বিশ্বে একনায়কদের তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন শেখ হাসিনা

গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাপী একনায়কদের তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন বলে উল্লেখ করেছেন প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনকালে এ মন্তব্য করেন তিনি। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন তিনি। এদিন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফসহ চারজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সূচনা বক্তব্যে উপস্থাপন করেন। এসময় শেখ হাসিনাকে বিশ্বব্যাপী একনায়কদের তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন বলে আখ্যায়িত করে প্রসিকিউশন। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, বিশ্বে একনায়ক এবং গণহত্যাকারী স্বৈরশাসকদের অনেকেই বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। সে তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন শেখ হাসিনা ওয়াজেদ। আমরা তার দোসরদের বিরুদ্ধে আজ আপনাদের কাছে ন্যায়বিচারের দাবি নিয়ে এসেছি। তিনি বলেন, আমরা ইতিহাসের পাতায় দেখতে পাই, যুগে যুগে বিশ্বে স্বৈরশাসকের আবির্ভাব হয়েছে। দেশে দেশে নিষ্ঠুর এ

বিশ্বে একনায়কদের তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন শেখ হাসিনা

গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বব্যাপী একনায়কদের তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন বলে উল্লেখ করেছেন প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন তিনি।

এদিন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফসহ চারজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সূচনা বক্তব্যে উপস্থাপন করেন। এসময় শেখ হাসিনাকে বিশ্বব্যাপী একনায়কদের তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন বলে আখ্যায়িত করে প্রসিকিউশন।

ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, বিশ্বে একনায়ক এবং গণহত্যাকারী স্বৈরশাসকদের অনেকেই বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। সে তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন শেখ হাসিনা ওয়াজেদ। আমরা তার দোসরদের বিরুদ্ধে আজ আপনাদের কাছে ন্যায়বিচারের দাবি নিয়ে এসেছি।

তিনি বলেন, আমরা ইতিহাসের পাতায় দেখতে পাই, যুগে যুগে বিশ্বে স্বৈরশাসকের আবির্ভাব হয়েছে। দেশে দেশে নিষ্ঠুর একনায়কের জন্ম হয়েছে। আমরা অ্যাডলফ হিটলারের নাম শুনেছি। মুসোলিনি, ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কো, পিনোশে, মার্কোসের নাম শুনেছি।

আরও পড়ুন
গুমের ২ মামলায় শেখ হাসিনার স্টেট ডিফেন্স জেডআই খান পান্না
দেশে সাদা ও কালা দরবেশ আছে: অ্যাটর্নি জেনারেল

মিজানুল ইসলাম আরও বলেন, নীলনকশার নির্বাচন, লাইলাতুল ইলেকশন এবং আমি-ডামির নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার মসনদ আঁকড়ে ধরে বিগত ১৭ বছরে বাংলাদেশের মাটিতে খুন, গুম, রাজনৈতিক নিপীড়নের যে সংস্কৃতি চালু হয়েছিল, আজ তার চির অবসানের জন্য এই বিচার। আমরা চাই এই বিচার জাতির সভ্যতার ঐতিহাসিক যাত্রাপথে এক উজ্জ্বল মাইলস্টোন হিসেবে স্থান পাক, যাতে আগামীর বাংলাদেশে কেউ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের সাহস না দেখায়।

এই প্রসিকিউটর বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে আমরা দেখেছি অনেক স্বৈরাচার পালিয়ে গেছেন। বাংলাদেশের স্বৈরশাসক পালিয়েই শুধু যাননি, তার ৩০০ এমপি, তার কেবিনেট, এমনকি কিছু বিচারক যারা নিজেদের শপথবন্ধ রাজনীতিবিদ বলে দাবি করতেন- তারাও পালিয়েছে।

এই বিচার কেবল একটি মামলার নিষ্পত্তি নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি শক্তিশালী বার্তা। এই জাতি আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারে বিশ্বাসী। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়, সে যত শক্তিশালী বা প্রভাবশালী হোক না কেন। এই বিচার হবে একটি ইতিহাস। এটি হবে সেইসব মানুষের আত্মত্যাগের সম্মাননা, যারা ন্যায়বিচারের এবং ভয়ভীতিহীন একটি সমাজের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন। এই ট্রাইবুন্যাল প্রমাণ করবে যে, বাংলাদেশ একটি ন্যায়ভিত্তিক, মানবিক এবং আইনের শাসনের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ রাষ্ট্র।

প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে ট্রাইবুনালে বলা হয়, আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, এই মামলায় নিরপেক্ষ, নির্ভুল এবং দৃঢ় বিচার নিশ্চিত করুন। দোষীদের যথাযথ শাস্তি দিন, যাতে জনগণের বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা ফিরে আসে। এ বিচার কেবল অপরাধীর শান্তি প্রদান নয়, বরং এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি বার্তা- অপরাধী যত বড়ই হোক, বিচারের মুখোমুখি তাকে হতেই হবে।

প্রসিকিউটর মিজানুল বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় পুলিশ কর্তৃক নিরীহ ও নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ, বেআইনি আটক ও নিপীড়নমূলক গ্রেফতার, নির্যাতন, অমানবিক ও নিষ্ঠুর আচরণের মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীর ধংসের কফিন ফ্যাসিস্ট সরকার প্রস্তুত করেছিল। এর অন্যতম দৃষ্টান্ত ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট, কুষ্টিয়া সদর মডেল থানা এলাকায় আন্দোলনরত নিরীহ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর পুলিশ ও সশস্ত্র আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করে ৬ জনকে হত্যা ও অনেককে গুরুতর আহত করে।

এফএইচ/কেএসআর/এমএস

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow