সালমান শাহ ও ডন ছিলেন খুব ভালো বন্ধু। তাদের সম্পর্কের পুরনো স্মৃতি মনে করে অনেক অজানা কথা বললেন নৃত্য পরিচালক সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান, সালমান শাহর মৃত্যুর খবর তিনি প্রথম পান অভিনেতা হেলাল খানের কাছ থেকে। তিনি সাইফুলকে ফোন করে জানান, সালমান শাহ মারা গেছে। তখন কলকাতার শুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন সাইফুল।
নায়কের হঠাৎ মৃত্যুর খবর সাইফুল প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। পরে নিশ্চিত হতে স্বপন সাহাকে ফোন দেন তিনি। ওই মুহূর্তের কথা মনে করে সাইফুল বলেন, ‘সালমান শাহ মারা গেছে এটা মেনে নিতে পারছিলাম না। ওর আত্মহত্যা আরও মেনে নেয়া যায় না। কারণ ওর আত্মহত্যার কোনো কারণ ছিল না। হ্যান্ডসাম একটা ছেলে। সবদিক থেকে সুখী ছিল। ওর আত্মহত্যা করার কোনো কারণ নেই।’
আরও পড়ুন
সালমান শাহকে বড় ভাই ও সামিরাকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু বললেন শাবনূর
‘সালমান শাহকে কেউ নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসেননি’
সাইফুল আরও বলেন, ‘২৯ বছর পর যা শুনছি তা আরও অবিশ্বাস্য। সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে। আর এতে জড়িয়েছে তার বন্ধু ডনের নাম। ‘কলিজার বন্ধু’ বলে যে শব্দ আছে এর থেকে বেশি আর কিছু হতে পারে না- সেটাই ছিল সালমান ও ডন। আমার মাথাতেই আসছে না, যে ছেলেটাকে সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করতো সালমান সেই এ কাজটা করলো। বিশ্বাসই করতে পারি না সালমান শাহ হত্যায় ডন জড়িত। এখন তো নায়ক মান্নার কথাই ঠিক। শোবিজে কেউ কারও বন্ধু না।’
সালমান শাহ আর ডনের বন্ধুত্বের কথা বলতে গিয়ে এ অভিনেতা বলেন, ‘আমার আজও মনে আছে ‘স্নেহ’ সিনেমার শুটিংয়ের ব্রেকে আমরা সবাই একসাথে বাগানে খেতে বসেছি। সালমান তখন খেতে আসছে না। সবাই ওকে ডাকতে গেলে ও বলে একটু অপেক্ষা করতে। এরপরই সালমান ফোন দেয় ডনকে। ফোনে জানায়, ওর জন্য না খেয়ে রয়েছে। ওই সময় কাকরাইল ছিল ডন। ডন আসার পর খেতে বসে সালমান। শুধু খাওয়া নয়, ডনকে ছাড়া খেলাধুলা, গান- বাজনা এক কথায় কিছুই করতো না সালমান। সেই বন্ধুর সাথে এটা করাতো উচিত না।’
সবশেষে সাইফুল বলেন, ‘সালমান হত্যার সাথে জড়িতদের আইনতো ফাঁসি দেবেই। আমি মনে করি, ইন্ডাস্ট্রির সবার উচিত এই খুনের সাথে জড়িত অপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে সোচ্চার হওয়া। কারণ আজ যদি সালমান শাহ থাকতো তাহলে ইন্ডাস্ট্রির এ অবস্থা হতো না। ক্ষতিটা তো ইন্ডাস্ট্রির হয়েছে।’
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নিউ ইস্কাটন রোডের ইস্কাটন প্লাজার একটি ফ্ল্যাটে মারা যান ঢালিউডের ‘স্বপ্নের নায়ক’ খ্যাত সালমান শাহ। তার মৃত্যুকে স্ত্রী সামিরা হক আত্মহত্যা দাবি করলেও নায়কের মা, বাবা ও পুরো পরিবারের দাবি এটি একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
দীর্ঘ ২৯ বছর মামলা চলমান থাকার পর অভিনেতার মৃত্যু রহস্য জানতে সম্প্রতি সালমান শাহর অপমৃত্যু মামলাটি রূপ নিয়েছে হত্যা মামলায়। এ হত্যা মামলায় সর্বমোট ১১ জনকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যার চার নম্বর আসামি নায়কের বন্ধু আশরাফুল হক ডন।
এমআই/এলআইএ/এমএস

14 hours ago
4









English (US) ·