বর্তমানে এআই কত দূর পৌঁছে গেছে তা নিশ্চয়ই নতুন করে বলতে হবে না। কর্মী জায়গা তো বটেই সঙ্গীর বিকল্প হয়েছে এআই। হোয়াটসঅ্যাপে এখন অবসরে এআইয়ের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন।
এআই টুলগুলো আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগই লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল বা এলএলএম। কিন্তু এই প্ল্যাটফর্মে বেশ কিছু ক্ষেত্রেই প্রাইভেসি নষ্ট হচ্ছে। যা থেকে বাড়ছে সাইবার ক্রাইম।
এখন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চ্যাটবটের সঙ্গে কথা বলাটা অনেকের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। ব্যক্তিগত নানান বিষয়ে আলোচনা করেন এআই চ্যাটে। নিজের অজান্তেই বড় ক্ষতি করে ফেলছেন নিজের। আপনার সেই তথ্যই হাতিয়ে নিয়ে সাইবার ক্রাইম করে সাইবার জালিয়াতরা।
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে, এআই টুলের সঙ্গে কথা বলা ৭০ শতাংশ মানুষই ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করে। ৩৮ শতাংশ মানুষ এমন কিছু তথ্য দিয়ে দেন, যা পরে সাইবার জালিয়াতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এআই টুলের সঙ্গে চ্যাট করার সময়ে ঠিকঠাক কথা বলাটা জরুরি। না হলেই বিপদ আসন্ন।
হয়তো কেউ চ্যাট বটকে বলল, তুমি আমার সম্পর্কে যা জানো, তার ভিত্তিতে বলো, আমার পার্সোনালিটি কেমন? এই রকমের প্রশ্ন করলেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আপনার সম্পর্কে খুঁটিনাটি জানতে বেশ কিছু পাল্টা প্রশ্ন করবে। সেই প্রশ্নগুলোর উত্তরগুলো যেমন জন্মের স্থান, তারিখ কিংবা কী শখ, কী কাজ করেন এগুলো জমিয়ে রাখবে চ্যাটবট। এরপর এই তথ্যগুলো রয়ে যাবে ইন্টারনেটের ওপেন স্পেসের মধ্যে। যা পরে হাতিয়ে নেবে সাইবার জালিয়াতরা।
তাই খুব ভেবে-চিন্তে প্রশ্ন করুন এবং উত্তর দিন। যেমন ১৫ ডিসেম্বর আমার জন্ম। আমি সাইক্লিং করতে খুব ভালোবাসি। বলো তো, আমার সম্পর্কে কী জানো? না এই প্রশ্ন যদি করতেই হয়, তা হলে করা উচিত, ডিসেম্বর মাসে জন্ম নেওয়া একজনের পার্সোনালিটি কেমন হওয়া উচিত? পার্থক্যটা খুব সূক্ষ্ম। কিন্তু তার মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে বিপদ। কখনোই কোনো ডাটা শেয়ার করা উচিত নয় এআই এর কাছে।
কখনোই কোনো রোগের তথ্য শেয়ার করা উচিত নয়। সবাই হামেশাই এই ভুলটা করে। প্রশ্ন করে ফেলে, আমার ফ্যামিলি হিস্ট্রিতে বিশেষ এই রোগটি আছে। আমার কি কোনো সমস্যা হতে পারে। একদম নয়। নিজে সুরক্ষিত কি না জানতে বিশেষ সেই রোগটার উপসর্গ জানাই ভালো।
এমনকি বাবা মায়েরা কখনোই সন্তানের নাম, স্কুলের নাম বা সারাদিনের রুটিন জানাবেন না। এই রকম তথ্যের ভিত্তিতে সাইবার জালিয়াতরা ফোন করে বলতেই পারে আপনার ছেলে বা মেয়ে তাদের কাছে বন্দি আছে। তাদের মুক্তির জন্য আসতেই পারে টাকার দাবি। তাই ছোট্ট কিছু ভুল এড়িয়ে গেলেই বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
সূত্র: দ্য ইকোনোমিক টাইমস/ এই সময়
কেএসকে/জিকেএস