দেশে দেশে বিধিনিষেধের কবলে পড়েছে সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করা চীনা এআই প্রতিষ্ঠান ডিপসিক। নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণ দেখিয়ে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাইওয়ান এরই মধ্যে ডিপিসিকের এআই ব্যবহার সীমিত বা নিষিদ্ধ করেছে।
গত মঙ্গলবার সরকারি ডিভাইসে ডিপসিক নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তারা জানায়, চীনা প্রতিষ্ঠানটি ‘অগ্রহণযোগ্য নিরাপত্তা ঝুঁকি’ তৈরি করছে। তাদের মতে, ডিপসিকের ‘ব্যাপক তথ্য সংগ্রহ’ এবং ‘বিদেশি সরকারের নির্দেশে তথ্য ব্যবহারের আশঙ্কা’ অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে।
আরও পড়ুন>>
অস্ট্রেলীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টনি বার্ক বলেন, সরকার জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়। তবে এই সিদ্ধান্ত ‘দেশভিত্তিক নয়’, বরং ঝুঁকি বিশ্লেষণের ভিত্তিতে গৃহীত হয়েছে।
প্রায় একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাইওয়ান।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারি কম্পিউটারে ডিপসিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি পর্যালোচনা করছে। আর শিল্প মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘নিরাপত্তা যাচাই না হওয়া পর্যন্ত’ ডিপসিকের ব্যবহার সীমিত রাখা হবে।
তাইওয়ানের প্রধানমন্ত্রী চো জুং-তাই গত সোমবার ঘোষণা দিয়েছেন, সরকারি সংস্থাগুলোতে ডিপসিকের ব্যবহার ‘সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ’ থাকবে। এর আগে, দ্বীপটির ডিজিটালবিষয়ক মন্ত্রণালয় ডিপসিক এআই এড়িয়ে চলার সুপারিশ করেছিল।
চীনের প্রতিক্রিয়া
অস্ট্রেলিয়ার নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বেইজিং এক বিবৃতিতে বলেছে, অস্ট্রেলিয়া অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও প্রযুক্তিগত ইস্যুকে রাজনৈতিক রূপ দিচ্ছে। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস অস্ট্রেলিয়ার পদক্ষেপকে ‘প্রযুক্তিগত নয়, বরং আদর্শগত বৈষম্যপ্রসূত’ বলে অভিহিত করেছে।
অস্ট্রেলিয়ার সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান সাইবার সিএক্স বলেছে, ডিপসিক এবং এর ব্যবহারকারীদের তথ্য চীনা সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন হওয়ার ‘প্রায় নিশ্চিত’ প্রমাণ পাওয়া গেছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কৌশলবিদ অ্যালাস্টেয়ার ম্যাকগিবন সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন, ডিপসিককে দেশের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো থেকে দূরে রাখা উচিত।
দেশে দেশে এমন বিধিনিষেধের বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি ডিপসিক কর্তৃপক্ষ।
সূত্র: নিক্কেই এশিয়া
কেএএ/