দেশের শীর্ষ তিন খেলার মধ্যে বিশ্বকাপের সাথে পরিচয় আছে কেবল ক্রিকেটের। অন্য দুই বড় খেলা ফুটবল ও হকিতে কোনো পর্যায়েই (জাতীয় বা বয়সভিত্তিক) বিশ্বকাপে খেলার অভিজ্ঞতা নেই। এবার সেই অভিজ্ঞতা হবে হকিতে। অনূর্ধ্ব-২১ হকি দল প্রথমবারের মতো পা রাখতে যাচ্ছে জুনিয়র বিশ্বকাপে।
আগামী ২৮ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর ভারতের চেন্নাই ও মাদুরাইয়ে বসবে ২৪ দলের জুনিয়র বিশ্বকাপের আসর। বাংলাদেশ খেলবে 'এফ' গ্রুপে। প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও ফ্রান্স।
গত বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে ওমানে হওয়া জুনিয়র এশিয়া কাপে পঞ্চম হয়ে বিশ্বকাপের টিকিট পেয়েছিল বাংলাদেশ। ওই আসরে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলেন মেহরাব হাসান সামিন। তাকে বিশ্বকাপেও রাখা হয়েছে একই দায়িত্বে। শুক্রবার তাকে অধিনায়ক ঘোষণা করা হয়েছে।
শনিবার বিকেলে মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে জাতীয় দলের বিপক্ষে অনুশীলন ম্যাচের পর জুনিয়র বিশ্বকাপ নিয়ে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন অধিনায়ক। প্রস্তুতি, লক্ষ্যসহ বাস্তবতা নিয়ে কথা বলেছেন তরুণ এই ডিফেন্ডার।
জাগো নিউজ: আবার অনূর্ধ্ব-২১ দলের অধিনায়ক হয়েছেন। আপনাকে অভিনন্দন।
মেহরাব সামিন: ধন্যবাদ। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
জাগো নিউজ: বিশ্বকাপের দলে অধিনায়ক হলেন প্রতিক্রিয়া কি আপনার?
মেহরাব সামিন: সত্যি বলতে কি আমি যে অধিনায়ক হবো সেটা ভাবতেও পারিনি। শুক্রবার যখন অধিনায়ক ঘোষণা করা হয় তখন আমি বিস্মিত হয়েছি। এতবড় মঞ্চে অধিনায়ক হয়েছি এটা আমার জন্য বড় পাওয়া। সবকিছুর জন্যই আলহামদুলিল্লাহ।
জাগো নিউজ: আপনি এশিয়ান কাপে অধিনায়ক ছিলেন। আপনার নেতৃত্বে বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করেছে দল। অধিনায়ক হবেন সে প্রত্যাশা ছিল?
মেহরাব সামিন: আসলে প্রত্যাশাটা আমি ওভাবে রাখিনি। কারণ, এখানে কোচ আছেন, অফিসিয়াল আছেন। তাদের চোখে সবদিক দিয়ে যে যথাযথ তাকেই তো অধিনায়ক দেওয়া হবে। আমি শুধু ভেবেছিলাম, অধিনায়ক দিলেও আমাকে খেলতে হবে। না দিলেও খেলতে হবে।
জাগো নিউজ: হকি দেশের তিন প্রধান খেলার একটি। ক্রিকেট বাদে অন্য দুটি ফুটবল ও হকির কোনো পর্যায়ের দলই কখনো বিশ্বকাপ খেলেনি। হকিতে সেই স্বপ্নপূরণ হতে যাচ্ছে আপনাদের জুনিয়র দল দিয়ে। বিশ্বকাপ কোন লেভেলের প্রতিযোগিতা তা সবাই জানেন। তারপরও অভিষেক আসরে কেমন ফলাফল করলে আপনি খুশি হবেন?
মেহরাব সামিন: আমি যদি এশিয়া কাপ থেকেই বলি তাহলে উল্লেখ করবো যে, তখন অনেক দলই আমাদের দুর্বল ভেবেছিল। তাদের ধারণা ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে সহজেই জিতবো। মালয়েশিয়া আমাদের চেয়ে ভালো দল ছিল। তাদের সাথে ড্র করেছি। চীনের সাথেও আমরা ড্র করেছি। আমরা যদি এভাবে ফাইট করতে পারি তাহলে ভালো একটা রেজাল্ট আসবে। প্রথম বিশ্বকাপ হিসেবে আমাদের লক্ষ্য কোয়ার্টারফাইনাল পর্যন্ত যাবো। সেই লক্ষ্যপূরণে আমাদের যা যা করার দরকার করবো।
জাগো নিউজ: বিশ্বকাপের আগে আপনাদের ইউরোপে যাওয়ার কথা ছিল। হয়নি। তো প্রস্তুতি কেমন চলছে?
