বিয়ে করে সর্বস্ব লুটে নিয়েছেন যুবদল নেতা মুন্না

1 hour ago 2
ধর্মান্তরিত করে বিয়ের পর টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও ফ্ল্যাটসহ বিভিন্ন সম্পদ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মুন্সীগঞ্জ জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোজাম্মেল হক মুন্নার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী গৃহবধূ জানান, তার প্রতারক স্বামী মুন্না তাকে শারীরিক-মানসিক নির্যাতনও করেছেন। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করার পর বিভিন্নভাবে হুমকি অব্যাহত রেখেছেন। ভুক্তভোগী গৃহবধূ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মৌসুমী হক (ধর্মান্তরিত নাম)।  রোববার (১৭ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, মুন্না আমার সোয়া কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট, প্রায় ১৯ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ অর্থসহ প্রায় আড়াই কোটি টাকার সম্পদ প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে। ডিভোর্স দিয়ে এক নিমিষেই আমার জীবন জাহান্নাম বানিয়েছে সে। কী অপরাধ ছিল আমার বলুন? আমি শুধুমাত্র একটি সংসার চাই। আমি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে আমার অত্যাচারের ন্যায্য বিচার চাই। আমার স্বাভাবিক জীবন, আমার টাকাসহ সম্পদ ফেরত দিন, আপনি আমার পাশে দাঁড়ান। আমি মরার আগেই বিচার চাই। এই নেতাকে একবার বহিষ্কার করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি কীভাবে আবার দলে ফিরে এলেন? মৌসুমী হক জানান, ২০১০ সালে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার সানাউল্লাহর ছেলে মোজ্জামেল হক মুন্নার সাথে পরিচয় হয়। তখন তাদের একটি টিনের ঘর ছিল। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একত্রে পড়াশোনাকালে আমাকে প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন হোটেলে নিয়ে যেতেন। কিন্তু কোথায়ও তিনি নিজের আইডি কার্ড ব্যবহার না করে আমার পরিচয় আর আইডি কার্ড দিয়ে হোটেল বুকিং দিতেন। একপর্যায়ে বিয়ের কথা বললে মুন্না আমাকে ধর্ম ত্যাগ করতে বলে। আমি ভালোবাসা টিকিয়ে রাখতে ২০১১ সালে হিন্দু থেকে মুসলিম ধর্মে ধর্মান্তরিত হই এবং মুন্না আমাকে বিবাহ করেন। তখন মুন্না বিএনপির অঙ্গসংগঠন জাসাস’র সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পরবর্তীতে আমার টাকা এবং গাড়ি ব্যবহার করে বিভিন্ন জায়গায় পরিচিতি দিয়ে তদবির-লবিংয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হন ২০১৮ সালের ৫ জুন। সেসময় আমিসহ তার ৩ জন স্ত্রী। আমাকে না জানিয়ে তিনি পরকীয়ায় যুক্ত থাকতেন, বিয়ে করতেন। প্রতিবাদ করলে আমায় তালাকের হুমকি দিয়ে মারধর করতেন। অথচ ছাত্রদল করা অবস্থায় কারও স্ত্রী থাকা সম্পূর্ণ সংগঠনবিরোধী কাজ। এক্ষেত্রে তিনি সংগঠনকেও সম্পূর্ণরুপে অমান্য করেছেন। বর্তমানে তিনি মুন্সীগঞ্জ জেলার যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে আছেন। আসলে মুন্না একজন প্রতারক ও সম্পদ লুটেরা। তিনি বলেন, আমাকে নির্যাতনের প্রমাণ সুনির্দিষ্টভাবে যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দাখিল করলে যাচাইয়ের পর একমাসের জন্য মুন্নাকে দল থেকে বহিষ্কার করে। কিন্তু গত ৩০ জুন মুন্নার নেতৃত্বে বিশাল র‌্যালি দেখে আমি অবাক হই। তার ক্ষমতা ও টাকার কাছে আমার আর্তনাদ হারিয়ে গেছে? অথচ আজ মুন্নার কোটি টাকার মালিক হওয়ার পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক বিগত আওয়ামী লীগের আমল। ভুক্তভোগী গৃহবধূ বলেন, যুবদলের নেতা হয়েও বিগত আন্দোলন সংগ্রামে মুন্না দেশে ছিলেন না। পাসপোর্ট যাচাই করলেই তথ্য পরিষ্কার হয়ে যাবে। ২০২৪ সালের ৬ আগস্ট মুন্না ও আমি মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরে আসি। দেশে ফিরেই আমাকে ডিভোর্সের কথা জানিয়ে দিলে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে যাই। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আমি মামলা করতে গেলেও আমাকে হয়রানি করে। সন্ত্রাসী, পুলিশ, সিআইডি ও তার পরিবারের লোক কেউ বাদ রাখেনি আমায় হুমকি এবং অত্যাচার করতে। আমি তারেক রহমানের কাছে বিচার চাই। হয় আমাকে মুন্নার হাতে মরতে দিন, নয়তো আমার কষ্টার্জিত টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, ফ্ল্যাট ও সম্পদ ফেরত দিতে বলুন। আমি দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন রেখে গেলাম কে নেবে এই জালিমের বিচারের দায়? কে নেবে আমার ওপর অত্যাচারের ভার? 
Read Entire Article