বুজতেছি না এ সরকার কি আমাদের, নাকি কাদের: ইব্রাহীম

4 hours ago 7

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক মো. ইব্রাহিম হোসেনকে রিমান্ডে নেয়া হলে আদালতে গণমাধ্যমে বলেন, 'আওয়ামী লীগের স্টাইলে সেই একইভাবে মামলাগুলো সাজিয়ে দেয়া হচ্ছে। বুজতেছি না এ সরকার কি আমাদের, নাকি কাদের।' 

বুধবার (২৭ আগস্ট) আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদের কাছে পাঁচ কোটি টাকা চাঁদাবাজির মামলায় ইব্রাহীম হোসেনসহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চারজনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। 

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ্ ফারজানা হক রিমান্ডের এ আদেশ দেন। বাকিরা হলেন- সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ, সদস্য সাকাদাউন সিয়াম এবং সাদমান সাদাব। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক আসামি মো. ইব্রাহিম হোসেন বলেন, 'আমি ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের দুইটারই আহবায়ক ছিলাম। আমি বাদীকে চিনিই না। আওয়ামী লীগের স্টাইলে সেই একইভাবে মামলাগুলো সাজিয়ে দেয়া হচ্ছে। তাও আমাদের বিরুদ্ধে। বুঝতেছি না এই সরকারটা আমাদের, নাকি কাদের।'

তিনি আরো বলেন, 'আমাদের ধান্দাপাতি করার কোনো নিয়ত নাই। আমরা জুলাইয়ের সাথে গাদ্দারি করতে পারি না। আমাদের ভাইয়ের রক্তের সাথে কোনোভাবেই বেইমানী করতে পারি না। ফাইজলামির একটা লিমিট থাকে। একদিন দেশবাসী সবকিছু জানতে পারবে।' তিনি বলেন, 'আমাদের ফাঁসানো হচ্ছে। আমাদের নিয়ে নোংরা খেলা চলছে। কারা ফাঁসাচ্ছে আপনারা মিডিয়ারা খুঁজে বের করুন। কছম খেয়ে বলছি, চাঁদার যদি কোনো প্রমাণ দেখাতে পারে আর কখনো রাজনীতি করবো না।' বাকি দুই আসামি বলেন, আমরা জুলাইয়ের লোক। জুলাইয়ের সাথে গাদ্দারী করি নাই।

শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামসুদ্দোহা সুমন গণমাধ্যমে বলেন, 'গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজ শ্রেণির উদ্ভব হয়েছে। আইনের কাছে সবাই সমান। আনিসুল হক-পলকরা যেমন আইনের আওতায় গেছে, চাঁদাবাজদেরও বিচার হবে।'

এদিন বিকেলে তাদের আদালতে হাজির করে ৫ কোটি টাকা চাঁদার মামলায় ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও থানার ইন্সপেক্টর নাজমুল জান্নাত শাহ। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। রিয়াদের পক্ষে আক্তার হোসেন ভূঁইয়া এবং ইব্রাহিম হোসেনের পক্ষে আব্দুল্লাহ আল ফারুক রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। অপর দুই আসামির পক্ষে আইনজীবী ছিলেন না। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের চারদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।  

এদিকে এরআগে সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে সাবেক এমপির বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রিয়াদসহ বাকি আসামিরা কারাগারে ছিলেন।

এছাড়া আবুল কালাম আজাদের কাছে পাঁচ কোটি টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ গত ১ অগাস্ট তার শ্যালক সাইফুল ইসলাম তেজগাঁও থানায় মামলা করেন। মামলা থেকে জানা যায়, আবুল কালাম আজাদের একটি গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গত ২৬ জুন বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক পরিচয় দিয়ে রিয়াদসহ অপরাপর আসামিরা তেজগাঁও থানাধীন এলাকায় তার অফিসে গিয়ে খুন জখমের হুমকি দিয়ে ৫ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। তিনি চাঁদা প্রদান করতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে শেখ হাসিনার দোসর উল্লেখ করে সেনাবাহিনী দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার এবং মব সৃষ্টি করে রাস্তায় নামিয়ে বেইজ্জতির হুমকি দেয়। তারপর তারা মব সৃষ্টি করে আবুল কালাম আজাদের অফিসের ড্রয়ার খুলে ১১ টি চেকের মাধ্যমে ৫ কোটি টাকা চেকক স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। এরপর রিয়াদ আবুল কালাম আজাদকে ফোন করে হুমকি দিয়ে অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করতে বলে। না হলে পুলিশ নিয়ে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়।
 

Read Entire Article