ফার্মাসিউটিক্যালস ছাড়া বেক্সিমকো গ্রুপের সব কোম্পানির তত্ত্বাবধানে নতুন রিসিভার হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক খসরু পারভেজ।
মঙ্গলবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) তাকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান।
তিনি বলেন, ‘রুটিন মোতাবেক খসরু পারভেজকে বেক্সিমকো গ্রুপের রিসিভার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
এর আগে, গত ১০ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক রুহুল আমিন এ দায়িত্বে ছিলেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশে বেক্সিমকোর বিভিন্ন কোম্পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য রিসিভার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
আর্থিক সংকটে বেক্সিমকো
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানিতে অস্থিরতা চলছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা ও বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস-চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
এ অবস্থায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেওয়ায় বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ১৬টি কারখানা লে-অফ ঘোষণা করা হয়েছে। ব্যাংকের ঋণ বন্ধ থাকা, ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ হওয়া এবং এলসি সুবিধা না পাওয়ায় কোম্পানিটি পুরো উৎপাদন সক্ষমতা কাজে লাগাতে পারছে না।
তদন্তে অর্থনৈতিক অনিয়মের তথ্য
বেক্সিমকো শিল্পপার্কের জন্য গঠিত উপদেষ্টা কমিটি জানিয়েছে, পার্কে ৩২টি কারখানার নাম থাকলেও বাস্তবে ১৬টির অস্তিত্ব মেলেনি। অথচ এসব কারখানার নামে ১২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ৩২টি কোম্পানির নামে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে মোট ২৯ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে।
উৎপাদন ব্যাহত থাকায় গত ছয় মাসে বড় ধরনের লোকসানে পড়েছে বেক্সিমকো লিমিটেড। ২০২৪ সালের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে কোম্পানিটি মোট ৩৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা লোকসান গুনেছে।
বেক্সিমকোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত আগস্ট থেকে কোনো ব্যাংক তাদের এলসি খোলার অনুমতি দেয়নি। এতে কাঁচামাল সংকট দেখা দেয় এবং উৎপাদন ব্যাহত হয়। ফলে মজুত থাকা ইয়ার্ন ও ফেব্রিকস কেনা দামের চেয়ে কম মূল্যে বিক্রি করতে হয়েছে।
সরকার গঠিত তদন্ত কমিটির তথ্য অনুযায়ী, বেক্সিমকোর মোট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা, যা এখন খেলাপি হতে শুরু করেছে।