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ঘরবাড়িতে পানি উঠেছে। রাস্তাঘাটে চলাচল করতে কষ্ট হচ্ছে। গরু বাছুর নিয়ে আমরা বিপদে আছি।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, উজানের ঢলে আবারো তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে সকাল থেকে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য জাকির হোসেন বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে অনেক ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। গড্ডিমারিতে তিস্তায় একটি বাঁধ ধসে যাওয়া শুরু হয়েছে। বিষয়টি আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছি। অত্র ইউনিয়নে প্রায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি।
লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, তিস্তার পানি ২৪ ঘণ্টাই বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি।
রবিউল হাসান/এফএ/এমএস