মেহরাব সামিন: আমাদের যে প্রস্তুতি আছে তাতে কোয়ার্টারফাইনাল পর্যন্ত যাওয়ার চেষ্টা করবো। ইউরোপে যেতে পারলে ভালো হতো। যে কোনো কারণে হয়নি। এখন এখানে আমাদের সিনিয়র দল ছিল তাদের বিপক্ষে নিয়মিতই প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলেছি। এটা আমাদের অনেক কাজ দিয়েছে।
জাগো নিউজ: সিনিয়র দলের বিপক্ষে কতগুলো ম্যাচ খেলেছেন এবং সেই ম্যাচগুলো কেমন ছিল?
মেহরাব সামিন: আসলে প্রায় প্রত্যেক দিন বিকেলে ম্যাচ খেলেছি। ম্যাচগুলো হাই টেম্পারের ছিল। যে কারণে এই ম্যাচগুলো থেকে আমাদের প্রস্তুতি ভালো হয়েছে।
জাগো নিউজ: প্রতিপক্ষ তো অনেক শক্তিশালী। এখান থেকে কি প্রত্যাশা করা যায়। তাদের বিপক্ষে কি জয়ের কথা চিন্তা আশা করছেন?
মেহরাব সামিন: দেখেন আমরাও তো বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছি। তাই মনে করি, তাদের চেয়ে আমরা কোনো অংশে কম নই। যদি আগেই ভাবি ওরা আমাদের চেয়ে শক্তিশালী তাহলে তো এখানেই আমরা শেষ। বাস্তবতা হলো ওরা আমাদের চেয়ে এগিয়ে আছে। আমাদের ফাইট করতে হবে। আমরা ফাইটই করবো যাতে ভালো রেজাল্ট করতে পারি। প্রতিটি দল আমাদের চেয়ে এগিয়ে বলেই আমাদের জন্য লড়াইটা কঠিনই হবে। তবে আমাদের লড়াইয়ের মানসিকতা আছে।
জাগো নিউজ: বিশ্বকাপ বলে কথা। কোনো মানসিক চাপ আছে?
মেহরাব সামিন: এটা সত্য যে, একটা মানসিক চাপ থাকবেই। কারণ, এতবড় মঞ্চে আগে কখনোই খেলিনি। এই স্টেজ আমরা যেন টপকাতে পারি এবং তার জন্য যেমন প্রস্তুতি নেওয়া দরকার সেটা নিচ্ছি। সুযোগ যতটুকুই পাবো যদি কাজে লাগাতে পারি তাহেল ইতিবাচক রেজাল্ট আশা করতেই পারি।
জাগো নিউজ: সিনিয়র পর্যায়ের চেয়ে জুনিয়র পর্যায়ে বাংলাদেশ ভালো করে থাকে। সে হিসেবে কি বলতে পারি বিশ্বকাপেও জুনিয়র দল ভালো করবে?
মেহরাব সামিন: আসলে সিনিয়র লেভেলে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। আর জুনিয়র লেভেলে সবাই প্রায় কাছাকাছি থাকে। অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্স আমাদের চেয়ে অনেক ভালো দল। তারপরও আমাদের চেষ্টা থাকবে এই দলের বিপক্ষে যাতে ভালো কিছু করতে পারি।
জাগো নিউজ: আপনি তো বিকেএসপির শিক্ষার্থী। কোন পজিশনে খেলেন এবং বিকেএসপি থেকে কবে পাস করে বেরিয়েছেন?
মেহরাব সামিন: আমি ২০২১ সালে বিকেএসপি থেকে বেড়িয়েছি। আমি রক্ষণভাগে খেলি রাইটব্যাক হিসেবে।
জাগো নিউজ: ধন্যবাদ।
মেহরাব সামিন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
আইএইচএস/

4 hours ago
5









English (US) ·