ব্লকবাস্টার সিনেমার সুপারফ্লপ রিমেক

একটা সময় ছিল যখন দক্ষিণী সিনেমার রিমেক মানেই বলিউডের বক্স অফিসে নিশ্চিত সাফল্য। সালমান খানের ‘ওয়ান্টেড’ থেকে শুরু করে শাহিদ কাপুরের ‘কবীর সিং’ কিংবা অক্ষয় কুমারের ‘রাউডি রাঠোর’—এই ফর্মুলা মেনেই রমরমা ব্যবসা করেছে হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখতে খুব বেশি সময় লাগল না। গত কয়েক বছরে এই চেনা সমীকরণটি পুরোপুরি বদলে গেছে। দক্ষিণের যে সিনেমাগুলো ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছে, বলিউডে সেগুলোর রিমেক এখন মুখ থুবড়ে পড়ছে। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ছবির সূত্র ধরে সিনেপ্রেমীদের মধ্যে নতুন করে আলোচনার ঝড় উঠেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, গত কয়েক বছরে এবং সাম্প্রতিক সময়ে মুক্তি পাওয়া বড় বাজেটের রিমেকগুলো কীভাবে দর্শকদের প্রত্যাখ্যানের শিকার হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এবং ইউটিউবের সহজলভ্যতাই বলিউডের এই রিমেক ফর্মুলার প্রধান শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে দক্ষিণের ছবি হিন্দিতে ডাবিং হয়ে আসতে সময় লাগত, কিন্তু এখন ছবি মুক্তির কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তা হাতের মুঠোয় চলে আসছে। ফলে দর্শক যখন মূল ছবিটি আগেই দেখে ফেলছেন, তখন একই গল্পের হিন্দি রিমেক দেখতে আর প্রেক্ষাগৃহে

ব্লকবাস্টার সিনেমার সুপারফ্লপ রিমেক

একটা সময় ছিল যখন দক্ষিণী সিনেমার রিমেক মানেই বলিউডের বক্স অফিসে নিশ্চিত সাফল্য। সালমান খানের ‘ওয়ান্টেড’ থেকে শুরু করে শাহিদ কাপুরের ‘কবীর সিং’ কিংবা অক্ষয় কুমারের ‘রাউডি রাঠোর’—এই ফর্মুলা মেনেই রমরমা ব্যবসা করেছে হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখতে খুব বেশি সময় লাগল না। গত কয়েক বছরে এই চেনা সমীকরণটি পুরোপুরি বদলে গেছে। দক্ষিণের যে সিনেমাগুলো ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছে, বলিউডে সেগুলোর রিমেক এখন মুখ থুবড়ে পড়ছে।

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ছবির সূত্র ধরে সিনেপ্রেমীদের মধ্যে নতুন করে আলোচনার ঝড় উঠেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, গত কয়েক বছরে এবং সাম্প্রতিক সময়ে মুক্তি পাওয়া বড় বাজেটের রিমেকগুলো কীভাবে দর্শকদের প্রত্যাখ্যানের শিকার হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এবং ইউটিউবের সহজলভ্যতাই বলিউডের এই রিমেক ফর্মুলার প্রধান শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে দক্ষিণের ছবি হিন্দিতে ডাবিং হয়ে আসতে সময় লাগত, কিন্তু এখন ছবি মুক্তির কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তা হাতের মুঠোয় চলে আসছে। ফলে দর্শক যখন মূল ছবিটি আগেই দেখে ফেলছেন, তখন একই গল্পের হিন্দি রিমেক দেখতে আর প্রেক্ষাগৃহে ভিড় করছেন না।

সাম্প্রতিক ভরাডুবির খতিয়ান এই তালিকার সবচেয়ে বড় উদাহরণ সাম্প্রতিক সময়ে মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলো। ২০২৪ সালে বরুণ ধাওয়ান অভিনীত ‘বেবি জন’ মুক্তি পায়, যা দক্ষিণের ব্লকবাস্টার ‘থেরি’-র রিমেক। বিজয়ের মূল ছবিটি আগেই দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছিল, তাই বরুণের সংস্করণটি সেই আবেগকে স্পর্শ করতে পারেনি। 

একইভাবে ২০২৫ সালে মুক্তি পাওয়া শাহিদ কাপুরের ‘দেবা’ এবং ‘লাভয়াপা’র মতো সিনেমাগুলোও বক্স অফিসে প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। মালায়লাম ক্লাসিক ‘মুম্বাই পুলিশ’-এর সাসপেন্স আগেই জেনে যাওয়ায় ‘দেবা’ নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ ছিল তলানিতে। আর ‘লাভ টুডে’-র মতো ইউনিক গল্পের রিমেক ‘লাভয়াপা’ বলিউডি মসলা মেশাতে গিয়ে মূল আমেজটাই হারিয়ে ফেলেছে।

অতীতের বড় ধাক্কা এর আগে হৃতিক রোশন ও সাইফ আলি খানের মতো বড় তারকাদের নিয়ে নির্মিত ‘বিক্রম বেধা’র ব্যর্থতা বলিউডকে বড়সড় ধাক্কা দিয়েছিল। মূল তামিল ছবির আর. মাধবন ও বিজয় সেতুপতির রসায়ন এতটাই শক্তিশালী ছিল, হিন্দি রিমেকটি তার ধারেকাছেও যেতে পারেনি। 

একই পরিণতি হয়েছে কার্তিক আরিয়ানের ‘শেহজাদা’র। আল্লু অর্জুনের ‘আলা বৈকুণ্ঠপুরামুলো’ ইউটিউবে কোটি কোটি মানুষ আগেই দেখে ফেলায়, কার্তিকের ছবিটি দেখার প্রয়োজন মনে করেননি কেউ। 

এছাড়া শাহিদ কাপুরের ‘জার্সি’, অক্ষয় কুমারের ‘কাটপুতলি’ এবং ‘লক্ষ্মী’র ব্যর্থতা প্রমাণ করেছে যে, শুধু বড় তারকা দিয়ে দুর্বল রিমেক আর চালানো সম্ভব নয়।

মৌলিক গল্পের সংকট টানা এই ব্যর্থতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, বলিউড বর্তমানে মৌলিক গল্পের তীব্র সংকটে ভুগছে। দক্ষিণের সফল ছবির ওপর ভর করে বৈতরণী পার হওয়ার দিন যে শেষ, তা এখন দিবালোকের মতো পরিষ্কার। দর্শকদের স্পষ্ট বার্তা—‘কপি-পেস্ট’ নয়, আমরা মৌলিক এবং নতুন গল্প দেখতে চাই। রিমেক সংস্কৃতির এই পতন হয়তো বলিউডকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow