সম্পদের পরিমাণ দিয়ে ইতিহাসের নতুন এক মাইলফলক সৃষ্টি করেছেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক। বর্তমানে তার মোট সম্পদ ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পার করেছে, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪৮ লাখ কোটি টাকার সমান (১ ডলার= ১২০ টাকা ধরে)।
এই বিপুল সম্পদ অর্জন করে তিনি বিশ্বের প্রায় ১৫০টি দেশের (স্বতন্ত্রভাবে) বার্ষিক মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) থেকেও বেশি সম্পদ অর্জন করেছেন।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্সের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইলন মাস্কের সম্পদ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বিশেষ করে নভেম্বর মাসে যখন ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এর পর থেকে তার সম্পদ ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।
মাস্কের এই বিশাল সম্পদের বৃদ্ধির অন্যতম কারণ তার প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স এবং টেসলা। ব্লুমবার্গের তথ্যানুসারে, মাস্কের সম্পদে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছে স্পেসএক্সের অভ্যন্তরীণ শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে, যা তার মোট সম্পদে প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার যোগ করেছে। বর্তমানে স্পেসএক্সের মূল্য প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলার, যা মহাকাশ গবেষণায় একটি নতুন মাইলফলক।
এ ছাড়াও, টেসলা যা বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাণের জন্য বিখ্যাত, তার শেয়ারের দামও ৭১% বেড়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে টেসলার শেয়ার সর্বকালের সর্বোচ্চ ৪২৪.৭৭ ডলারে পৌঁছেছে, যার ফলে মাস্কের সম্পদ আরো বৃদ্ধি পেয়ে ৪৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়ায়।
ইলন মাস্কের পরেই ধনীদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন জেফ বেজোস, যার সম্পদ ২৪৯ বিলিয়ন ডলার। তৃতীয় স্থানে আছেন মার্ক জাকারবার্গ, ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী, যার সম্পদ ২২৪ বিলিয়ন ডলার।
প্রসঙ্গত, ইলন মাস্কের এই বিশাল সম্পদের পরিমাণ অনেক দেশের বার্ষিক মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) থেকেও বেশি। উদাহরণস্বরূপ, পাকিস্তানের জিডিপি ৩২৬.৮ বিলিয়ন ডলার। এমনকি, মাস্কের একদিনে ৬২.৮ বিলিয়ন ডলারের প্রবৃদ্ধি অনেক দেশের জিডিপি অতিক্রম করে।
উল্লেখ্য, মাস্কের সাফল্য শুধুমাত্র একটি প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন বা ব্যবসায়ের সাফল্য নয়, বরং এটি একটি নতুন অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে, যেখানে এক ব্যক্তি এককভাবে বৃহত্তম এবং ধনী দেশগুলির তুলনায় অনেক বেশি সম্পদ অর্জন করতে পারে। এই ঘটনার মাধ্যমে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবক হিসেবে তিনি কেবল ব্যবসায়ী নন, বরং একটি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক শক্তির প্রতীকও।