বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রদলের ১৬ দফা দাবি

3 hours ago 5

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ১৬ দফা দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তিন দফা দাবি প্রশাসনের কাছে পরিপত্র আকারে উত্থাপন করেন শেকৃবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।

দাবিসমূহ হলো:

১। এক কার্যদিবসের মাঝে গোলাম সারোয়ার ও ইলিয়াসুর রহমানের বাসা বাতিল করে তাকে চাকরিচ্যুত করতে হবে এবং সামনের দিনে কেউ অফলাইন বা অনলাইনে জুলাই বিপ্লবকে অস্বীকার করে ফ্যাসিস্ট হাসিনার তোষামোদ করলে তাকেও অনতিবিলম্বে তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

২। যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান তারা কেউ তদন্ত চলাকালীন ক্লাস, পরীক্ষা ও অন্যান্য কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।

৩। জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা শিক্ষার্থীদের ভীতিপ্রদর্শনকারী (বিশেষত বাইক শো-ডাউনকারী ও হুমকি প্রদানকারী) প্রত্যেককে বহিষ্কার করতে হবে এবং জুলাই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে বিরোধিতাকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রত্যেককে তিন কার্যদিবসের মাঝে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে হবে।

এদিকে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ১৩ দফা দাবি পেশ করে করেছেন শেকৃবি ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। শেকৃবি ছাত্রদলের সভাপতি আহমেদুল কবির তাপস ও সাধারণ সম্পাদক বিএম আলমগীর কবিরের সই করা এক লিখিত নোটিশে এসব দাবি জানানো হয় ।

এতে উল্লেখ করা হয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল কর্তৃক উত্থাপিত দাবি সমূহ:

১. ডেপুটি রেজিস্ট্রার ইলিয়াসুর রহমান এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার গোলাম সারোয়ারের বাসা বরাদ্দ বাতিল এবং চাকরি থেকে অব্যাহতি।

২. সর্বশেষ ২টি নিয়োগে শিক্ষক, কর্মকর্তা পদে নিয়োগপ্রাপ্ত নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ক্যাডারদের নিয়োগ বাতিল।

৩. জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে অভিযুক্ত শিক্ষক, কর্মকর্তার ডেপুটেশন বাতিল।

৪. জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে অভিযুক্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের চলমান তদন্ত প্রক্রিয়া আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে প্রকাশ করে, দোষীদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে কঠোরতম শাস্তি নিশ্চিত করা। শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের সকলের বেতন, ভাতা স্থগিত করা।

৫. যে সকল ব্যক্তি, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে অভিযুক্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে তাদেরকে আশ্রয় এবং পুনর্বাসন করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

৬. আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়নে দুর্নীতি এবং দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের অপকর্মের শ্বেতপত্র প্রকাশ ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাস্তি নিশ্চিত করা।

৭. আওয়ামী শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারী দ্বারা নির্যাতিত, নিপীড়িত, লাঞ্চিত এবং একাডেমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের অভিযোগ প্রদানের জন্য সেল গঠন, অভিযোগের তদন্ত এবং অভিযুক্তদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে শাস্তি নিশ্চিত করা।

৮. অতিদ্রুত বৌ বাজারের বরাদ্দ বাতিল করে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ভাড়া আদায় এবং উক্ত অর্থ দিয়ে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা অনুদান প্রদান।

৯. বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র উন্নয়ন ফি বাবদ আদায়কৃত অর্থের যথাযথ হিসাব প্রদান পূর্বক সাধারণ শিক্ষার্থীদের কল্যাণে উক্ত অর্থের যথাযথ ব্যয় নিশ্চিত করা।

১০. বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যানবাহন চলাচল সীমিত করা, ব্যাটারিচালিত রিকশা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থে স্বল্পমূল্যে ইলেকট্রিক পরিবহন সেবা চালু করা।

১১. শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালককে দ্রুত অপসারণ।

১২. পূর্বে আনীত অভিযোগের ভিত্তিতে যে সব শিক্ষক, কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান ছিলো, সেসব অভিযোগের দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি এবং শাস্তি নিশ্চিতকরণ।

১৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী মারিয়া রহমানের আত্মহত্যার প্ররোচনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা এবং তার পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা।

সাইদ আহম্মদ/এসএনআর/এএসএম

Read Entire Article