ব্যাপারটা একদমই প্রাথমিক পর্যায়ে, এখনো চূড়ান্ত কিছুই হয়নি!

3 days ago 8

মাঝে বিসিবি প্রধান ফারুক আহমেদের সাথে ঝগড়া করে হঠাৎই আলোচনায় উঠে আসেন তিনি। এবার আবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নাজমুল আবেদিন ফাহিম। এ মুহূর্তে বাংলাদেশ তথা ঢাকাই ক্লাব ক্রিকেটে তাকে নিয়েই নানা কথা। গুঞ্জন। ঘুরিয়ে না বলে সরাসরি বললে বলতে হবে নাজমুল আবেদিন ফাহিম এখন ঢাকার ক্লাবগুলোর চক্ষুশুল। বিসিবি পরিচালক পদ থেকে তার অপসারনের দাবিতে সোচ্চার ঢাকার ক্লাবগুলো।

ক্লাবগুলোর একটাই কথা, ‘আমরাই (প্রিমিয়ার, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগের ক্লাবগুলো) দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় স্টেইক হোল্ডার। আমরা টাকা খরচ করে লিগ খেলি। আমাদের অর্থ পেয়ে, আমাদেরকে প্লাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করেই বিভিন্ন ক্রিকেটারের প্রতিভা বিকশিত হয়েছে। হয় এবং হচ্ছে। আমরা অনেক কষ্ট করে শত কোটি টাকা খরচ করি।’

‘বোর্ড পরিচালনায় আমাদের সম্পৃক্ততা বেশি থাকবে। বিসিবিতে সবচেয়ে বেশি কাউন্সিলর থাকবে ঢাকার ক্লাবগুলোর। বোর্ড পরিচালকের প্রায় অর্ধেক থাকবে ঢাকার ক্লাব থেকে; কিন্তু আমরা জেনেছি নাজমুল আবেদিন ফাহিমের নেতৃত্বে গড়া ৫ সদস্যর গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটি ঢাকার ক্লাবগুলো বঞ্চিত করে কাউন্সিলর ও বোর্ড পরিচালক কোটা কমিয়ে অর্ধেকের নিচে নামিয়ে আনার প্রস্তাব বা সুপাররিশ করছে। আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং আল্টিমেটাম দিচ্ছি- আগামী শুক্রবারের মধ্যে এ খসড়া গঠনতন্ত্র সংশোধনের আশ্বাস চাই। তা না করা হলে শনিবার বিসিবি প্রধান ফারুক আহমেদের সাথে বসবো। ওই দুই ধাপে পুরো পরিস্থিতির ইতিবাচক উন্নতি ও সমাধান চাই আমরা। তা না হলে প্রিমিয়ার ও প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ খেলবো না।’

যার বিপক্ষে ক্লাব গুলোর রাজ্যের ক্ষোভ, যার গঠনতন্ত্র সংশোধনীর খসড়া প্রস্তাব নিয়ে এত তীর্যক কথা-বার্তা, ধিক্কার, নিন্দা- সেই নাজমুল আবেদিন ফাহিম কি ভাবছেন? তার ব্যাখ্যা কী? ক্লাবগুলো যদি সত্যিই প্রিমিয়ার ও প্রথম বিভাগ লিগ না খেলে তখন কী হবে?

ঘরোয়া ক্রিকেটে এক বড় অচলাবস্থা তৈরি হবে। ক্রিকেটাররা চরমভাবে আর্থিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের ক্রিকেটে। নাজমুল আবেদিন ফাহিম কি ক্লাবগুলোর এ দাবির কথা শুনেছেন?

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার আগে জাগো নিউজের কাছ থেকে ফোন পেয়ে ফাহিম এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রথমে সরাসরি কিছু বলতে রাজি হননি। তখন শুধু বলেন, ‘আমি শুনেছি ক্লাবগুলো খসড়া গঠনতন্ত্র নিয়ে একটা মত বিনিময় করবে। তবে সেখানে কি আলোচনা হয়েছে? তা জানি না।’

