অপহরণের একদিন পর কুষ্টিয়ার ব্যবসায়ী মো. জাহা বক্সকে (৩৮) পাওয়া গেছে। তাকে অপহরণকারীরা বাড়ির সামনে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে যায়।
সোমবার (১৬ জুন) রাত ১২টার দিকে তাকে মোটরসাইকেলে করে দুজন ব্যক্তি চোখ-মুখ বেঁধে বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায় বলে পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা নিশ্চিত করেছেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, তিনি জীবিত ফিরে এসেছেন, এতেই তারা সন্তুষ্ট। কারো বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ নেই।
জাহা বক্স উপজেলার পশ্চিম আব্দালপুর গ্রামের মৃত কুদ্দুস আলীর ছেলে। তিনি বাড়ির পাশেই ‘প্রান্ত স্টোর’ নামে একটি মুদি দোকান চালান।
এর আগে গত রোববার রাত ১টার দিকে নিজের দোকান থেকে নগদ টাকাসহ জাহা বক্সকে অপহরণ করার অভিযোগ ওঠে। অপহরণকারীরা চিঠি লিখে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পাঁচদিনের মধ্যে টাকা না দিলে মেরে মরদেহ গুম করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলী হায়দার স্বপনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। আলী হায়দার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকালে জাহা বক্সের ছেলে প্রান্ত বলেন, রাত ১২টার দিকে আমাদের বাড়ির বারান্দায় কিছু একটা পড়ে যাওয়ার শব্দ শুনতে পাই। বাইরে বেড়িয়ে দেখি অচেতন অবস্থায় বাবা পড়ে আছেন। তার মুখ ও চোখ বাঁধা ছিল। পরে জানতে পারি দুজন ব্যক্তি মোটরসাইকেলে করে বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে গেছে। বাবাকে মারধর করা হয়েছে। মাথায় একটু দাগ আছে। তিনি কথা বলার মতো অবস্থায় নেই।
প্রান্ত আরও বলেন, অপহরণের রাতে যে ব্যক্তি খাবার স্যালাইন নেওয়ার জন্য বাবাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়, তাকে পরিচিত কেউ মনে করেছিলেন বাবা। পরে বাইরে বেড়িয়ে দেখেন অপরিচিত। প্রথমে একজন থাকলেও পরে আরও একজনকে দেখতে পান। দোকান খোলার সঙ্গে সঙ্গে তারা বাবার চোখ ও হাত বেঁধে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। দোকানে ক্যাশ বাক্সের নিচে যে টাকা ছিল তাও নিয়ে গেছে। আমাদের কিছু দরকার নেই। কারোর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। বাবা জীবিত ফিরে এসেছেন এটাই যথেষ্ট।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান বলেন, জাহা বক্সকে উদ্ধার করতে পুলিশ-ডিবিসহ অন্যান্য বাহিনী তৎপর ছিল। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। পুলিশের তত্ত্বাবধানে আছেন। সুস্থ হলে তাকে সার্বিক বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
আটক হওয়া ইউপি চেয়ারম্যানের বিষয়ে ওসি বলেন, তার বিরুদ্ধে অন্যান্য আরও অভিযোগ রয়েছে। তাকেও অন্য একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে।
আল-মামুন সাগর/জেডএইচ/জিকেএস