বিমা আইন সংশোধনের আগে আইডিআরএর সংস্কার প্রয়োজন
বিমা আইনের সংশোধনী প্রস্তাবে যে ধারা ও উপধারা সংযোজন করা হয়েছে- সেগুলোকে পরিপালন করে বিমা শিল্প নিয়ন্ত্রণে দরকার দক্ষ ও চৌকস কর্তৃপক্ষ। এ কারণে সবার আগে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সংস্কার দরকার বলে মনে করছেন এ খাতের বিশেষজ্ঞরা। শনিবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তারা। বিমা খাতের উন্নয়ন, স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে বিমা আইন-২০১০ সংশোধনী ও বিমা খাত সংস্কারের বিষয়ে এ মতবিনিময় সভা হয়। অনুষ্ঠান আয়োজন করে বিমা বিষয়ক বিশেষায়িত প্ল্যাটফর্ম ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি। মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইডিআরএর সাবেক সদস্য (লাইফ) সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লা। আলোচনায় অংশ নেন বিআইপিডির মহাসচিব কাজী মো. মোরতুজা আলী ও অর্থকাগজ পত্রিকার সম্পাদক প্রণব মজুমদার। মতবিনিময় সভার আয়োজক ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডির সম্পাদক ও প্রকাশক মোস্তাফিজুর রহমান টুংকু এতে সভাপতিত্ব করেন। মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বিমা খাত সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নিতে পারেনি আইডিআরএ। তারা বিমা আ
বিমা আইনের সংশোধনী প্রস্তাবে যে ধারা ও উপধারা সংযোজন করা হয়েছে- সেগুলোকে পরিপালন করে বিমা শিল্প নিয়ন্ত্রণে দরকার দক্ষ ও চৌকস কর্তৃপক্ষ। এ কারণে সবার আগে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) সংস্কার দরকার বলে মনে করছেন এ খাতের বিশেষজ্ঞরা।
শনিবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তারা। বিমা খাতের উন্নয়ন, স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে বিমা আইন-২০১০ সংশোধনী ও বিমা খাত সংস্কারের বিষয়ে এ মতবিনিময় সভা হয়। অনুষ্ঠান আয়োজন করে বিমা বিষয়ক বিশেষায়িত প্ল্যাটফর্ম ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইডিআরএর সাবেক সদস্য (লাইফ) সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লা। আলোচনায় অংশ নেন বিআইপিডির মহাসচিব কাজী মো. মোরতুজা আলী ও অর্থকাগজ পত্রিকার সম্পাদক প্রণব মজুমদার। মতবিনিময় সভার আয়োজক ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডির সম্পাদক ও প্রকাশক মোস্তাফিজুর রহমান টুংকু এতে সভাপতিত্ব করেন।
মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বিমা খাত সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নিতে পারেনি আইডিআরএ। তারা বিমা আইন ২০১০-এর সংশোধনী ছাড়া নিয়ন্ত্রণ ও সংস্কারে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। লাইফ বিমা খাতের যেসব কোম্পানি তহবিল তছরুপ হয়েছে তা উদ্ধার, গ্রাহকদের বকেয়া দাবি পরিশোধ, তহবিল তছরুপে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। নন-লাইফ বিমা খাতেও অবৈধ কমিশন বন্ধ ও দক্ষ জনবল তৈরিতেও কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি।
বক্তারা আরও বলেন, বিমা আইন ২০১০ প্রণীত হয় ২০১০ সালে। এর মধ্যেই কি কারণে সংশোধনীর প্রয়োজন হলো- সেটিও স্পষ্ট নয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠিত হয় ২০১০ সালে। অথচ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এখনো চলছে প্রেষণে আসা সরকারি কর্মকর্তাদের দিয়ে। যাদের বেশিরভাগেরই বিমা বিষয়ক অভিজ্ঞতা নেই। ফলে বিমা আইন-২০১০ এর যথাযথ প্রয়োগ হয়েছে কি না— আইন সংশোধনের আগে সে বিষয়টি আরও ব্যাপকভাবে পর্যালোচনা প্রয়োজন।
মূল প্রবন্ধে বিমা আইন সংশোধনীর পর্যালোচনায় সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লা বলেন, বিমা আইন-২০১০-এ ১৬০টি ধারা আছে এবং প্রতিটি ধারায় কম-বেশি একাধিক উপধারা আছে। আইডিআরএ কর্তৃক আনা সংশোধনী প্রস্তাবে মূল ১৬০টি ধারার মধ্যে ৯৯টি মূল ধারা অপরিবর্তিত রেখেছে। কিন্তু সেগুলোর উপধারাগুলো পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। বাকি ৬১টি ধারার উপধারাসহ তাদের পরির্তন, পরিমার্জন, সংযোজন ও বিয়োজনের সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে। মূল ১৬০টি ধারার মধ্যে কয়েকটি বিলুপ্ত বা বাতিলের প্রস্তাব করেছে। অধিকন্তু ৬৪ নতুন ধারা, উপধারাসহ সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে সচিবালয় থেকে লিয়েন করে উপসচিব, যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের লিয়েনের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের পরিচালক ও নির্বাহী পরিচালকদের দায়িত্ব পালন করাচ্ছে, যে কোনো সময় তারা বদলি হতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক বা বিএসইসির মতো করে কর্তৃপক্ষের নিজস্ব প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি হয়নি। যদিও এরই মধ্যে কর্তৃপক্ষের বয়স ১৫ বছর হয়েছে।
আইডিআরএর এই সদস্য বলেন, বিমা আইনের আনা সংশোধনী প্রস্তাবে যে ধারা ও উপধারার সংযোজন করা হয়েছে— সেগুলোকে পরিপালন করে বিমা শিল্প নিয়ন্ত্রণে যে দক্ষ ও চৌকস কর্তৃপক্ষ হওয়া দরকার, সে জন্য আইডিআরএ’র সংস্কার সবার আগে দরকার। বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ শুধু যে বিমা শিল্পকে নিয়ন্ত্রণ বা কন্ট্রোল করার জন্য তৈরি করা হয়েছে তা কিন্তু নয়। যেহেতু বিমা খাত অনুন্নত এবং অবহেলিত, জনগণ বিমা সম্পর্কে সচেতন নয় এবং বিমার জ্ঞান নেই- তাই এই শিল্পের বিকাশে নিয়ন্ত্রণের পাশাপশি উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু প্রস্তাবিত সংশোধনী আইনে বিমা উন্নয়নে কোনো ধরনের প্রস্তাব করা হয়নি।
তিনি বলেন, যে দেশের বিমা শিল্প যত উন্নত সে দেশের অর্থনীতি তত সমৃদ্ধ। সেহেতু বিমা শিল্পকে উন্নত করতে হবে। বিমার সুফল প্রতিটি নাগরিক যাতে পেতে পারে সে জন্য বিমাকে সর্বজনীন করতে হবে এবং এটাকে রিটেইল পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। এই কর্মকাণ্ডে বিমাকারীর যে ভূমিকা আছে, একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষেরও ভূমিকা থাকতে হবে। আইন প্রণীত হতে হবে জনবান্ধব।
What's Your Reaction?