বিভাগীয় কমিশনার-ডিসিকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ

2 weeks ago 8

২০২৪ সালের আগস্ট পরবর্তী সময় থেকে সিলেটের সাতটি পাথর কোয়ারি থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন, আহরণ ও অপসারণ বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে আদালতে সশরীরে হাজির হয়ে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

একই সঙ্গে পাথর উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত ও প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রস্তুত করে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক, সিলেটের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রোববার (২৪ আগস্ট) বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) দায়েরকৃত একটি জনস্বার্থমূলক মামলার প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি কাজী জিনাত হক এবং বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দীকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আইনজীবী এস হাসানুল বান্না জানান, সিলেট জাফলং, শাহ আরেফিন টিলা, ভোলাগঞ্জ, উৎমাছড়া, শ্রীপুর, বিছনাকান্দি, লোভাছড়া এবং বান্দরবান জেলার ১০টি ঝিরি-ছড়া পাথর কোয়ারি থেকে ধ্বংসাত্মক, ক্ষতিকর ও বিপজ্জনকভাবে পাথর উত্তোলন, আহরণ ও অপসারণ বন্ধে বিবাদীগণের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা সংবিধান ও দেশে প্রচলিত আইন ও বিচারিক সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন বিধায় কেন সেটি কর্তৃত্ববিহীন, অবৈধ ও জনস্বার্থ বিরোধী ঘোষণা করা হবে না এবং এ বিষয়ে অবহেলার কারণে কেন তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে বিবাদীগণের উপর রুল জারি করেছেন আদালত। জারিকৃত এ রুলে উল্লিখিত পাথর কোয়ারিগুলোকে কেন প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা এবং পরিবেশবান্ধব টেকসই ইকো-ট্যুরিজম হিসেবে রক্ষা ও ব্যবস্থাপনার নির্দেশ প্রদান করা হবে না তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।

তাছাড়াও অননুমোদিত ও অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন, আহরণ ও অপসারণের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের, পাথর উত্তোলনের ক্ষতিকর প্রভাব নিরূপণের এবং প্রকৃত দোষীদের নিকট থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের নির্দেশ কেন প্রদান করা হবে না তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।

রুল জারির পাশাপাশি মহামান্য আদালত উল্লেখিত পাথর কোয়ারিগুলো থেকে ধ্বংসাত্মক, ক্ষতিকর ও বিপজ্জনক পাথর উত্তোলন, সংগ্রহ ও অপসারণের কার্যক্রম যাতে আর না ঘটে সে বিষয়ে বিবাদীগণকে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেছেন। একইসাথে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, সিলেট ও বান্দরবন জেলার জেলা প্রশাসককে পরিবেশবান্ধব টেকসই ইকো-ট্যুরিজম বিকাশের জন্য একটি মহাপরিকল্পনা এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সভাপতিত্বে বিগত ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত পাথর কোয়ারি ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা আগামী ৩ (তিন) মাসের মধ্যে প্রণয়নের নির্দেশ প্রদান করেছেন আদালত।

তিনি আরও জানান, মহামান্য আদালত সিলেট জেলার উল্লিখিত ৭টি পাথর কোয়ারিসহ সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে ধ্বংসাত্মক, ক্ষতিকর ও বিপজ্জনকভাবে পাথর উত্তোলনের সাথে জড়িতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত ও প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে গৃহীতব্য ব্যবস্থা সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রস্তুত ও আদালতে দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেছেন খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক, সিলেটের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে। একই সঙ্গে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে আদালতে সশরীরে হাজির হয়ে ২০২৪ সালের আগস্ট পরবর্তী সময় থেকে অদ্যাবধি সিলেটের পাথর কোয়ারিসহ বিভিন্ন স্থান থেকে পাথর উত্তোলন, আহরণ ও অপসারণ বিষয়ে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করার নির্দেশ দিয়েছেন।

আগামী তিন মাসের মধ্যে সব আদেশ বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন মহামান্য আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহা. এরশাদুল বারী খন্দকার।

আহমেদ জামিল/আরএইচ/জিকেএস

Read Entire Article