আপনি যে গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটির আহ্বায়ক, সে কমিটির খসড়া গঠনতন্ত্রে দেশের ক্রিকেটের প্রধান স্টেইক হোল্ডার ঢাকার ক্লাবগুলোর স্বার্থ সংরক্ষন হয়নি। ঢাকার ক্লাব কোটার কাউন্সিলর ৭৬ থেকে কমিয়ে ৩০-এ নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে এবং বিসিবি পরিচালক সংখ্যা ১২ থেকে কমিয়ে ৪ জনের নামিয়ে আনার সুপারিশ করা হয়েছে।

ক্লাবগুলো এ প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করছে। অবিলম্বের এ খসড়া গঠনতন্ত্র বাতিল করার জোর দাবি জানিয়েছে। তা করা না হলে ক্লাবগুলো আপনার অপসারন এবং প্রিমিয়ার ও প্রথম বিভাগ লিগ বয়কটের হুমকিও দিয়েছে। এ ব্যাপারে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?

জাগোনিউজের কাছ থেকে এমন প্রশ্নের জবাবে ফাহিম বলেন, ‘আসলে এটা খসড়া গঠনতন্ত্র নয়। আমরা গঠনতন্ত্র সংশোধনের প্রথম ধাপে ছিলাম মাত্র। আমি জানি না তারা (ঢাকার ক্লাবগুলো) খসড়া গঠনতন্ত্রের কোন ধাপটা পেয়েছে। আমরা এখনো খসড়া চূড়ান্ত করিনি। তাই বোর্ডেও দেয়া হয়নি। তাই বলতে পারছি না ক্লাবগুলো খসড়া গঠনতন্ত্রের কোন ধাপটা হাতে পেয়ে প্রতিবাদমুখর হয়েছে।’

‘আমার কথা হলো এখনো কোন কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। আমরা খসড়া গঠনতন্ত্র এখনো বোর্ডেও জমা দেয়নি। ক্লাবগুলো কি করে এ খসড়া পেলো? তাও আমি জানি না। সেটা বোর্ডে জমা দেয়া পর বোর্ড সভায় তা অনুমোদন হবে। তারপর সেটা এজিএমে যাবে। এজিএমে অনুমোদিত হলেই কেবল তা বাস্তবায়নের প্রশ্ন। তার আগে একটা প্রস্তাবিত খসড়া গঠনতন্ত্রের প্রাথমিক ধাপ দেখে ও জেনে এত কথাবার্তার দরকার আছে বলে মনে করি না।’

শুধু কাউন্সিলর আর বোর্ড পরিচালক সংখ্যা কমানোর কারনেই এত প্রতিবাদ মেনে নিতে নারাজ ফাহিম। তার ব্যাখ্যা, ‘ওই খসড়া ও সংশোধিত গঠনতন্ত্রে আরও অনেক কিছুই লিখা আছে। কই তা নিয়ে কি কোন কথা হয়েছে?’

ফাহিম তার প্রতিক্রিয়ার শেষ ধাপে বলেন, ‘ভুলে গেলে চলবে না একটি রক্তক্ষয়ী আন্দোলন ও সফল বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তন ঘটেছে। ফ্যাসিবাদের অবসান হয়েছে এবং বোর্ড ব্যবস্থাপনায়ও এসেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া। নতুন প্রেসিডেন্টের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে বোর্ড। খুব স্বাভাবিকভাবে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো সেই ছাত্র-জনতার আন্দোলনের যথাযথ প্রতিফলন ক্রিকেট বোর্ডের গঠন বিন্যাস ও কার্যক্রমে রাখা। আমরাও সেটা মাথায় রেখেই আমরা গঠনতন্ত্র সংশোধনের চেষ্টা করেছি। সেখানে আসলে কারো স্বার্থ সংরক্ষণের চেয়ে ছাত্র জনতার উত্তাল আন্দোলন, সংগ্রাম ও রক্ষক্ষয়ী সফল বিপ্লবের চিত্র এবং বিপ্লব পরবর্তী পরিস্থিতির সাথে মিল রেখে গঠনতন্ত্র তৈরির চেষ্টা করেছি। সেখানে দেশের ক্রিকেটের মঙ্গল ও কল্যাণের দিকেই দৃষ্টি দেয়া হয়েছে এবং আমার কথা হলো যা হয়েছে, সেটা চূড়ান্ত নয়। পরিবর্তন, পরিবর্ধনের সুযোগ, সম্ভাবনা ও সময় আছে।’

এআরবি/আইএইচএস/

Read Entire Article