সংযুক্ত আরব আমিরাততে হওয়া এশিয়া কাপ ক্রিকেটের মূল উত্তেজনা আজকের ভারত-পাকিস্তান মহারণ দিয়েই শুরু হবে।। সাধারণত এ ম্যাচকে ঘিরে থাকে উৎসবের আবহ—ভক্তদের উন্মাদনা, গ্যালারিতে রঙিন ব্যানার আর মিডিয়ার তুমুল ব্যস্ততা। কিন্তু এবারের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার ক্ষত এখনো শুকায়নি, সীমান্তে চলছে সংঘর্ষ, দেশজুড়ে শোক আর ক্ষোভ। এর মধ্যেই রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুবাইয়ে মুখোমুখি হচ্ছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। ম্যাচ ঘিরে প্রশ্ন তুলছে সাধারণ মানুষ—এখন কি সত্যিই ক্রিকেট হওয়া উচিত?
শূন্যতায় ভরা প্রস্তুতি
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই টিকিটের জন্য হাহাকার। অথচ এবারও অনলাইনে অনেক আসন ফাঁকা পড়ে আছে। ভারতের শুক্রবারের প্র্যাকটিসেও দেখা গেল সাদামাটা চিত্র—আধখালি গ্যালারি, সীমিত ভক্ত। সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে প্রবল বয়কটের ডাক, ট্রেন্ড করছে #BoycottIndvsPak।
শোকের আবহে দ্বৈরথ
অপারেশন সিঁদূরের পর পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের বিতর্কিত মন্তব্য ভারতীয়দের ক্ষোভ আরও বাড়িয়েছে। অথচ সেই খেলোয়াড়রাই এখন পাকিস্তান দলের অংশ। ফলে সাধারণ ভক্তদের কাছে এ ম্যাচ উৎসব নয়, বরং এক ধরনের আঘাতের মতো মনে হচ্ছে।
লাভ না দেশপ্রেম?
প্রশ্ন উঠছে—তাহলে কেন হচ্ছে ম্যাচ? উত্তর একটাই: টাকা। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই টেলিভিশনে কোটি কোটি দর্শক, স্পনসরদের ভিড়, সম্প্রচারকদের কাছে সোনার খনি। কেবল ২০২৫ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই এই ম্যাচ ২৬ বিলিয়ন মিনিট ভিউয়ারশিপ এনেছিল। এমন লাভের সুযোগ আইসিসি কিংবা এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল কেউই হাতছাড়া করতে চায় না।
নীতির ফাঁদে বাঁধা ভারত
সরকার স্পষ্ট জানিয়েছে—দ্বিপাক্ষিক সিরিজ হবে না, পাকিস্তানে দল যাবে না। তবে বহুজাতিক টুর্নামেন্টে খেলতেই হবে। না হলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভারতের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। তাই বাধ্য হয়েই ম্যাচে নামছে ভারত।
অমীমাংসিত প্রশ্ন
রোববার যখন দুবাইতে প্রথম বল করা হবে, কোটি মানুষ টিভির সামনে বসবে। কিন্তু ভারতের ভেতরে উচ্ছ্বাস থাকবে না আগের মতো। প্রতিটি রান, প্রতিটি উইকেটের আড়ালে রয়ে যাবে সেই অমীমাংসিত প্রশ্ন—দেশপ্রেমের চেয়ে কি লাভ বড়?
* ইন্ডিয়া টুডে থেকে অনূদিত